Muri Making Business Idea in Bengali – মুড়ি তৈরি করার ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? মুড়ি তৈরির ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? কি কি প্রয়োজন হবে? জানুন সবকিছু মুড়ি তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে।
আমাদের দেশের প্রধান খাবার হলো ভাত, আর এই ভাত চাল থেকে তৈরি করা হয়। তাছাড়া চাল থেকে অথবা ধান থেকে তৈরি করা হয় এমন অনেক খাবার রয়েছে যা আমাদের নিত্যদিন প্রয়োজনে পড়ে। চাল থেকে তৈরি হওয়া একটি জনপ্রিয় খাবার হলো মুড়ি (Puffed Rice)। আর এই মুড়ি দিয়েও যে আপনি একটি ছোটখাটো ব্যবসা তৈরি করতে পারেন সেটা হয়তো কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছেন।
প্রায় প্রতিটি বাড়িতে আরো অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি মুড়ি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। ছোট থেকে বড় সকলের কাছে প্রিয় এই মুড়ি খাবারটি। প্রতিদিন প্রয়োজন পড়ার কারণে এর চাহিদা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। আর যদি আপনি এই মুড়ি তৈরির ব্যবসাটি বাড়িতে বসেই শুরু করেন তাহলে খুব কম সময়ের মধ্যে কয়েক লাখ টাকা উপার্জন করতে পারবেন প্রতিমাসে। এছাড়া ছোট স্তরেও শুরু করতে পারেন।
মুড়ি তৈরি করার ব্যবসা:
যদি আপনি দৈনন্দিন জীবনের এই ব্যস্ত কর্মজীবন নিয়ে হাঁপিয়ে ওঠেন তাহলে কিন্তু এই ব্যবসাটি (Puffed Rice Making Business Idea in Bengali) আপনার আর্থিক সংকট মুক্ত করতে পারে। মুড়ি যেহেতু খাদ্য উপাদান তাই প্রতিনিয়ত এর প্রয়োজন থেকেই যায়।
আর এর ব্যবসা করে প্রতিমাসে লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন অনায়াসে। মুড়ি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে অনেকেই চিনে থাকবেন আর এটি একটি জনপ্রিয় খাবার।
মুড়ি বানানোর ব্যবসাতে বিনিয়োগ:
খাদি এবং গ্রাম উদ্যোগ আয়োগ (KVIC) গ্রাম উদ্যোগ রোজগার যোজনা অনুসারে মুড়ি ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট লাগানোর ক্ষেত্রে একটি প্রজেক্ট তৈরি করেছে, যদি আপনি এই প্রজেক্ট অনুসারে ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে প্রায় ৩.৫৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। যদি আপনার কাছে এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য টাকা না থেকে থাকে তাহলে “প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা লোন যোজনা” অনুসারে লোনও নিতে পারবেন।
আপনি এই যোজনা অনুসারে অর্থাৎ এই প্রজেক্ট এর আওতায় লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন। মুড়ির চাহিদা দেশের কোনায় কোনায় রয়েছে তাই গরিব হোক অথবা বড়লোক সবাই কিন্তু এই মুড়ি কিনে থাকেন বাজার থেকে। তাছাড়া রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবারের সাথেও এই মুড়ি ব্যবহার করা হয়। পথ চলতি হালকা খিদেই মসলা মুড়ির তুলনা নেই। তাইতো মুড়ির চাহিদা দিন দিন এত পরিমানে বেড়ে চলেছে।
মুড়ি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র:
মুই তৈরি করার জন্য অবশ্যই মুড়ি তৈরির মেশিন তো লাগছেই, আপনি যদি মনে করেন বাড়ি যাঁরা মহিলারা রয়েছেন মুড়ি ভাজতে পারেন বালি দিয়ে, তাহলে সেটা কোন বড় উনুনে বড় কড়াইতে বালি দিয়েও ভাজতে পারেন।
তার সাথে প্রধান যে উপাদানটি লাগবে সেটা হল চাল। এই চাল আপনি আপনার আশেপাশের কোন বাজার থেকে খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। তাছাড়া কম দামে কিনতে গেলে ধানের গোলা থেকেও কেনা যেতে পারে অথবা ধান কিনে এনে বাড়িতে একটু কষ্ট করে চাল তৈরি করেও নিতে পারেন, এতে কিন্তু লাভের পরিমাণটা বেশি থাকে। ধানের মান যত ভাল হবে চালও কিন্তু তত ভালো হবে আর চাল ভালো হলে মুড়ি তো অবশ্যই ভালো হবে।
মুড়ি তৈরি করার ব্যবসা শুরু করতে লাইসেন্স :
মুড়ি যেহেতু একটি খাদ্য উপাদান তাই লাইসেন্সের প্রয়োজন অবশ্যই পড়বে, কেননা এটি শিশু থেকে বয়স্ক সকলেরই খাবার বস্তু। ভারতীয় খাদ্য সুরক্ষা এবং মানক প্রাধিকরণ অর্থাৎ FSSAI থেকে ফুড লাইসেন্স নিতে হবে। এছাড়াও আপনার এই ব্যবসার জন্য একটি সুন্দর নাম দিতে হবে।
এই নাম অনুসারে ব্যবসার রেজিস্ট্রেশন এবং জিএসটি (GST) রেজিস্ট্রেশনও করতে হবে। আপনার এই মুড়ি তৈরির কোম্পানির ব্র্যান্ডের নাম এর লোগো তৈরি করে প্যাকেট করে সেই প্যাকেটের উপরে লোগো ছাপিয়ে বিক্রি করলে তার চাহিদা এবং বিক্রি দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়তে থাকবে।
মুড়ি তৈরির ব্যবসা থেকে উপার্জন ও লাভ:
মুড়ি তৈরি করার এই ব্যবসায় রয়েছে প্রচুর লাভ। যদি খরচ ধরা হয় তাহলে ১০ থেকে ২০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম মুড়ি তৈরিতে খরচ পড়ে। আর এই মুড়ি প্যাকেটজাত করে বিক্রি করে প্রতি কিলোতে ৪০ থেকে ৪৫ এমনকি ৭০-৮০ টাকা পর্যন্তও বিক্রি করা যেতে পারে।
যদি হোলসেল অথবা পাইকারি বিক্রি করে থাকেন তাহলে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কিলো বিক্রি করতে পারবেন আর যদি রিটেল বা খুচরা বিক্রি করে থাকেন তাহলে ৭০-৮০ টাকা পর্যন্ত দাম রাখতে পারেন প্রতি কিলো মুড়িতে। সব মিলিয়ে এই ব্যবসা ঘরে বসে খুবই অল্প জায়গায় শুরু করতে পারেন এবং প্রতি মাসে লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারেন।
মুড়ির এই ব্যবসাটি খুব কম সময়ের মধ্যে বড় ব্যবসায় পরিণত হয়, কেননা এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে তবু কমছে না। আমাদের কাছে আরো অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি মুড়ি খুবই প্রিয় এবং বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়।
তাই যদি কোন ব্যবসার পরিকল্পনা করে থাকেন আর নিজের কাছে কিছু পুঁজি থেকে থাকে তার সাথে প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা থেকে লোন নিয়েও এই ব্যবসাটিকে বাস্তবায়িত করতে পারেন, আর প্রতি মাসে বেশ ভালো টাকা উপার্জন করতে পারবেন। সাথে নিজের ব্যবসা করার স্বপ্নটাকেও পূরণ করতে পারবেন।