Napier Grass Farming Business Idea in Bengali – নেপিয়ার ঘাস চাষ ব্যবসা কি? শুরু করবেন কিভাবে? নেপিয়ার ঘাস চাষ ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু নেপিয়ার ঘাস চাষ পদ্ধতি ও ব্যবসা সম্পর্কে।
আমাদের এই পৃথিবী চারিদিকে সবুজ গাছপালা ও ঘাস পাতা দিয়ে পরিপূর্ণ। আর জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করতে প্রাকৃতিক এই পরিবেশকে আরো বেশি কাজে লাগানো হয়ে থাকে। এছাড়া যাঁরা বাড়িতে গৃহপালিত পশু পালন করে থাকেন তাঁদের জন্য এই ঘাস পাতা খুবই প্রয়োজন।
তবে বর্তমানে আলাদা করে ফাঁকা জমিতে ঘাসের চাষ করা হয়ে থাকে। গরু, ছাগল, ভেড়া থেকে শুরু করে গাধা, ঘোড়া যাদের খাওয়ার জন্য ঘাস কিনেও খাওয়ানো হয়।
দুধ প্রদানকারী পশুদের খাওয়ানোর জন্য এই ঘাস বিশেষভাবে উপকারী কেননা এই ঘাসে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। গৃহপালিত পশুদের সুস্বাস্থ্যের জন্য এই ঘাস বিশেষভাবে উপযোগী আর এই ঘাস একবার রোপন করে পাঁচ বছর পর্যন্ত কাটা যেতে পারে প্রতিনিয়ত।
চাষ আবাদের ওপরে ভিত্তি করে যদি কাজের পাশাপাশি কোন ব্যবসা করার চিন্তাভাবনা করে থাকেন তাহলে এই ব্যবসাটি লাভদায়ক একটি ব্যবসা।
খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে প্রতি মাসে বাম্পার উপার্জন করার জন্য এই ঘাস চাষের আইডিয়াটি আপনার পছন্দ হতে পারে। যদি আপনি এই ব্যবসাটিকে বাস্তবায়িত করতে চান তাহলে বর্তমান কাজের পাশাপাশি এই ব্যবসাটি করতে পারবেন খুবই কম সময় দিয়ে। আর প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যেতে পারে।
এখানে নেপিয়ার ঘাস এর চাষের (Napier Grass Farming) কথা বলা হচ্ছে। এই ঘাস পশুদের জন্য খুবই পুষ্টিকর ঘাস আর দুধ প্রদানকারী পশুদের জন্য তো আরো বেশি উপকারী।
এই ঘাস চাষের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একবার রোপন করার পর ৫ বছর পর্যন্ত প্রতিনিয়ত কাটা যেতে পারে, কিছুদিন ছাড়াছাড়ি আর পরবর্তীতে এই ঘাস থেকে CNG এবং কয়লা (Coal) বানানোর প্রক্রিয়ার উপরে কাজ চলছে। এর ফলে কৃষকদের খুবই কম টাকা খরচ করে ভালো উপার্জন করার সুযোগ মিলবে। নেপিয়ার ঘাসকে অনেকে ‘হাতি ঘাস’ বলেও চিনে থাকবেন।
নেপিয়ার ঘাস চাষ কিভাবে করবেন?
এই ঘাসের চাষ করার জন্য যে কোন ঋতু বেছে নিতে পারেন। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা যেকোনো ঋতুতে এই ঘাসের চাষ করতে পারবেন।
এই কারণে যখন কোন একটা নির্দিষ্ট ঋতুতে অন্য কোন সবুজ ঘাস, পাতা উপলব্ধ থাকবে না তখন এই ঘাস বিক্রি করেও আপনি লাভবান হতে পারবেন কেননা যাঁরা ঘোড়া পালন করে থাকেন তাঁদের জন্য অবশ্যই এই ঘাস কিনতে হয়, এছাড়া গৃহপালিত পশু ও দুধ প্রদানকারী পশুদের জন্য কিনে থাকেন অনেকেই, যার ফলে এর চাহিদা বাজারে প্রচুর।
ঘাস চাষ করেও যে প্রচুর টাকা উপার্জন করা যায় তা এই ব্যবসা থেকেই বোঝা যায়। নেপিয়ার স্টিক হিসাবেও ঘাস বিক্রি করা যেতে পারে। এই ঘাসের স্টিক জমিতে দেড় থেকে দুই ফুট দূরে দূরে রোপন করা হয় আবার এক বিঘা জমিতে প্রায় ৪,০০০ স্টিক রোপন করা যেতে পারে।
জুলাই মাস থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে এবং ফেব্রুয়ারি মার্চ মাসে এই ঘাস রোপন করা যেতে পারে, যেখানে বলে রাখা জরুরী যে এই ঘাসের কোন বীজ হয় না।
নেপিয়ার ঘাস ব্যবসা থেকে উপার্জন
কৃষকরা এই ঘাস চাষ করে এবং এর থেকে স্টিক তৈরি করে বিক্রি করে প্রচুর টাকা উপার্জন করতে পারেন। এছাড়া এর চাষ করার জন্য সম্পূর্ণ এক বছরে এই ঘাসের চারার কোন কমতি থাকে না।
নেপিয়ার ঘাস চাষ করার জন্য এমন অনেক রাজ্য তে ছাড় দিয়ে চাষ করানো হচ্ছে। রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম, উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, কেরল ও মধ্যপ্রদেশে এই ঘাসের চাষ করতে দেখা যায়।
নেপিয়ার ঘাস ব্যবসায় বিনিয়োগ ও লাভ
জমিতে এই ঘাস চাষ করার জন্য কমপক্ষে ১০,০০০ টাকা হাতে নিয়েও ব্যবসাতে যোগদান করতে পারেন। এর পাশাপাশি যখন এই ঘাস কেটে বিক্রি করবেন তার পাশাপাশি যখন স্টিক তৈরি করে বিক্রি করবেন অন্য কোন কৃষকের কাছে সে ক্ষেত্রে প্রতি মাসে কয়েক হাজার থেকে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যেতে পারে।
প্রথমদিকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন প্রতিমাসে। এছাড়া একবার এই ঘাস রোপন করার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত আপনাকে আর কিছুই করতে হবে না। শুধুমাত্র ঘাস কেটে নিয়ে বিক্রি করতে পারলেই ব্যবসাটি রমরমিয়ে চলবে, আবার পাঁচ বছর পর গিয়ে নতুন করে ঘাস রোপন করতে পারেন।
কৃষকরা এখন বিভিন্নভাবে নতুন নতুন টেকনোলজি ব্যবহার করে ক্ষেত ফাঁকা না রেখে একটার পর একটা চাষ করে চলেছেন, আর এর মধ্যে দিয়ে লাভবান হচ্ছেন তাঁরা এবং আশেপাশের সকল মানুষজন।
তেমনি পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি এই ঘাসের চাষ করে পশুদের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন আপনি। আর পাঁচ বছর পর্যন্ত কোনরকম পরিশ্রম ও বিনিয়োগ ছাড়াই উপার্জন করতে পারবেন।