মেডিকেল স্টোর ব্যবসা 2024 (Medical Store Business Idea 2024): জানুন মেডিকেল স্টোর ব্যবসা শুরু করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি এবং লাভ ও ইনভেস্টমেন্ট। How to Start Medical Shop in India? | Medical Shop Business Idea in Bengali | Medical Store Business Plan in Bengali.
আপনি যদি মেডিকেল নিয়ে পড়াশোনা করে থাকেন অথবা ওষুধ সম্পর্কে ভালোমতো ধারণা ও জ্ঞান থেকে থাকে, তাহলে মেডিকেল স্টোর করে মেডিসিন অথবা ওষুধের ব্যবসা করতে পারবেন।
যে ব্যবসাটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং অনেক বেশি চাহিদা সম্পন্ন। আধুনিক জীবনে আধুনিকতার সাথে সাথে মানুষ যেভাবে নিজেকে নিয়োজিত করতে শুরু করেছে, তার ফলে বিভিন্ন রকমের নিত্য নতুন রোগ প্রতিদিনই জন্ম নিচ্ছে বলা যেতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে অসুস্থতাকে দূরে রাখতে ওষুধের প্রয়োজন পড়ে। আর এইসব ওষুধ মেডিকেল স্টোর থেকে পাওয়া যায়, আপনি যতই ডাক্তার দেখিয়ে থাকেন না কেন, আপনাকে সেই ওষুধ কিনতে গেলে মেডিকেল স্টোরেই যেতে হবে। আপনি যদি এমন কোন ব্যবসার কথা চিন্তা করে থাকেন, তাহলে কিছু ইনভেস্ট এর মাধ্যমে মেডিকেল স্টোর এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন, যা থেকে আপনি খুব ভালোমতো উপার্জন করতে পারবেন।
এই মেডিকেল স্টোর এর ব্যবসা সম্পর্কে চলুন কিছু তথ্য জানা যাক:-
মেডিকেল শপ অথবা মেডিকেল স্টোর কি:
যে দোকানে অথবা যে জায়গাতে অসুখ বিসুখ সারানোর জন্য যে সমস্ত ওষুধ গুলিকে স্টোর অথবা সংরক্ষিত করে রাখা হয় এবং সেখান থেকে বিক্রি করা হয়।
এমন দোকান থেকে রোগীরা ওষুধ কিনে থাকেন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী, আবার ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াও এমন জায়গা থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারেন সাধারণ মানুষ, তেমন দোকান কে বলা হয় মেডিকেল শপ অথবা মেডিকেল স্টোর। এইরকম স্টোর থেকে সমস্ত রকমের ওষুধ বিক্রি করা হয়ে থাকে। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন এই ব্যবসার লাইসেন্স।
মেডিকেল শপ স্টোর কিভাবে খুলবেন:
যদি আপনি মেডিকেল শপ খুলতে চান, তো সে ক্ষেত্রে আপনার কাছে দুটো আলাদা আলাদা রাস্তা রয়েছে, প্রথমে আপনি বড় আকারে মেডিকেল শপ ওপেন করতে পারেন, অথবা খুলতে পারেন যা থেকে আপনি কোন ফার্মাসিস্ট ডিগ্রী হোল্ডার কে নিজের দোকানে বেতন দেওয়ার মাধ্যমে রাখতে পারেন এবং খুব সহজভাবেই এই মেডিকেল স্টোর আপনি চালাতে পারেন। দ্বিতীয়ত আপনি নিজেই ফার্মাসিস্ট কোর্স করে খুব ছোট আকারে মেডিকেল শপ করতে পারেন।
ফার্মেসি কোর্স এবং তার রেজিস্ট্রেশন:
যদি আপনি খুব ছোট আকারে মেডিকেল শপ খুলতে চান তাহলে আপনাকে কিছু ফার্মাসিস্ট এর কোর্স করতে হবে। তারপর আপনি এর জন্য লাইসেন্স পেতে পারেন, ফার্মাসিস্ট কোর্স এর বিবরণ নিচে দেওয়া রইল:-
ডি ফার্মা: এই কোর্স করার জন্য কম করে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পিসিএম সাবজেক্ট থাকতে হবে আর এবং পরে ডি ফার্মা কোর্সের জন্য দু’বছর কমপ্লিট করতে হবে এই ২ বছরের কোর্স এ আপনার কম করে তিন মাসের জন্য যেকোনো মেডিকেল কলেজ থেকে মেডিকেল এর জন্য ইন্টার সিপ করতে হবে।
এম ফার্মা: এম ফার্মার এই কোর্সের জন্য আপনাকে সবার প্রথমে বি ফার্ম কোর্স কমপ্লিট করতে হবে এবং এই কোর্স করতে গেলেও আপনাকে দুবছর সময় দিতে হবে এবং আপনার এডমিশন এই কোর্সের ক্ষেত্রে তখনই সম্ভব হবে যখন আপনি বি ফার্মা এই কোর্সে কম করে ৫০% নাম্বার পেয়ে পাশ করে থাকবেন।
বি ফার্মা: এই কোর্স করার জন্য সবার প্রথমে এই কোর্সের ছাত্র ছাত্রীকে কম্পিটিশন এক্সাম তে নিজেকে উপযুক্ত প্রমাণ করতে হবে। তারপরে কিন্তু আপনি এই কোর্সের জন্য নির্বাচিত হবেন। যদি কেউ এই কোর্স করতে চান, তো তাকে উচ্চমাধ্যমিকে পিসিএম সাবজেক্ট থাকতে হবে এবং এই কোর্সের মেয়াদ ৩ বছর।
ফার্মা ডি: এই কোর্স করতে গেল সবার প্রথমে উচ্চমাধ্যমিকে পিসিএম সাবজেক্ট থাকার পাশাপাশি এবং তারপরে বি ফার্মা এর দু’বছরের কোর্স ও কমপ্লিট করতে হবে, ফার্মা ডি এর কোর্স করতে গেলে কমপক্ষে চার বছর সময় লাগে অর্থাৎ সম্পূর্ণ কোর্স কমপ্লিট করতে গেলে ৬ বছরের মতো সময় দিতে হতে পারে।
এই ব্যবসার জন্য রেজিস্ট্রেশন:
উপরের যে কোন প্রকারের কোর্স করে নেওয়ার পর আপনি ফার্মাসিস্ট তো হয়ে যাবেন কিন্তু মেডিকেল শপ খোলার জন্য আপনাকে আপনার ফার্মাসিস্ট এর রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেওয়া টা অবশ্যই জরুরি। সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার রাজ্যের ফার্মেসি কাউন্সিল এ গিয়ে নিজে এই ব্যবসার জন্য রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নিতে হবে।
ফার্মেসি লাইসেন্স অথবা ড্রাগ লাইসেন্স:
আপনি যদি চান ছোট আকারে মেডিকেল স্টোর খোলেন অথবা অনেক বড় আকারে খোলেন সে ক্ষেত্রে ড্রাগ লাইসেন্স আপনার প্রয়োজন পড়বে। আপনি আপনার রাজ্যের মেডিসিন বিভাগ থেকে দু’রকমের ড্রাগ লাইসেন্স তৈরি করতে পারবেন।
১) রিটেলার ড্রাগ লাইসেন্স
২) হোলসেল বিক্রেতা ড্রাগ লাইসেন্স
মেডিকেল শপ খোলার জন্য জায়গা নির্বাচন:
মেডিকেল শপ খোলার জন্য আপনাকে এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে, যেখানে হাসপাতাল থাকবে অথবা ছোটখাটো কোনো ক্লিনিক অবশ্যই থাকতে হবে। যদি আপনি এমন জায়গায় আপনার মেডিকেল শপ খোলেন তাহলে খুব ভালোভাবে মেডিকেল শপটি চলবে।
মেডিকেল শপ খোলার জন্য ইনভেস্টমেন্ট:
যে কোন ফার্মাসিস্ট কোর্স করার জন্য এবং দোকানে সম্পূর্ণরূপে ওষুধ তুলে সাজানোর জন্য কম করে আপনার ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ইনভেস্ট করতে হতে পারে। এত টাকার মধ্যে আপনি ছোট স্তরে মেডিকেল শপ খুলতে পারবেন। আর সময়ের সাথে সাথে এই ব্যবসাটিকে বড় আকারে নিয়ে যেতে আপনার কোনো রকম অসুবিধা হবে না।
মেডিকেল শপ এর ব্যবসা থেকে লাভ:
মেডিকেল শপ এমন একটি ব্যবসা যা কোনদিনও শেষ হয়ে যাবে না। বরং দিনবদলের সাথে সাথে দিন যাওয়ার সাথে সাথে এর চাহিদা আরো বেশি বাড়তে থাকবে। সেই অনুযায়ী এই ব্যবসা থেকে আপনি প্রতিমাসে ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন।
এই ব্যবসার ক্ষেত্রে ঝুঁকি (Risk):
যদি আপনি এরকম কোন মেডিকেল শপ খোলেন, যেখানে আপনি আপনার গ্রাহক দের কখনোই খালি হাতে ফেরান না, তাহলে কিন্তু আপনার এই ব্যবসা কখনোই ঝুঁকিপূর্ণ হবে না। যদি এমন হয় যে আপনার দোকানে কোন গ্রাহক এল কিন্তু তার প্রয়োজন অনুযায়ী আপনার কাছে সেরকম ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থাকলো না, সেক্ষেত্রে আপনি সেগুলি অন্য জায়গা থেকে নিয়ে তাকে দিতে পারেন। এক্ষেত্রেও কিন্তু আপনার ব্যবসাতে কোনরকম ঝুঁকি থাকবে না।
তখন দেখবেন আপনার গ্রাহকরা আপনার কাছে সব সময় এর জন্য আসতে পছন্দ করবেন। তার সাথে নিজের এবং মেডিকেল স্টোর এর অন্যান্য কর্মচারীদের ব্যবহারের দিকটা খেয়াল রাখবেন। কারণ মিষ্টি ব্যবহার সকলেই পছন্দ করেন। কারণ তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যোগান আপনার কাছে পেয়ে যাচ্ছে তারা।
এমন ভাবে আপনি কিন্তু মেডিকেল শপ এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এর জন্য সবথেকে প্রয়োজনীয় যেটা সেটা হল, যে জায়গায় আপনি মেডিকেল শপ খুলবেন সেই জায়গাটি যেনো হাসপাতালের আশেপাশে হয় এবং গ্রাহকদের বিশ্বাস জিতে নিতে পারেন আপনি। তারপরেই কিন্তু আপনি কয়েক লাখ টাকা উপার্জন করতে পারবেন এই ব্যবসা থেকে প্রতিমাসে।