Copywriting Business Idea in Bengali – ঘরে বসে কপিরাইটিং ব্যবসার আইডিয়া – কপিরাইটিং ব্যবসা বর্তমান সময়ের সেরা কাজ যা খুলবে ইনকামের রাস্তা।
বর্তমান সময়ে বেকারত্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। শিক্ষিত হোক বা অশিক্ষিত রোজগারের রাস্তা খুঁজতে গিয়ে একেবারে নাজেহাল অবস্থা তাদের। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক অবস্থা একটু ভালো করার জন্য কিছু না কিছু কাজ তারা করতে চান।
তাহলে আপনি যদি লেখাপড়া জেনে থাকেন এবং আপনার মধ্যে লেখার প্রতিভা থেকে থাকে অথবা আপনি লিখতে খুবই পছন্দ করেন তো আপনি খুব সহজেই কপিরাইটিং এর কাজ শুরু করতে পারেন ঘরে বসে এবং ভালোমতো একটা উপার্জনের পথ কিন্তু আপনি তৈরি করে নিতে পারেন।
আজকাল ফ্রিল্যান্সিং এ অনেক কিছু কাজ ঘরে বসে করতে পারা যায়। এমন কাজ গুলির মধ্যে কপিরাইটিং হলো একটি। বর্তমান সময়ে কপিরাইটিং এর চাহিদা প্রচুর। যদি আপনি কপিরাইটিং এর কাজ শুরু করতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক কাজে আসবে।
কপিরাইটিং আসলে কি:
বলে রাখা ভালো যে আপনি বাংলাতে বিজ্ঞাপন লেখার কাজ ও করতে পারেন। এটা এক প্রকার লেখা সম্পর্কিত আর্ট অথবা কলা বলতে পারেন। এই লেখাগুলি বিজ্ঞাপন, মারকটিং অথবা বিক্রি করার জন্য স্ক্রিপ্ট কে টেস্টের আকারে লেখার কাজ করা হয়ে থাকে। ওয়েবসাইটের জন্য লেখা আর্টিকেল গুলিকেও কপিরাইটিং এর অন্তর্গত ধরা হয়। একজন কপিরাইটার যে কিনা কনটেন্ট লেখেন লেখাটিকে কপি অথবা সেলস কপি বলা হয়।
একজন সেলস কপি এর কপি রাইটার যে কোন প্রোডাক্ট অথবা কোম্পানির সাথে মিলে অন্য কোন কাজের প্রমোশনের জন্য জনপ্রিয়তার জন্য লোকেদের মাঝখানে এইসব তথ্যগুলি পৌঁছে দেওয়ার জন্য টেক্সট স্ক্রিপ্ট বানিয়ে থাকেন। যখন কোন প্রোডাক্টের প্রমোশন একটি টেস্ট স্ক্রিপ্ট এর অন্তর্গত অনলাইনে অথবা অফলাইনে ব্যানার পোস্টার এর মাধ্যমে সকলের সামনে আনা হয় তখন ওই প্রোডাক্টের বিক্রি অনেকটাই বৃদ্ধি পায়।
আর এর ফলে সেই কোম্পানির অনেকটাই লাভ হয়। এক্ষেত্রে সেই প্রোডাক্ট এর বিভিন্ন রকমের তথ্য এবং তার প্রমোশন এর জন্য লেখা টেক্সট বিজ্ঞাপন, কপিরাইটিং এর অন্তর্গত। এমন কাজ করার জন্য বড় বড় কোম্পানিগুলো একজন প্রফেশনাল কপিরাইটারের হায়ার করে থাকে।
আর সেই কপিরাইটার আর্টিকেল, ওয়েব পেজ, এডস, অথবা যে কোন প্রকার প্রমোশনাল মেটেরিয়াল, যার মধ্যে টেক্সট শামিল আছে। সেগুলিকে তৈরি করে থাকেন এবং কোম্পানির প্রমোশনের জন্য সেগুলিকে ফরওয়ার্ড করে দেন।
কপি রাইটার কাকে বলে:
একজন এমন প্রফেশনাল রাইটার, যার মধ্যে টেক্সট বেস আর্টিকেল, ওয়েব পেজ, অথবা প্রফেশনাল মেটেরিয়াল লেখার কাজ করে থাকেন, সেই ব্যক্তি কে এই প্রফেশনাল কপিরাইটার বলা হয়।
কপি রাইটার এবং কপিরাইট এর মধ্যে পার্থক্য কি:
এমনও হয় যে অনেকেই কপি রাইটার কে কপিরাইট ভেবে বসেন কিন্তু এই দুটো কথার মধ্যে আলাদা আলাদা মানে এবং পার্থক্য রয়েছে কপিরাইটার হলো এক প্রফেশনাল ওয়ার্কিং প্রফেশন আর সেখানেই কঁপিরাইট একটা কার্য মাত্র। সব কপিরাইটেড বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে আসেনা।
কপি রাইটার এর মধ্যে যে কাজগুলি আছে:
একটি কপিরইটার অনেক প্রকার কাজ করতে পারেন। এই কাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের কাজ এসে থাকে যেমন ধরুন:-
১) একটি কপিরাইটার টেক্সট বেস মেটিরিয়াল লিখতে পারেন।
২) একজন কপিরাইটার টপিক রিসার্চ করতে পারেন এবং ওই টপিকের উপরে গভীরভাবে চিন্তার মাধ্যমে সেটিকে লিখতে পারেন।
#৩) একটি কপিরাইটার প্রুফ রিডিং এর কাজও করে থাকেন।
৪) একজন প্রফেশনাল কপিরাইটার এডিটিং এর কাজও করে থাকেন।
৫) একজন প্রফেশনাল কপি রাইটার ইন্টারভিউ ও নিতে পারেন।
৬) একজন প্রফেশনাল কপিরাইটার মারকেটিং, ক্যাম্পেইন্স এর প্ল্যান করতে পারার সাথে সাথে সেটিকে এক্সিকিউট ও করতে পারেন।
৭) আর সবার শেষে সমস্ত কাজের ইম্প্যাক্ট এর ইবেলুইট করার কাজও করতে পারেন।
তাছাড়া একজন প্রফেশনাল কপিরাইটারের অন্তর্গত এই কাজগুলি ছাড়াও আরো বিভিন্ন রকমের কাজে আসতে পারে। আর আপনি ভাবুন যে এতগুলি কাজ করার জন্য কোয়ালিটি এবং এলিজিবিলিটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
কপিরাইটার কোয়ালিটি:
একজন কপিরাইটার হওয়ার জন্য আপনার কাছে অনেকগুলি কোয়ালিটি থাকা প্রয়োজন। তার সাথে সাথে আপনার মধ্যে সেই কোয়ালিটি গুলিকে এক্সেকিউট করার এলিজিবিলিটি ও অবশ্যই থাকতে হবে।
চলুন তাহলে অনেকগুলি কপিরাইটারের কোয়ালিটির মধ্যে পাঁচটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোয়ালিটি সম্পর্কে জানা যাক:
১) কাজের ক্ষেত্র এবং কাজ অনুসারে গ্রামারের জ্ঞান:
যদি আপনি একজন কপি রাইটার হতে চান এবং আপনি কোন ওয়েবসাইটের জন্য কনটেন্ট রাইটিং করে থাকেন, তাহলে সবার প্রথমে আপনার মধ্যে এক এমন রাইটিং স্কিল থাকতে হবে, যাতে কোনো পাঠক আপনার দ্বারা লেখা ওই কনটেন্ট যখন পড়বেন তখন সেটিকে খুব সহজে বুঝতে পারেন, তার সাথে সাথে ওই পাঠক কে দ্বিতীয় বার আপনার প্রতি আকর্ষিত করার জন্য আপনার লেখাটাই যথেষ্ট। এর জন্য আপনাকে মাইনর টাইপস অফ মিসটেক, আর তার সাথে আপনার মধ্যে আপনার ভাষার গ্রামার সম্পর্কে সঠিক এবং ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন।
যদি আপনি গ্রামার ঠিকঠাক না দিতে পারেন তাহলে কিন্তু আপনি একজন ভাল কপি রাইটার হতে পারবেন না। আপনি আপনার জন্য প্রুফ রিডিং এর কাজ করার সাথে সাথে অন্য কারো জন্য প্রুফ রিডিং করতে পারেন, আর এর থেকেও কিন্তু আপনি ভালোমতো একটা উপার্জন করতে পারবেন।
২) সার্চ ইঞ্জিন এবং ইউনিক কনসেপ্ট তৈরি করার ক্ষমতা:
যদিও আপনি আপনার প্রফেশনাল এর সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোন প্রকার সামগ্রী তৈরি করে থাকেন তো সবার প্রথমে আমাদের সার্চ ইঞ্জিন এর যোগ্য অপটিমাইজ করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর তার সাথে সবার সামনে যে কনসেপ্ট তুলে ধরতে যাচ্ছি সেটিকে একেবারে ইউনিক পদ্ধতিতে এবং একেবারে আলাদা প্রক্রিয়াতে সেটাকে সবার সামনে আনতে হবে। এই বিষয়টাও কিন্তু খেয়াল রাখা জরুরী, এমন করে আপনি আপনার কনটেন্ট কে একটি খুব ভালো কোয়ালিটি দিতে পারবেন।
তার সাথে সাথে অপটিমাইজেশন ও প্রদান করে দেবেন এবং তার সাথে আপনার কোয়ালিটি অফ স্কিল কে ইমপ্রুভ করতে পারবেন। এইভাবে আপনার ডিমান্ড কিন্তু আপনি বানাতে পারেন। তার সাথে সাথে একটি ভালো উপার্জন তৈরি করতে পারেন।
৩) অনলাইন C.M.S. প্লাটফর্ম এ কাজ করার ক্ষমতা ও যোগ্যতা:
এখন হয়তো আপনি ভাবতে পারেন যে, সিএমএস প্লাটফর্ম আবার কি! এখানে বলে রাখা ভালো যে, এটাকে কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বলা হয়। এরমধ্যে ওয়ার্ডপ্রেস, জুমলা, মিডিয়াম, এবং আরো বিভিন্ন রকমের ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম আছে। আর এটিকে আপনি c.m.s. প্লাটফর্ম বলতেও পারেন।
আপনার এমন অনেক প্লাটফর্ম এর ওপর কাজ করার দক্ষতা এবং যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন এবং তার সাথে সাথে এগুলিকে ব্যবহার করার মত সমস্ত রকমের তথ্য আপনার জানতে হবে। এরপরে কিভাবে আপনি আপনার কনটেন্ট গুলিকে এই প্লাটফর্মে অপটিমাইজ করতে পারবেন এবং তার সাথে সাথে পাবলিশ করতে পারবেন সে সম্বন্ধেও বিশেষ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন আপনার মধ্যে।
৪) ক্লায়েন্ট এর প্রোডাক্ট সম্পর্কিত মেটেরিয়াল তৈরি করার ক্ষমতা:
এই কাজ করার জন্য আমাদের ক্লায়েন্ট আমাদের যে প্রজেক্ট দিয়ে থাকেন, সেটা সেই ক্লায়েন্টের রিডার অথবা পাঠক অথবা ক্লায়েন্ট যে টার্গেট করে রেখেছেন অডিয়েন্সের জন্য, সেটা তৈরি করতে হবে। এমনভাবে আমাদের ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুসারে ভাবতে হবে এবং তার সাথে সাথে তার টার্গেট ও অডিয়েন্স কথা মাথায় রেখে কনটেন্ট লিখতে হবে, তার পাশাপাশি অপটিমাইজ করতে হবে। এই জন্য এক্ষেত্রে আপনার স্ট্রং থাকাটা জরুরী, তাহলে ভালোমতো আপনি কাজ করতে পারবেন এবং ক্লায়েন্ট আপনাকে আরো বেশি প্রজেক্ট দিয়ে কাজ দেবেন। যার ফলে আপনি একটি ভালো উপার্জন করতে পারবেন।
৫) কপিরাইটিং এ অবশ্যই জরুরি কিছু বিষয়:
১) কপিরাইটিং এর ক্ষেত্রে যদি আপনার ক্যারিয়ার বানাতে চান, তো আপনার লেখা সম্বন্ধিত যেকোনো মান্যতা প্রাপ্ত ব্যাচেলার এর ডিগ্রি হতে হবে অবশ্যই।
২) এছাড়াও আপনার কাছে আপনার নিজস্ব পোর্টফোলিও বানিয়ে রাখতে হবে, এই ক্ষেত্রে আপনাকে কোয়ালিফিকেশন এবং ট্রেনিংয়ের থেকে আপনার পোর্টফোলিও আপনার বেশি সাহায্য করবে। এই কাজ পাওয়ার জন্য এই কারণে আপনাকে আপনার নিজস্ব পোর্টফলিও বানাতে হবে, অথবা কারো থেকে বানিয়ে নিতেও পারেন।
৩) আপনার পোর্টফোলিওর ভিতরে আপনার কপিরাইটিং সম্পর্কিত সমস্ত প্রকার কাজ, প্রজেক্ট, অথবা বিজ্ঞাপনের সম্পূর্ণ তথ্য খুব ভালোভাবে সেখানে উল্লেখ থাকতে হবে। কেননা এসব দেখেই কিন্তু যে কোন কোম্পানি আপনাকে হায়ার করবে, আপনার এই পোর্টফোলিও দেখে আপনার ক্রিয়েটিভিটি এবং দক্ষতা ও ক্ষমতা সম্পর্কে তাঁদের একটা সাধারণ ধারণা আসবে, তার ফলে আপনি অনেক ভালো কাজ পাবেন।
কপিরাইটিং এর ক্ষেত্রে চাকরি দেওয়া কোম্পানি গুলি:
এতক্ষণ পর্যন্ত কপিরাইটিং এর বিষয়ে যে তথ্যগুলি দেওয়া হয়েছে, আশা করি আপনাদের বুঝতে কোন অসুবিধা হয়নি। তবে চলুন জানা যাক কপিরাইটিং এর কাজ পেতে গেলে কোন কোন কোম্পানি থেকে কাজ গুলি পাওয়া যায়:
১) Times of India
২) Indian Express
৩) IBM
৪) Firstcry
৫) MakeMyTrip
৬) Tata 1mg
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক কোম্পানি আছে যারা কোম্পানির প্রয়োজনে ক্রিয়েটিভ এবং প্রফেশনাল কপিরাইটারের হায়ার করে থাকেন।
কপিরাইটিং এর ক্ষেত্রে চাকরির জন্য প্ল্যটফর্ম:
যদি আপনি নিজে থেকে নিজের জন্য আপনার পছন্দের এবং আপনার উপযুক্ত কপিরাইটিং এর ক্ষেত্রে চাকরির সন্ধান করে থাকেন তাহলে নিচে কিছু প্ল্যাটফর্ম দেওয়া রইল, যার মাধ্যমে খুব সহজেই চাকরির সন্ধান করতে পারেন কপিরাইটিং এর জন্য।
১) Upwork
২) Freelance
৩) Fiverr
৪) Evento Studio
৫) Simply Hired
এই সমস্ত প্লাটফর্মে আপনি আপনার প্রোফাইল তৈরী করে নিতে পারেন এবং তারপর আপনার যোগ্যতা এবং প্রফেশনাল এর অনুসারে চাকরি খোঁজার জন্য আপনি বিজ্ঞাপন দিতে পারেন, অথবা অনুসন্ধানের ওখানে কমেন্ট করে আর আপনার কন্টাক্ট ডিটেইলস ব্যবহার করে সেই কোম্পানিকে রিকুয়েস্ট পাঠাতে পারেন।
কপিরাইটিং এর লাভ:
কপিরাইটিং এর ব্যবসা অথবা এই চাকরি করেন এমন মানুষের বেতন মাসে কম করে ২০ হাজার থেকে ৫০০০০ টাকা পর্যন্ত কাজের শুরুতে উপার্জন করতে পারেন। তাছাড়া ভবিষ্যতে গিয়ে এই কাজের জন্য মাসে বেতন কয়েক লাখ টাকাও হতে পারে। যদি আপনি ভালো কাজ করেন তার ওপরই নির্ভর করবে আপনার ভবিষ্যতের মাসিক বেতন। অনলাইনে আপনি নিজের ঘরে বসেই এই কাজ করতে পারেন আর সেই জন্যই আপনি ঘরে বসেই প্রতি মাসে ৫০০০০ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
আজকের সময়ে কপিরাইটিং এর কাজের ক্ষেত্রে প্রচুর সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে এবং অনেক প্রফেশনাল এইভাবে ঘরে থেকে অনলাইনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে এই কাজ করে আসছেন অনায়াসেই, এবং ভালোমতো একটা উপার্জন করছেন। আপনি যদি এই ক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার বানাতে চান তো আশা করা যায় যে, আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাকে অনেকটাই সাহায্য করবে।