Great Indian Spices Business Idea in Bengali – ভারতীয় মসলা তৈরির ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? মসলা তৈরির ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু মসলা তৈরিরব্যবসা সম্পর্কে।
ভারতের বিভিন্ন ধরনের মসলার চাহিদা বরাবরই ছিল, আছে ও থাকবে। তাই জন্য এখানে মসলার দাম আর মসলার ব্যবসা করে প্রচুর টাকা উপার্জন করছেন অনেক ব্যবসায়ী। প্রতিটি রান্নাঘরে খাবার তৈরি করতে বিভিন্ন ধরনের মসলার প্রয়োজন পড়ে। লঙ্কার গুঁড়ো থেকে হলুদের গুঁড়ো এমনকি আরো ছোটখাটো মসলা যা প্রতিনিয়ত রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। মসলা ছাড়া কোন মুখরোচক রান্নার কথা ভাবাই যায় না।
আর এই ব্যবসাটি করে খুবই কম সময়ের মধ্যে লক্ষ টাকা উৎপাদন করা যেতে পারে। কেননা এর চাহিদা বরাবরের জন্য থেকেই যায় আর আপনার উৎপাদিত পণ্য প্রতিনিয়ত বিক্রি হতে থাকবে।
মসলা তৈরি করার ইউনিট বসিয়ে ঘরে থেকেই এই ব্যবসাটি খুবই অল্প স্তরে কম পুঁজি নিয়ে শুরু করা যেতে পারে। তবে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে মসলার স্বাদ ও ফ্লেভার এর দিকে। কোন কোন মসলার চাহিদা সব সময় থাকে সেইসব মসলার দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
মসলা তৈরি ব্যবসায় উপার্জন করুন প্রচুর টাকা:
বর্তমানে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁরা খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে প্রচুর টাকা উপার্জন করার ব্যবসা করছেন। আর তার মধ্যে নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র শামিল রয়েছে। কেননা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে কেউ দূরে সরে থাকতে পারেন না। সেই কারণে এগুলি কিনতেই হয়, আর এইসব জিনিসপত্রের ব্যবসা খুবই লাভদায়ক হয়ে থাকে। এমনই একটি ব্যবসা হল গুঁড়ো মসলার ব্যবসা।
আমাদের প্রতিদিন এর খাবার তৈরি করতে রান্না ঘরে বিভিন্ন রকমের মসলার প্রয়োজন হয়। সেই মসলা গুলি বাজারে কিনতে গেলে দেখা যায় এর চাহিদা কতখানি। এই ব্যবসাতে শুধুমাত্র একবার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে, এরপর আপনি সম্পূর্ণ ব্যবসাটিতে কয়েক লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন। আর লাভের টাকা থেকে আবার কাঁচামাল কিনতে পারবেন। এই ব্যবসাটির বিশেষত্ব হলো এই যে, এর চাহিদা বাজারে প্রচুর স্থানীয় বাজারের সাথে সাথে বিভিন্ন জায়গায় এবং বিভিন্ন জেলায় এগুলি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ভারতের বিভিন্ন জায়গায় লক্ষ লক্ষ টন এই মসলা উৎপাদন হতে দেখা যায়। আর এই মসলা বানানোর খুবই সহজ আর খুবই কম পরিশ্রম ও কম টাকা বিনিয়োগ করে করা যেতে পারে। সুস্বাদু খাবার তৈরি করতে সুন্দর ফ্লেভারের মসলা হওয়াটা জরুরী। আর এই মসলার চাহিদা যদি আপনি বাজারে সব সময় পূরণ করে যান তাহলে এই ব্যবসাটি খুব ভালোভাবে চলতে পারবে।
মশলা সম্পর্কে সাধারণ একটু ধারণা আর অল্প কিছু পুঁজি থাকলেই এই ব্যবসাটি করতপারবেন মসলা তৈরীর ইউনিট লাগিয়ে একেবারে ঘরোয়া ভাবে। বাড়ির রান্না ঘরের মশলার চাহিদা পূর্ণ করার পাশাপাশি বাজারের মশলার চাহিদাও পূর্ণ করতে পারবেন খুবই কম সময়ের মধ্যে।
মসলা তৈরির ব্যবসায় বিনিয়োগের টাকা
- খাদি এবং গ্রাম উদ্যোগ আয়োগ (KVIC) একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে মসলা তৈরি করার ইউনিট বসানোর জন্য। এই রিপোর্ট অনুসারে মসলা বানানোর এই ইউনিট লাগানোর জন্য ৩.৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন হতে পারে।
- যেখানে ৩০০ বর্গফুটের একটি জায়গার জন্য প্রয়োজন ৬০,০০০ টাকা আর ইক্রিপমেন্টের উপরে ৪০,০০০ টাকা খরচ হবে।
- এছাড়াও এই ব্যবসাটি শুরু করার উপরে ২.৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। সব মিলিয়ে ৩.৫০ লাখ টাকা যদি থেকে থাকে তাহলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
বিনিয়োগের জন্য টাকার ব্যবস্থা
যদি আপনার কাছে এত টাকা পুঁজি না থেকে থাকে তাহলে এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য ব্যাংক থেকে লোনও নিতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী রোজগার যোজনা অনুসারে ব্যবসার জন্য লোন দেওয়া হয়ে থাকে, এছাড়াও মুদ্রা লোন স্কিম (Mudra Loan Scheme) এর সাহায্যেও ব্যবসার জন্য লোনের আবেদন করতে পারেন।
উপার্জন শুরু হওয়ার সাথে সাথে প্রতি মাসে অল্প অল্প করে লোনের টাকা পরিশোধ করে দিতে পারবেন, তারপর আপনি যে উপার্জন করবেন ও সম্পূর্ণ লাভ আপনার থাকবে।
এই ব্যবসার জন্য মেশিন কোথায় কিনবেন?
যদি মনে করেন তাহলে হোলসেল মার্কেট থেকেও কিনতে পারেন অথবা কোন স্থানীয় বাজার থেকেও এই মসলা তৈরি করার মেশিন কিনতে পারেন, আবার অনলাইনের মাধ্যমেও অর্ডার করে ঘরে আনিয়ে নিতে পারেন।
https://www.indiamart.com এই ওয়েবসাইটে গিয়েও আপনি অনলাইনে এই মসলা বানানোর মেশিন অর্ডার করতে পারেন।
কিভাবে উপার্জন হবে?
এই ব্যবসা থেকে খুবই সহজেই উপার্জন করা সম্ভব, কেননা মসলা প্রতিটি ঘরের প্রয়োজনীয় এমন উপাদান যা ছাড়া রান্না অসম্পূর্ণ। প্রজেক্ট রিপোর্ট অনুসারে প্রতি বছর ১৯৩ কুইন্টাল মসলা উৎপাদন করা যেতে পারে।
যেখানে ৫,৪০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল হিসাবে যদি বিক্রি করা যায় তাহলে সারা বছরে প্রায় ১০.৪২ লাখ টাকার মসলা বিক্রি করতে পারবেন।
এর মধ্যে সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বছরে ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা লাভ রাখতে পারবেন। আর হিসাব অনুসারে প্রতি মাসে ২১ হাজারের থেকেও বেশি টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
কিভাবে লাভের পরিমাণ বাড়াবেন?
যদি এই ব্যবসা থেকে লাভ বাড়াতে চান তাহলে কোন ভাড়ার দোকানের তুলনায় যদি নিজস্ব দোকান হয়ে থাকে তাহলে লাভের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যাবে।
ঘরে থেকে এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য এবং সম্পূর্ণ প্রজেক্টটিকে বাস্তবায়িত করার জন্য নিজের একটু পরিশ্রম, বুদ্ধিমত্তা আর অল্প টাকা বিনিয়োগ করে বেশি টাকা লাভ করা যেতে পারে।
মার্কেটিং করে বাড়বে ব্যবসাতে আরও লাভ
এই ব্যবসাতে আপনি যে মসলা গুলো তৈরি করবেন সেগুলি সুন্দর করে প্যাকিং করে বিক্রি করতে পারেন তাছাড়া একটি সুন্দর ব্রান্ডের নাম দিয়ে আপনার কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন, আর এই স্থানীয় কোন বাজারে বিক্রি করতে পারেন মুদিখানা দোকানে।
এছাড়া পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করতে পারেন। এক্ষেত্রে দোকানদার আর আপনার ঘরে এই ব্যবসার সাথে একটা সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হবে। এছাড়াও আপনার কোম্পানির ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন, আর তৈরি করা মসলা এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন।
আবার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও এই ব্যবসাটিকে আরো বেশি বড় আকার দিতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনার তৈরি করা এই মসলা গুলির মান ও স্বাদ অতুলনীয় হয়, তাহলে গ্রাহকদের পছন্দ হওয়ার পাশাপাশি বিক্রিও দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়তে থাকবে।