2024 পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসা শুরু করে ইনকামে সফলতা পান – Paper Plate Making Business Idea 2024 (পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসা 2024): How to Start Paper Plate Making Business in India | Paper Plate Making Business Plan 2024 in Bengali.
Paper Plate Making Business Idea in Bengali 2024: বর্তমান সময়ে বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠান, উৎসব, পূজোর প্রসাদ থেকে টিফিন খাওয়া সব ক্ষেত্রে এই পেপার প্লেট প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। ভীষন হালকা এবং পরিবহনে উপযুক্ত, জায়গায় জায়গায় পিকনিক এবং বড় কোন অনুষ্ঠানে সবাইকে খাবার দেওয়ার জন্য এই পেপার প্লেট ব্যবহার করা হয়।
একবার মাত্র ব্যবহার করে এগুলিকে ফেলে দেওয়া হয়, পেপার প্লেট মাটির সাথে খুব সহজে মিশে যায় এবং পুড়িয়ে ফেলা যায়। সেক্ষেত্রে মৃত্তিকা দূষণ করে না বললেই চলে, পরিবেশবান্ধব ও বটে।
বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আপনি অনায়াসেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এ থেকে প্রচুর পরিমাণে আপনি লাভ করতে পারবেন। খুবই কম টাকা ইনভেস্ট করে বিভিন্ন আকারের পেপার প্লেট বানাতে পারেন।
তবে একেকটি আকারের পেপার প্লেট মার্কেটে এক এক রকমের চাহিদা পূরণ করে। আপনার পছন্দ মত যে কোন মাপের পেপার প্লেট তৈরি করে মার্কেটে বিক্রি করতে পারেন। এর চাহিদা সবসময়ের জন্য বজায় থাকে। ভবিষ্যতে এর চাহিদা আরো বাড়বে, সে ধারণাটা নিশ্চয়ই করা যায়। পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে:
পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসাতে বাজারের বিভিন্ন রকমের টার্গেট ও চাহিদা সম্পর্কে জেনে নিন:
মার্কেট সম্পর্কে ভালো মত একটা ধারণা তৈরি করতে হবে আপনার। আপনার তৈরি করা পেপার প্লেট যে সমস্ত বাজারে আপনি বিক্রি করবেন সেগুলো আগে থেকেই নির্বাচন করে রাখুন এবং সেখানে গিয়ে গ্রাহকদের সাথে কথাবার্তা ঠিক করে রাখুন আপনার বানানো পেপার প্লেট এর কোয়ালিটি সবসময়ের জন্য ভালো রাখবেন। এর ফলে গ্রাহকদের পছন্দ হওয়ার পাশাপাশি আপনার বিক্রি প্রচুর পরিমাণে হবে।
তার সাথে সাথে পাইকারি দরে আপনি দোকানে পেপার প্লেট দিতে পারেন। তাছাড়া রেস্টুরেন্ট, খাবারের স্টল, ক্যাটারার, এসব জায়গায় আপনার ব্যবসার মার্কেটিং করতে পারেন। তার ফলে আপনার ব্যবসাটি শুরু করার সাথে সাথে বিক্রি হবে প্রচুর পরিমাণে।
পেপার প্লেট বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র:
ব্যবসা মানেই কিন্তু কম টাকা ইনভেস্ট করে বেশি টাকা লাভ করা হয়ে থাকে, কিন্তু এদিকে খেয়াল রাখতে হবে যে আপনার ব্যবসায় যে সমস্ত জিনিসপত্র গুলি ব্যবহার হচ্ছে সেগুলো যেন উন্নত মানের হয় এবং আপনার তৈরি করা জিনিস গুলো যেন বেশ ভালো কোয়ালিটির হয়ে থাকে। এখানে এই ব্যবসার ক্ষেত্রে যেসব জিনিসপত্রগুলি প্রয়োজন পড়বে সেগুলি হল:-
#১) উন্নত কোয়ালিটির প্রিন্টেড PE পেপার: ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম। (যেমন ধরুন কলাপাতার প্রিন্ট, কোন সুন্দর ফুলের প্রিন্ট, ফলের প্রিন্ট, সিলভার প্লেট এর প্রিন্ট, আরো নানা ধরনের প্রিন্ট)।
#২) বটম রিল: ৪০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম।
#৩) অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রিন্টিং জিনিসপত্র।
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুলো কোথায় থেকে কিনবেন:
#১) এই সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুলো অনলাইনের মাধ্যমেও কিনতে পারেন।
Hydraulic Four Die Paper Plate Making Machine | Click here |
Hydraulic Double Die Paper Plate Making Machine | Click here |
Paper Plate Making Machine | Click here |
Single Die Automatic Paper Plate Making Machine | Click here |
পেপার প্লেট বানানোর জন্য মেশিন এর প্রয়োজনীয়তা:
পেপার প্লেট সাধারণত মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়, আপনি হাতে কোনমতেই এর আকার দিতে পারবেন না। তাই এই প্লেট বানানোর জন্য অটোমেটিক সিস্টেম এর মেশিন ভারতের যেকোনো জায়গাতেই আপনি পেয়ে যাবেন।
যদি আপনি বড় মেশিন নিতে চান সেক্ষেত্রে টাকাটা একটু বেশি পড়তে পারে। যদি ছোট আকারে ব্যবসাটি শুরু করেন তাহলে ছোট মেশিন নিতে পারেন। তারপর ব্যবসার স্তর বাড়ানোর পাশাপাশি বড় মেশিন পরবর্তী সময়ে নিতে পারবেন।
যদি এই মেশিনের দাম সম্পর্কে জানা যায়, তাহলে যেগুলি ম্যানুয়াল অর্থাৎ আপনি হাতে চালাতে পারবেন সেই মেশিনের দাম ৯ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। সিঙ্গেল ডাই অটোমেটিক মেশিনের দাম ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু। আর যদি ডবল ডাই পেপার প্লেট মেকিং মেশিন নিতে চান তাহলে দাম পড়বে ৫৫ হাজার টাকার কাছাকাছি।
পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসা তে মোট খরচ:
এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য যে সমস্ত মেশিন আপনাকে কিনতে হবে, যদি আপনি ম্যানুয়াল অর্থাৎ হাতে চালানো মেশিন দিয়ে যদি ব্যবসাটি শুরু করেন সে ক্ষেত্রে অন্যান্য সামগ্রির সাথে সাথে মেশিনের দাম সমেত কুড়ি হাজার টাকা ইনভেস্ট করতে হবে।
আর যদি সিঙ্গেল ডাই অটোমেটিক মেশিনের সাথে ব্যবসাটি শুরু করেন সেক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আপনার খরচ হতে পারে।
পেপার প্লেট বানানোর প্রক্রিয়া:
সাধারণত তিন রকম ধাপে পেপার প্লেট বানানো হয়:
#১) সবার প্রথমে পেপার প্রয়োজনীয় মাপে কেটে নিতে হবে, তারপর মেশিনটি কে চালু করতে হবে, কেটে নেওয়া গোলাকার পেপার মেশিনের মধ্যে দিতে হবে সে ক্ষেত্রে পেপারের আকার অনুসারে মেশিন হিসাবে পেপার প্লেট এর আশেপাশে পেপার অনেকটা বেঁচে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সঠিক মাপ নিয়ে কাটতে হবে।
#২) পেপারের কোয়ালিটি জি এস এম এর উপর নির্ভর করে আর বেশি জিএসএম এর জন্য বেশি পরিমাণে টাকা খরচ করতে হবে আপনাকে সে ক্ষেত্রে আপনার পেপার প্লেট এর কোয়ালিটি বেড়ে যাবে। এরপর কেটে নেওয়া পেপার ডাই এর নিচে দিতে হবে।
#৩) তারপর সেই পেপার গুলি প্লেটের আকারে তৈরি হয়ে যাবে এবং প্লেটের কানাও তৈরি হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াতে মেশিনের হ্যান্ডেল বার ওই পেপারের উপরে পড়ার কারণে একটা চাপ সৃষ্টি হয়, তার ফলে পেপারটি একটি প্লেটের ডিজাইনে তৈরি হয়ে যায়।
পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসাতে লাইসেন্স:
পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসা কিন্তু একটি বড় ধরনের ব্যবসা, আর তাই এই ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স এবং সরকারি অনুমতি আপনার অবশ্যই প্রয়োজন পরবে। যাতে ব্যবসায়ীদের সুবিধা অসুবিধা সরকার ভালভাবে খেয়াল রাখতে পারে।
যদি ব্যবসাটির ছোট স্তরে শুরু করেন সেক্ষেত্রে লোকাল অথরিটি থেকে এর অনুমতি অবশ্যই নিয়ে রাখবেন যার ফলে ম্যানুফ্যাকচারিং এর সময় কোন রকম অসুবিধায় যেন না পড়তে হয়।
আপনার ব্যবসার ব্রান্ড এর রেজিস্ট্রেশন হওয়ার ফলে ব্যবসাটি বাড়ানোর জন্য লোন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন আর তাই রেজিস্ট্রেশন করানো টা অবশ্যই দরকার।
পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসাতে মারকেটিং:
আগে থেকেই মার্কেটে অনেক রকমের কোম্পানি পেপার প্লেট দিয়ে থাকছে, সেক্ষেত্রে আপনার নতুন একটি ব্যবসার পেপার প্লেট মার্কেটে জায়গা করে নেওয়ার জন্য ভালোমতো মার্কেটিং করতে হবে আপনাকে এবং বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
সে ক্ষেত্রে আপনার বানানো পেপার প্লেট এর কোয়ালিটি সবচেয়ে ভালো রাখতে হবে এবং ভালোভাবে মার্কেটিং করার পর সেগুলো বিক্রি করার মধ্যে দিয়ে আপনার ব্যবসার টিকে আগে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
সে ক্ষেত্রে ব্যবসাটির মার্কেটিং করাটা অবশ্যই জরুরি। তার সাথে সাথে কোন একজন ব্যক্তি মার্কেটে ঘুরে ঘুরে এই পেপার প্লেট এর প্রচার করতে পারেন।
তৈরি হওয়া পেপার প্লেটের প্যাকেজিং:
পেপার প্লেট গুলিকে প্যাকেজিং করার জন্য বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। একটি প্যাকেটে আপনি কতগুলি পেপার প্লেট রাখতে চান সেটার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
যেমন ধরুন ১০০ টি প্লেটের একটি প্যাকেট তৈরি করলেন, সে ক্ষেত্রে সেই প্যাকেটের কতটা দাম পড়বে সেটা নির্ধারণ করতে আপনার সুবিধা হবে।
পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসা থেকে লাভ:
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, যদি আপনি একটি প্লেটের দাম ৮০ পয়সা করে ধরেন, একটি প্যাকেটে একশোটা প্লেট আপনি রাখছেন, সে ক্ষেত্রে ৮০ টাকা প্যাকেট পরছে।
যদি খুচরো হিসেবে এক টাকা হিসাবে প্লেট বিক্রি করা হয় তো দোকানদারের কুড়ি পয়সা প্রতি প্লেটে লাভ থাকবে।
আপনি আপনার তৈরি পেপার প্লেট গুলি খুচরো হিসেবেও বিক্রি করতে পারেন। আর যদি দুই তিন রকমের আকারের প্লেট বানিয়ে থাকেন তো আপনার সুবিধা অনুসারে নাম দিয়ে বিক্রি করতে পারেন।
পেপার প্লেট বানানোর ব্যবসাতে ঝুঁকি:
এই ব্যবসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের সমস্যা আসতে পারে। যেগুলো অনেক সময় অনেক বড় আকার ধারণ করতে পারে। কেননা বর্তমান সময়ে অর্থব্যবস্থা খুব সহজে এবং খুব তাড়াতাড়ি বদল হচ্ছে। আর সে ক্ষেত্রে এই ব্যবসার জন্য টাকা খরচ করা একটু ঝুঁকি পূর্ণ হতে পারে।
যদিও এই ব্যবসাটি লম্বা সময়ের ব্যবসা সে ক্ষেত্রে এই ব্যবসাটি সব সমস্যা থেকে কাটিয়ে উঠতে পারে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এই ব্যবসাতে বিভিন্ন রকমের কেমিক্যাল এবং পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।
যে পাউডার নদী এবং পুকুর এগুলিতে মিশে জল দূষণ এবং পরিবেশ দূষণ করতে পারে। যদি এই ব্যবসাটি আরো বড়ো আকারে করা যায় তাহলে অধিক পরিমাণে পরিবেশ দূষণ হতে পারে। পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড থেকে এই ব্যবসার বিরুদ্ধে বাধা আসতে পারে।
তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় “গাছ বাঁচাও” এরমধ্যে পেপার প্লেট যেহেতু গাছ থেকে তৈরি হচ্ছে সেক্ষেত্রে এই ব্যবসাটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাছাড়া এই ব্যবসাটির চাহিদা মার্কেটে প্রচুর। সবরকম ঝুঁকি কাটিয়ে উঠে ব্যবসাটি করতে পারলে আপনি খুব কম টাকা ইনভেস্ট করে খুব সহজেই ভালোমতো টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
তবে সব রকম কাজে এবং ব্যবসাতে সমস্যা কম বেশি থাকে সে সব বাধা কাটিয়ে উঠলে লাভের মুখ দেখা যায়। আর তাই অধিক চাহিদা সম্পন্ন এই পেপার প্লেট এর ব্যবসা আপনি খুব কম টাকা ইনভেস্ট করে খুব সহজেই শুরু করতে পারবেন।