2024 Vermicompost Making Business Idea in Bengali

Vermicompost Making Business Idea in Bengali – ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির ব্যবসা কি? ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে।

প্রাকৃতিকভাবে পরিবেশ আমাদের অনেক কিছুই উপহার দেয় আবার কৃষকদের দ্বারা সেই সমস্ত সবজি, ফুল, ফল আমাদের কাছে পৌঁছে যায় যার গুনাগুন এতটাই ভালো যে আমাদের সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে কোনরকম কীটনাশক বা উচ্চফলনের জন্য কোন সার ব্যবহার না করেই শুধুমাত্র প্রকৃতির উপরে নির্ভর করে চাষাবাদ করে থাকেন।

বিভিন্ন রকমের ব্যবসার মধ্যে এমন অনেক ব্যবসা রয়েছে যা চাষ আবাদের সাথে যুক্ত। যখন জমির মাটি ভালো হবে তখন সেই জমিতে যাই কিছু চাষ করা হোক না কেন সবকিছুই ভালো ফলন দেয় বলে আমরা সকলেই জানি। তেমনি গাছের পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি ও খাদ্য সরবরাহ করার জন্য ভার্মি কম্পোস্ট অথবা কেঁচো যুক্ত মাটি বিশেষভাবে উপযুক্ত।

কেঁচো মাটিকে ঝরঝরে রাখে আর প্রাকৃতিক সার তৈরি করে যা গাছের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী, জমিকে উর্বর করে তোলার জন্য কেঁচো সহযোগিতা করে থাকে। অনেকে টবে বিভিন্ন ফুল ও ফলের চাষ করে থাকেন আর সে ক্ষেত্রে কিছু আলাদা করে গাছের খাদ্য দিতে হয় আবার অনেক চাষী রয়েছে যাঁরা জমির মাটিকে উর্বর করে তোলার জন্য এই ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করে থাকেন।

আপনি যদি কোন ব্যবসার কথা চিন্তা করে থাকেন আর চাষাবাদ ভীষণ পছন্দের হয়ে থাকে, গাছ ভালবেসে থাকেন তাহলে এই ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করার ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।

খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে প্রতিনিয়ত এই ব্যবসা থেকে উপার্জন করতে পারবেন। দেশে প্রাকৃতিক ভাবে চাষ করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে সকল কৃষক কে। আর তাইতো এই ভার্মি কম্পোস্ট এর চাহিদা এত গুণ বেড়ে চলেছে। কৃষক ঘরে থেকেই খুব সহজেই এটি তৈরি করতে পারেন, নিজের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি আরও অন্যান্য কৃষকদেরও সেগুলি বিক্রি করতে পারেন। বাজারে এই ভার্মি কম্পোস্ট ১০ টাকা কিলো দরে বিক্রি করা হয়।

ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করার ব্যবসা:

যদি আপনি ঘরে থেকে করতে পারা একটি ব্যবসার সন্ধান করে থাকেন তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার ভাগ্য বদল করে দিতে পারে। এটি এমন একটি ব্যবসা প্রতিনিয়ত এর চাহিদা বেড়েই চলেছে।

কৃষক থেকে শুরু করে যাঁরা বাড়িতে বাগান করে থাকেন তাঁদের জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় এই ভার্মি কম্পোস্ট। কেঁচোযুক্ত মাটি অথবা সার এটি প্রাকৃতিকভাবে ভীষণ উপযোগী।

প্রাকৃতিক ভাবে চাষ আবাদের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োজন হয়ে পড়ে, তাই অনেকেই এই সার ব্যবহার করতে আগ্রহী। পরিবেশ এবং মাটির কোনরকম ক্ষতি না করে সেগুলিকে আরো বেশি উর্বর ও বায়ুমন্ডলের ভারসাম্য বজায় রাখতে বিশেষভাবে সহযোগিতা করে।

আবার গোবরকে ভার্মি কম্পোস্ট তে পরিণত করে আপনি আপনার আমদানি বাড়াতে পারেন, আর ঘরে বসেই অনায়াসে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারেন।

ভার্মি কম্পোস্ট অথবা কেঁচো সার কি?

যখন কেঁচো কে গোবরে রাখা হয় আর গোবরকে কেঁচোর খাদ্য হিসেবে প্রদান করা হয়। তখন কেঁচো সেই গোবর খাওয়ার পর বিঘটিত হয়ে যে নতুন একটি উর্বর মাটি তৈরি হয় তাকে বলা হয় ‘কেঁচো সার’ অথবা ‘ভার্মি কম্পোস্ট’।

গোবর ভার্মি কম্পোস্টে পরিণত হওয়ার পর এর মধ্যে কোনরকম দুর্গন্ধ থাকে না, এর পাশাপাশি মাছি, মশা হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা থাকে না।

তার সাথে সাথে পরিবেশের পর্যাবরণে একটি বিশুদ্ধিকরণ ঘটে। এরমধ্যে ২ থেকে ৩ শতাংশ নাইট্রোজেন, ১.৫ থেকে ২ শতাংশ সালফার এবং ১.৫ থেকে ২ শতাংশ পটাশ পাওয়া যায়, এই কারণে কেঁচোকে কৃষকের বন্ধু বলা হয়।

এইভাবে বহুকাল আগে থেকেই কেঁচো কৃষকের সহযোগিতা করে আসছে উর্বর মাটি উৎপাদন করে।

ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করবেন যেভাবে:

কেঁচো সার তৈরি করার জন্য আপনার কাছে থাকা কোন জায়গা অথবা জমির একটি কোনাই যথেষ্ট। ঘরে থেকেই অল্প কিছু জায়গাতে এই সার তৈরি করতে পারবেন, কোনরকম সেড দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

এছাড়া আপনার ক্ষেতের চারিদিকে নেট দিয়ে ঘিরে পশুপাখি থেকে রক্ষা করতে পারেন। এছাড়া আর কোন বিশেষ সুরক্ষা প্রদানের প্রয়োজন নেই।

  • লম্বা এবং মজবুত পলিথিন অথবা ত্রিপল বাজারে কিনতে পাওয়া যায় সেগুলি নিয়ে আসতে পারেন আর সেগুলি ১.৫ থেকে ২ মিটার চওড়া আর আপনার জায়গা হিসাবে লম্বা হিসাব করে কেটে নিতে হবে।
  • জমি যদি সমতল থাকে তাহলে খুবই ভালো আর যদি না থেকে থাকে তাহলে সমতল করে নিতে পারেন। এরপর ত্রিপল বিছিয়ে তার উপরে গোবর ছড়িয়ে দিতে হবে।
  • গোবরের উচ্চতা ১ থেকে ১.৫ ফুট পর্যন্ত রাখতে পারেন। এবার কেঁচো ওই গোবরের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে।
  • কুড়িটি বেডের জন্য প্রায় ১০০ কিলো কেঁচোর প্রয়োজন পড়বে। প্রায় এক মাসে তৈরি হয়ে যাবে এই কেঁচো সার অথবা ভার্মি কম্পোস্ট।

ভার্মি কম্পোস্ট কিভাবে বিক্রি করবেন?

যখন এই ব্যবসাটি শুরু করবে অবশ্যই সেই ভার্মি কম্পোস্ট অথবা কেঁচো সার বিক্রি করার জায়গা আপনাকে দেখে নিতে হবে। তাছাড়া বর্তমানে অনলাইনে বিক্রি হয় না এমন কোন জিনিস নেই।

তাই অ্যামাজন (Amazon), ফ্লিপকার্ট (Flipkart) এই সমস্ত ই-কমার্স সাইটগুলিতে আপনি আপনার তৈরি ভার্মি কম্পোস্ট বিক্রি করতে পারেন।

এখান থেকে প্রচুর মানুষ অর্ডার করে থাকেন আর আপনার ভার্মি কম্পোস্ট বহুদূর পর্যন্ত চলে যেতে পারে। এর ফলে আপনি প্রচুর গ্রাহক পাবেন, আর বিক্রিও বাড়বে খুব তাড়াতাড়ি।

তাছাড়া আশেপাশে এমন অনেক কৃষক রয়েছেন যাঁদের সাথে দেখা করে তাঁদের এই সার সম্পর্কে বলে আপনার ভার্মি কম্পোস্ট তাঁদের কাছে বিক্রি করতে পারেন।

যদি আপনি ২০ বেড থেকে আপনার ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করার ব্যবসাটি শুরু করে থাকেন তাহলে ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত প্রথমে বিনিয়োগ করতে হতে পারে।

দুই বছরের মধ্যে ৪ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা মুনাফা অর্থাৎ এই ব্যবসা থেকে উপার্জন করতে পারবেন। আরও কয়েক বছর পরে গিয়ে আরও বেশি টাকা উপার্জন করতে পারবেন আশা করা যায়।

অনেকে বাড়ীর সাথে বাগান করতে ভীষণভাবে পছন্দ করেন, আর আপনার তৈরি করা এই ভার্মি কম্পোস্ট তাঁদেরও অনেক প্রয়োজন মেটাতে পারে। তাই আশে পাশে থাকা সমস্ত বাগানপ্রেমী, কৃষক থেকে শুরু করে সকলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন যাঁরা প্রাকৃতিকভাবে ফসল ও ফুল, ফল উৎপাদন করতে পছন্দ করেন। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া কে কাজে লাগিয়ে আপনার ব্যবসার কথা প্রচার করতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top