2024 Poplar Tree Farming Business Idea in Bengali

Poplar Tree Farming Business Idea in Bengali – পপুলার গাছ চাষের ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? পপুলার গাছ চাষ ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? কি কি প্রয়োজন হবে? জানুন সবকিছু পপুলার গাছ ব্যবসা সম্পর্কে।

আমাদের আশেপাশে এমন অনেক গাছপালা রয়েছে যা কিনা খুবই কম সময়ের মধ্যে অনেকটা দীর্ঘ হয়ে ওঠে। আর এই গাছগুলির চাহিদা এতটাই যে অনেকে পড়ে থাকা জমিতে এই গাছের চাষ করে বেশ ভালো মতো উপার্জন করে থাকেন। তবে তার জন্য কিছুটা সময় দিতে হবে প্রথমে।

এখানে পপুলার গাছের ব্যবসার কথা বলা হয়েছে। এই গাছটি ভারতে বিভিন্ন নামে পরিচিত, হিন্দিভাষীদের কাছে এই গাছের নাম “পারস, পিপল অথবা পোরুশ”। আবার গুজরাতিদের ভাষায় বলা যেতে পারে “পারস পিপল”। এই গাছগুলি খুবই কম সময় অর্থাৎ ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে গাছের উচ্চতা হয় ৮৫ ফুট পর্যন্ত।

আমাদের নিত্যদিনের জীবন যাত্রায় কাগজ, প্লাইউড, কাঠের বাক্স অথবা কাঠের স্টিকের ব্যবহার আমরা প্রায় সকলেই করে থাকি। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানিনা যে এগুলি তৈরিতে কোন গাছের কাঠ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। এই পপুলার গাছ এই শিল্পের অন্যতম মেরুদন্ড বলা যেতে পারে। তাই এই গাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, বাজারে দামও কিন্তু যথেষ্ট পাওয়া যায়। তাই জমিতে এই গাছ লাগালে লাভের মুখ দেখা যেতে পারে। অনেক চাষিরা তাঁদের জমিতে এই গাছ লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছে।

পপুলার গাছের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ

আমরা সকলেই কমবেশি জানি যে সব জায়গা সব গাছের জন্য উপযুক্ত নয়। তবুও বলে রাখা ভালো যে এই গাছ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বেশ ভালো উৎপাদন করা যেতে পারে। মাত্র ৫ বছর থেকে ৭ বছরের মধ্যে গাছের উচ্চতা ৮৫ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যায়। তাছাড়া উত্তরাখন্ড, পশ্চিমবঙ্গ, জম্মু কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ এই সমস্ত জায়গাতে এই গাছের চাষ দেখতে পাওয়া যায়।

অনেকটা জায়গা জুড়ে এই গাছগুলি থাকার কারণে দূর থেকে দৃষ্টিনন্দনও বটে। ভালোভাবে এই গাছ বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন ৫ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। সরাসরি সূর্যের আলোর প্রয়োজন রয়েছে, তাই ফাঁকা জায়গাতেই এই গাছ করতে হবে অবশ্যই। কেননা এই গাছের উচ্চতা অনেকটাই। বাঁচিয়ে রাখার জন্য সঠিক পরিচর্যার প্রয়োজন তার সঙ্গে দরকার সূর্যের সরাসরি আলো।

এছাড়া বিভিন্ন রাসায়নিক এর মাধ্যমেও দেখভাল করা হয় এই গাছের। একবার বড় হয়ে গেলে এই গাছের আর তেমন কোন দেখভালের প্রয়োজন পড়ে না। তবে যে সমস্ত জায়গা খুবই ঠান্ডা এবং বরফ পড়ে সেই সমস্ত জায়গাতে এই গাছ চাষ করা যায় না। এই গাছের চাষ করতে গেলে মাটি ৬ থেকে ৮.৫ পি এইচ (লেভেল) এর মাঝামাঝি অবশ্যই হতে হবে। এই পপুলার গাছ লাগানোর জন্য একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দূরত্ব ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত হওয়া প্রয়োজন।

এই গাছের সাথে অন্য কোন চাষ করা যাবে কি?

যদি এই গাছের সাথে অন্য কোন সবজির চাষ করতে চান তাহলে অবশ্যই করা যাবে। এই গাছের মাঝে মাঝে হলদি, আলু, ধনিয়া পাতা, টমেটো ইত্যাদি সবজি অনায়াসেই চাষ করতে পারবেন। আর এর থেকেও বেশ ভালো উপার্জন করতে পারবেন, তার সাথে সাথে ভবিষ্যতের জন্য এই গাছ গুলিও বাড়তে থাকবে।

কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে?

পপুলার গাছের চারা কেনার জন্য যে টাকা প্রয়োজন পড়বে সেটা আপনি আপনার সাধ্য মতোই বিনিয়োগ করতে পারেন। তাছাড়া নিজের কাছে থাকা জমিতে এই গাছ চাষ করা যাবে, আর কীটনাশক এবং গাছের পরিচর্যার জন্য কিছু খরচ, সব মিলিয়ে প্রথমে ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা কমপক্ষে বিনিয়োগ করে ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন অল্প পরিসরে।

পপুলার গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি সামগ্রী :

শুধুমাত্র ভারতেই নয় এই গাছের চাহিদা রয়েছে বিদেশেও। ইউরোপ, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশের মতো বিভিন্ন জায়গায় জমিতেও এই গাছ লাগিয়ে থাকেন মানুষ এবং ভারত থেকেও রপ্তানি করা হয়।

কাগজ, প্লাইউড, চপস্টিক, কাঠের বাক্স, দেশলাই সহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করতে এই কাঠের প্রয়োজন পড়ে। তাই বোঝাই যায় যে এই গাছের চাহিদা বাজারে কতখানি।

পপুলার গাছ থেকে উপার্জন করবেন কিভাবে?

যেহেতু বেশ কিছু বছর সময় লাগে এই গাছটি পরিপক্ক হতে এবং বিক্রি করার জন্য, তাহলে তার মধ্যেও আপনি অন্য কোন কাজের পাশাপাশি এর মধ্যে সবজির চাষ করতে পারবেন, তা থেকে উপার্জন করা যেতে পারে। আর যখন গাছগুলি বিক্রি করার জন্য উপযুক্ত হবে তখন উপার্জন প্রচুর পরিমাণে হতে থাকবে। এই গাছের কাঠের দাম হিসাবে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল বিক্রি হয়ে থাকে।

এই গাছের এক একটি শাখা অথবা মোটা কোন ডাল বা একটি গুড়ি ২,০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। এক হেক্টর জমি থেকে ২৫০ টি গাছ পাওয়া যেতে পারে আর মাটি থেকে গাছের উচ্চতা প্রায় ৮৫ ফুট পর্যন্ত। বছরে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যেতে পারে এই গাছ বিক্রি করে। বিভিন্ন জায়গায় এই গাছের চাষ লক্ষ্য করা যায়। প্রচুর পরিমাণে উপার্জন হওয়ার কারণে, তাছাড়া এই পপুলার গাছের কাঠ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হওয়ার জন্য এর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।

প্রতিটি গাছ আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে তার পাশাপাশি আমাদের জীবিকা নির্বাহে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আর এই গাছ কোন ফাঁকা জমিতে কয়েক বছরের জন্য চাষ করে রেখে দিতে পারলে পরবর্তীতে অনেক টাকা উপার্জন করার একটা সুযোগ করে দেবে। আর এই ব্যবসাটি একবার গাছ লাগিয়ে যত্ন করে গাছ বড় করে তুলতে পারলেই আর কোন বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়বে না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top