Best Business Idea After Doing Engineering in Bengali – ইঞ্জিনিয়ারিং করার পরে কি কি ব্যবসা করে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারেন। জেনে নিন এই সমস্ত ব্যবসা সম্পর্কে সবকিছু।
পড়াশোনা করার পর একটাই উদ্দেশ্য থাকে ভালো একটা চাকরি পেলে ক্যারিয়ারটাই ভালোভাবে গুছিয়ে ওঠা যায়। স্কুলের পড়াশোনা কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার পর ক্যারিয়ার সম্পর্কে যেকোনো বিষয়ের উপরে টার্গেট নিয়ে কলেজে ভর্তি হতে হয় বেশীরভাগ ছাত্র-ছাত্রীদের।
যেমন ধরুন ইঞ্জিনিয়ারিং এমবিবিএস ল ইত্যাদি কিন্তু কলেজের পড়াশোনা সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর একটাই কথা মাথায় আসে যে বড় কোম্পানিতে চাকরি করার পরিবর্তে নিজের পড়াশুনার উপর ভিত্তি করে কোন ব্যবসা যদি করা যায় তাহলে বেশ ভালই হয়।
আপনিও যদি এমন কোনো ছাত্র অথবা ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে পড়াশোনা শেষ করার পর ব্যবসা নিয়ে যদি চিন্তা করে থাকেন আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে আশা করা যায়। আজকে জানা যাক ইঞ্জিনিয়ারিং এরপর আপনি কি কি ব্যবসা করতে পারবেন যা দিয়ে নিজের ক্যারিয়ার টাকে গুছিয়ে তুলতে পারেন।
চলুন তাহলে জানা যাক ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বিভিন্ন রকমের ব্যবসার আইডিয়া:
ইঞ্জিনিয়ারিং করার পর আপনার আশেপাশেই এমন কিছু ব্যবসা আপনি করতে পারেন যা থেকে প্রতিমাসে কয়েক লাখ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
১) হোম প্ল্যান ডিজাইনার:
এখন মানুষ নিজেদের বাসস্থান তৈরি করার জন্য সুন্দর একটা হোম প্ল্যান নিয়ে থাকেন ইঞ্জিনিয়ারদের থেকে। আর আপনি যদি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে থাকেন এই কাজটি অনায়াসেই করতে পারবেন। আর এই ব্যবসাটি ভীষণ প্রফিটেবল একটি ব্যবসা।
এই কাজে আপনাকে শুধুমাত্র কারো ঘরের প্ল্যানিং অথবা ঘরের নকশা তৈরি করতে হবে, তাদের প্রয়োজন এবং চাহিদা অনুসারে। সেই মানুষটি কেমন ধরনের ঘর চাইছেন, কেমন বেডরুম হবে, যেমন রান্নাঘর এবং কেমন বসার ঘর সবকিছু মিলিয়ে তাদের প্রয়োজন অনুসারে আপনাকে সেই নকশা তৈরি করে দিতে হবে।
এর পরিবর্তে আপনি একটা ভালোমতো টাকা পেয়ে যাবেন সেই ব্যক্তির কাছ থেকে। এই কাজের জন্য আপনাকে একবার মাত্র ইনভেস্ট করতে হতে পারে। আর এর মার্কেটে চাহিদা প্রচুর পরিমাণে। এর জন্য আপনার কেবলমাত্র একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার হলেই হবে।
যার মাধ্যমে ঘরের সমস্ত রকমের নকশা সিঁড়ির ডিজাইন, ঘরের সামনের ডিজাইন, সবকিছুই আপনাকে নিজে থেকেই সেট করতে হবে। যা কিনা কোনো গ্রাহকের ভীষণভাবে পছন্দ হয়। এখন তো ঘর তৈরি করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের থেকে প্ল্যানিং না করে কেউ ঘরে ইট পর্যন্ত গাঁথেন না আর সেই কারণে ঘরের নকশা তৈরি করতে আপনার কাছে অবশ্যই আসবে।
আর এই কাজের জন্য প্রতি স্কয়ার ফিটে আপনি চার টাকা করে নিতে পারেন। এর ফলে আপনার প্রচুর পরিমাণে উপার্জন আসবে কেননা বেশিরভাগ ঘর হাজারের উপরে স্কয়ার ফিটের হয়ে থাকে।
উদাহরণস্বরূপ ৩০০০ স্কয়ার ফিটের একটি ঘরের নকশা তৈরি করে দিতে গেলে সেক্ষেত্রে কিন্তু ১২০০০ টাকা একটি নকশা তৈরি করে আপনি পেয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া দিনবদলের সাথে সাথে এর চাহিদা বাড়ার জন্য টাকার পরিমাণটা বাড়তে থাকবে। প্রতিমাসে আপনি এমন নকশা তৈরি করার কাজ অনেক পাবেন।
২) ব্যাটারি বানানোর ব্যবসা:
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনার মধ্যে অনেক রকমের জিনিসপত্র বানানো শেখানো হয়ে থাকে, যদি আপনি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করে থাকেন তাহলে আপনি নিজস্ব একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
এই কাজটি এমন কিছু কঠিন কাজ নয়, ইলেকট্রিক্যাল ফিল্ডে আপনি যদি ইঞ্জিনিয়ারিং করে থাকেন তাহলে তো কাজটা খুব সহজেই করতে পারবেন। এই কাজের জন্য আপনি দু রকম ভাবে ইউনিট শুরু করতে পারেন যেমন ধরুন প্রথমত semi-automatic, আর দ্বিতীয়তঃ সম্পূর্ণরূপে অটোমেটিক।
তাছাড়া এরকম ব্যবসাতে প্রথমত আপনাকে প্রদুষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড থেকে অনুমতি নিতে হবে। তারপরে কিন্তু আইনত ভাবে আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। আপনি যে ব্যাটারি তৈরি করবেন সে ব্যাটারিটি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র এ ব্যবহার হয়ে থাকে।
আর এইজন্য আপনি যদি এই কাজ করে একটি ব্যবসা তৈরি করে নেন, এর চাহিদা বাজারে প্রচুর। আর এর থেকে আপনি ভালোমতো একটা ইনকাম করতে পারবেন। এই ব্যবসা থেকে প্রতিমাসে কম করে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা অনায়াসেই ইনকাম করা যায়।
৩) এলইডি লাইট তৈরি করার ব্যবসা:
এখন প্রতিটি ঘরে এলইডি লাইট জালানো হয়ে থাকে। এটি সাশ্রয়ী এবং বেশ উপলব্ধ, সবার পছন্দের। এখন আর লাল রঙের বাল্ব ব্যবহার প্রায় উঠে গেছে বললেই চলে। সব ঘরেতে এলইডি লাইট এবং বিভিন্ন কাজে এবং যানবাহনে এলইডি লাইট ব্যবহার করা হয়।
আধুনিকতার ছোঁয়া পরে এসবের মধ্যে দিয়ে। আর আপনি যদি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করে থাকেন তাহলে এলইডি লাইট বানানোর যে ব্যবসা আপনি শুরু করতে চাইছেন সেটি কিন্তু ব্যাপক হারে জনপ্রিয়তা লাভ করবে।
কেননা বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের ঘরে, দোকানে, এবং অফিসে এই লাইটের ব্যবহার করে থাকেন। এর কারণ হল এই লাইট অন্যান্য বাল্ব, সিএফএল, এবং টিউবলাইট এর তুলনায় বিদ্যুৎ খুবই কম মাত্রায় খরচ করে। এলইডি লাইট হাজার রকম রঙে আপনি পেতে পারেন, এই ব্যবসাটিকে আপনি মাঝারি রকমের পুঁজি নিয়ে শুরু করতে পারেন।
এর চাহিদা মার্কেটে প্রচুর পরিমাণে হওয়ার কারণে এই ব্যবসাটি আপনাকে প্রচুর পরিমাণে ইনকাম করে দেবে। আর সেই কারণে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর এই ব্যবসাটি আপনার বেশ পছন্দ হবে আশা করা যায়। এই ব্যবসা থেকে প্রতিমাসে কম করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
৪) কম্পিউটার রিপেয়ারিং সেন্টার:
আধুনিক এই যুগে কম্পিউটার ব্যাপকহরে ব্যবহার হচ্ছে এমনকি ঘরে বাইরে ল্যাপটপ, কম্পিউটারের ব্যবহার অধিকমাত্রায় বেড়ে গিয়েছে। তাছাড়া এখন সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করার জন্য প্রতিনিয়ত ল্যাপটপে কাজ করতে হচ্ছে। বেশিরভাগ মানুষকে অফিসে অথবা বাড়ি সবক্ষেত্রেই কিন্তু ল্যাপটপ কাজে লাগে।
তাছাড়া এখন অনলাইনে গেম খেলা থেকে শুরু করে অনলাইনে বিভিন্ন রকমের কাজ করার জন্য প্রচুর পরিমাণে প্রেসার পরে ল্যাপটপে অথবা কম্পিউটারের উপরে। ইলেকট্রিক জিনিস খারাপ তো হবেই। আর এই খারাপ হওয়া টা সাধারণ মানুষ ঠিক করতে পারে না। তার জন্য ছুটতে হয় ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে অর্থাৎ যারা এই ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার সারাই করে থাকেন।
আপনি বড় থেকে বড় কোম্পানিতে কাজ করুন অথবা ছোট থেকে ছোট, অবশ্যই প্রয়োজনীয় জিনিস আর এই কম্পিউটার এবং খারাপ হয়ে যাওয়ার জন্য সবাইকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের আসতে হয়, তাহলে একবার ভেবে দেখুন যে বর্তমানে এমন কাজের চাহিদা কতটা! আপনার আশেপাশে এমন সেন্টার খুলে ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ রিপেয়ারিং সেন্টার থেকে আপনি প্রতি মাসে কয়েক লাখ টাকা ইনকাম করতে পারেন।
এজন্য আপনার কাছে কম্পিউটার রিপেয়ার করার জন্য সব রকমের টুলস অবশ্যই থাকতে হবে। আর এ গুলি কেনার জন্য প্রথমে কিছু টাকা ইনভেস্ট করে করতে হবে আপনাকে। আর এরপরে আপনার শুধুমাত্র উপার্জন, আর কোন খরচ নেই।
৫) ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এর কাজ:
এখন তো প্রায় মানুষের ওয়েবসাইট তৈরি করার কাজ করতে দেখা যায়, যার জন্য বেশ ভালো মত একটা উপার্জন করতে পারেন তারা। এমন কাজ কিন্তু আপনি যদি ইনফরমেশন টেকনোলজি ফিল্ডে ইঞ্জিনিয়ারিং করে থাকেন যাকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারও বলা হয়ে থাকে, তাদের জন্য এই ব্যবসাটি একটি ভীষন লাভ দায়ক ব্যবসা।
কি অবাক হচ্ছেন! একেবারেই অবাক হওয়ার কোনো কারণ নেই, ঠিকই শুনছেন। এই যুগে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকেই চায় যে তাদের ব্যবসাটি অনলাইন হোক আর অনলাইন ব্যবসা গুলি কে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিজস্ব একটি ওয়েবসাইটের প্রয়োজন হয়।
আবার অনেকেই ব্যবসা শুরু থেকেই অনলাইনে নিয়ে আসার জন্য ওয়েবসাইট বানিয়ে নেন কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ নিজে থেকে ওয়েবসাইট শুরু করতে পারে না। কেননা তাদের ওয়েবসাইট ডিজাইনিং করার অভিজ্ঞতা নেই। কোন ওয়েবসাইট ডিজাইনার এর কাছে গিয়ে এই কাজটি তাদের করাতে হয়।
ভালো একটা টাকা তাদেরকে দেওয়া হয়। আপনিও এমন ওয়েবসাইট বানানোর কাজ করতে পারেন। যার ফলে এ থেকে ভালো মত একটা উপার্জন করতে পারবেন প্রতিমাসে কয়েক হাজার থেকে কয়েক লক্ষেও যেতে পারে।
এই ছিল আজকের কতগুলি ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য ব্যবসার আইডিয়া। যদি আপনি একজন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে থাকেন, আর যদি চেয়ে থাকেন যে চাকরি না করে নিজের একটি ভালো ব্যবসা শুরু করবেন তাহলে এই সমস্ত ব্যবসার মধ্যে আপনার পছন্দমত কোন ব্যবসা নির্বাচন করে অনায়াসেই তা শুরু করতে পারেন।
এই ব্যবসা গুলি থেকে প্রচুর পরিমাণে উপার্জন করা যায় বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে। তাছাড়া ভবিষ্যতে এর চাহিদা এতটাই যে তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।