Jute Farming Business Idea in Bengali – পাট চাষ ব্যবসায় আছে প্রচুর লাভ ও সরকারি অনুমদন – জানুন কি লাভ পাট চাষ ব্যবসা করে? কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু পাট চাষ ব্যবসা ব্যবসা সম্পর্কে।
ভারতবর্ষ কৃষিপ্রধান দেশ, তবে শুধুমাত্র ধান অথবা গমের উপর নির্ভর করে কৃষকরা তাঁদের চাষাবাদ করেন না। এর পাশাপাশি এমন অনেক শাকসবজি থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক পণ্যও চাষ করে থাকেন। যেগুলি দেশের বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হওয়ার পাশাপাশি বাইরেও রপ্তানি করা হয়। পাট চাষ কৃষকদের মধ্যে বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।
বিভিন্ন জায়গার কৃষকরা তাঁদের প্রধান কৃষিকাজের পাশাপাশি পাট চাষ করে থাকেন। সেখানকার স্থানীয় মানুষজন এই পাট গাছের কচি পাতা সবজি হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। আবার গাছ যখন বড় হয়ে যায় তখন সেই গাছকে কেটে জলে কিছুদিন ভিজিয়ে রেখে পাট উৎপাদন করে থাকেন। বহু কৃষক পাট চাষ করে প্রতি মাসে বেশ ভালো উপার্জন করেন, এমন কি বছরেও একটা মোটা টাকা উপার্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।
পাট চাষ করে হবেন লাভবান
পাট চাষ করার জন্য সরকার থেকে কৃষকদের আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। এর পাশাপাশি ন্যায্য মূল্যে পাট বিক্রি করার অনুমোদনও দিয়ে থাকে।
বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকদের আর্থিক উন্নতির জন্য পাট চাষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর আপনি যদি চাষ আবাদ করতে ভালোবাসেন এবং কোন কিছু চাষ করে সেখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করতে চান তাহলে এই পাট চাষের বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন।
নিজের থাকা কিছু পতিত জমিতে পাট চাষ করে বছরে অথবা মাসে মোটা টাকা উপার্জন করা যায়। বিগত কয়েক বছরে পাটের চাহিদা প্রচুর রয়েছে। ধান, গম, সরষে যখন ক্ষেত থেকে তুলে নেওয়া হয় তখন সেই খেতে মার্চ থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পাট চাষ করা যেতে পারে। এক কথায় একই জমিতে বারবার ফসল ফলিয়ে অনবরত উপার্জন করতে পারবেন।
কোন কোন রাজ্যে পাট চাষ করা হয়ে থাকে?
দেশের মাটি এবং জলবায়ুর উপরে নির্ভর করে বিভিন্ন চাষাবাদ করা হয়, তেমনি পাট চাষ করার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। পূর্ব ভারতের কৃষকরা খুবই বড় আকারে পাট চাষ করে থাকেন, আবার তার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ত্রিপুরা, বিহার, আসাম, উত্তর প্রদেশ এবং মেঘালয় এর মত জায়গাতে পাটের চাষ খুবই চোখে পড়ে।
দেশের মধ্যে বহু জেলাতে পাট চাষ করা হয়। কেন্দ্র সরকার পাট এর দাম এর উপরে ৬% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে কৃষকদের আর্থিক উন্নতি ঘটবে বলে আশা করা যায়। সমগ্র পৃথিবীতে শুধুমাত্র ভারতে ৫০% পাট চাষ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ, চীন এবং থাইল্যান্ডে পাটের উৎপাদন হতে দেখা যায়।
পাট কি, কি কাজে ব্যবহার করা হয়?
পাট গাছকে কোন এক ফসল বলা যেতে পারে, যেটি মাঠে চাষ করার পর গাছ যখন বড় হয়ে যায় তার কান্ড অথবা সম্পূর্ণ গাছটাই পাট হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তার জন্য কিছু কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে পাট উৎপাদন করা হয়।
প্রথমে পাট গাছ কেটে কোন খাল, পুকুর বা কোন জলা জমিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। যখন গাছের বাইরের অংশ পচে যাবে তখন ভেতরের আঁশ/তন্তু বেরিয়ে আসবে আর সেটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন কাজে।
এই পাট থেকে মোটা সুতো তৈরি করা হয়, আর এগুলি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, বস্তা, দড়ি, পরদা, মনোমুগ্ধকর ঘর সাজানোর জিনিসপত্র, কোন পাত্র ইত্যাদি বানানো হয়ে থাকে।
যা দেশের অর্থনীতির উন্নতির পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। আবার সবজি প্যাকিং করার জন্য যে সমস্ত ব্যাগ ব্যবহার করা হয় সেগুলোও কিন্তু এই পাট থেকে তৈরি করা হয়। এছাড়াও এ থেকে কাগজ তৈরি করা হয়, চেয়ার বানানো হয়, আরো অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই দরকার সেগুলি তো রয়েছেই।
বর্তমান দিনে পাটের চাহিদা প্রচুর, আর এখন মানুষ পাট দিয়ে তৈরি করা অথবা প্রাকৃতিকভাবে হাতে তৈরি জিনিসপত্রের খুবই কদর করেন। তাইতো পাট চাষের গুরুত্ব ও চাহিদা রয়েছে প্রচুর।
পাট চাষে বিনিয়োগের টাকা
পাট চাষ করতে গেলে তেমন কোন খরচ নেই বললেই চলে। যেমন ক্ষেতে ফসল চাষ করা হয় তার জন্য যেমন খরচ পড়ে তেমনটাই পড়তে পারে।
আপনার বাড়ির আশেপাশে পড়ে থাকা কোন জমিতে অল্প পরিসরে পাট চাষ করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। একেবারে প্রথম স্তরে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে চাষ করলেই হবে, এরপর কিছুটা পরিশ্রম, পাট কেটে সেটি ভিজিয়ে তার থেকে পাট অথবা তন্তু বের করে সেগুলি ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।
যাঁরা পাটের জিনিসপত্র তৈরি করেন সেখানে বিক্রি করতে পারেন অথবা আপনি নিজেও হাতে তৈরি করে জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারেন, স্থানীয় কোন বাজারে অথবা কোন শপিংমলে, মেলা বা নিজের দোকানে।
পাট চাষ করে কত টাকা লাভ হবে?
সব খরচ বাবদ ক্ষেত থেকে পাট তোলা পর্যন্ত খুব একটা খরচ নেই বললেই চলে। এরপর কমপক্ষে একেবারে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারেন অথবা লাভ থাকতে পারে।
এছাড়া যদি খুবই বড় জমিতে চাষ করে থাকেন তাহলে আরো বেশি উপার্জন করতে পারবেন। বাজারে পাটের চাহিদা যদি মেটাতে থাকেন অনবরত তাহলে আপনার উপার্জনও আসবে অনবরত।
প্রতিটি কৃষিকাজের পেছনে কষ্ট তো থাকেই, আর তার পাশাপাশি সেই ফসল থেকে উপার্জন করে থাকেন কৃষকরা। এখন সরকার থেকে কৃষকদের চাষাবাদে উৎসাহিত করতে আর ফসল ফলাতে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়ে থাকে।
তাছাড়া পাট চাষ খুবই কম খরচে করতে পারবেন, অতিরিক্ত কোন দেখভালের প্রয়োজন নেই বললেই চলে। বর্তমান বাজারে পাট থেকে তৈরি হওয়া জিনিসপত্রের চাহিদা রয়েছে প্রচুর, তাই এই ব্যবসা থেকে লাভবান হবেন খুবই কম সময়ে।