Supari Processing Business Idea in Bengali – সুপারি তৈরির ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? সুপারি তৈরির ব্যবসার কত চাহিদা এই ব্যাবসার? সুপারি তৈরির ব্যবসায় কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন? কি কি জিনিসপত্রের প্রয়োজন হবে? জানুন সবকিছু সুপারি তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে।
আমাদের দেশে বিভিন্ন জায়গায় সুপারি গাছের দেখা মেলে। আর এই গাছ অনেকেই শখের বসে, বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে লাগিয়ে থাকেন অথবা সুপারি আমদানির জন্য ও এই গাছ লাগানো হয়ে থাকে। সুপারি গাছ অনেকটা নারকেল গাছের মতো, আর এই সুপারি বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
যেমন ধরুন পানের সাথে খাওয়া হয়ে থাকে অথবা কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য তৈরি করতে প্যাকেটজাত করা হয় এই সুপারি। ব্যবসার জগতে সুপারি বেশ ভালো জায়গা করে নিয়েছে, প্রতিনিয়ত এর চাহিদা প্রচুর পরিমাণে বাড়ছে।
যদি আপনি কোন ব্যবসা করার চিন্তা করে থাকেন তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার জন্য বেশ লাভদায়ক হতে পারে। তাছাড়া যদি আপনার বাড়িতে বেশ কয়েকটি সুপারি গাছ থাকে বা কোন জমি পড়ে থাকে তাহলে সেখানেও সুপারি গাছের চাষ করে তা থেকে বেশ ভালোমতো উপার্জন করতে পারবেন।
শুধুমাত্র ১ – ২ বছরের জন্য নয়, টানা ৭০ থেকে ৮০ বছর পর্যন্ত এই ব্যবসাটি করতে পারবেন শুধুমাত্র একবার গাছ রোপন করেই। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে এটি আপনার অন্যান্য কাজের পাশাপাশি বেশ ভালো মানের একটি ব্যবসা। সুপারি প্রচুর পরিমাণে হয় আর এর জন্য অতিরিক্ত কোন পরিচর্যার প্রয়োজন নেই।
সুপারি চাষ করে করুন সুপারির ব্যবসা:
এটি এমন একটি ব্যবসা যা কোন ব্যবসার সাথে কোনরকম প্রতিযোগিতা করে না। এছাড়া সুপারি চাষ করে আপনি একবারে কিছু টাকা বিনিয়োগ করে টানা ৭০ বছর পর্যন্ত এই ব্যবসা থেকে লাভ পেতে থাকবেন।
সম্পূর্ণ বিশ্বে সুপারির উৎপাদন ভারতে সবথেকে বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে, আবার বলা যেতে পারে পৃথিবীর ৫০% সুপারি উৎপাদন হয় আমাদের এই ভারতেই। এর ব্যবহার পান, গুটখা থেকে শুরু করে ধার্মিক যেকোনো কাজে পূজা পার্বণ -এ ব্যবহার করা হয়ে থাকে এই সুপারি।
তাছাড়া যে কোন মাটিতে সুপারি গাছের চারা রোপন করা যেতে পারে। তাছাড়া যখন চারা রোপন করা হবে সেই অবস্থাতে রান্নাঘরে থাকা আবর্জনা দিয়েও এই গাছের সার তৈরি করা যেতে পারে।
সুপারি গাছ নারকেল গাছের মতো হয়ে থাকে তাই ৫০ থেকে ৬০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। ৭ থেকে ৮ বছরের মধ্যে এই গাছে ফল হতে শুরু হয়ে যায় অর্থাৎ আপনি যদি অন্যান্য কাজের পাশাপাশি এই গাছ রোপন করে থাকেন তাহলে কয়েক বছরের মধ্যেই আপনার একটি বিনা পরিশ্রমের ব্যবসা শুরু হয়ে যাবে, যার জন্য আর কোন টাকা বিনিয়োগ করতে হবে না।
তবে খেয়াল রাখতে হবে যে সুপারি গাছের চারা যে জমিতে রোপন করা হবে সেখানে যেন জল নিকাশের ব্যবস্থা খুবই ভালো থাকে এবং গাছের চাহিদা অনুসারে জলের যোগানও যেন ভালো থাকে।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, সুপারি গাছের চাষ কিভাবে করবেন আর তা থেকে উপার্জন কিভাবে করবেন :
কিভাবে করবেন সুপারি গাছের চাষ?
সুপারি গাছের চাষ করতে গেলে আপনাকে নার্সারীর মতো করে চাষ করতে হবে এবং যদি চান আপনি নার্সারি থেকে কাউকে এনে সুপারি গাছের চারা রোপন করতে পারেন।
এর জন্য সবার প্রথমে সুপারি গাছের চারা হোক অথবা বীজ যেটি আপনি রোপন করতে চান সেটি ভালোভাবে জোগাড় করতে হবে, তবে অবশ্যই চারা এবং বীজের মান যেন ভালো হয়। যেখানে এই চারা রোপন করবেন সেখানে জলের সরবরাহ খুবই ভালো হতে হবে। যাতে গাছের গোড়ায় জল না জমে এবং গাছ পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পেয়ে থাকে।
জল নিকাশের ব্যবস্থার জন্য ছোট ছোট নালা কেটে রাখতে হবে অবশ্যই, আর সুপারি গাছের চাষ করার জন্য জুলাই মাসে চারা রোপন করা খুবই ভালো বলে মনে করা হয়। গাছের সারের জন্য গোবর সার, কম্পোস্ট এবং সবজির খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে।
সুপারি গাছের দেখভাল:
গাছ যখন ছোট থাকবে তখন অবশ্যই তার দেখভাল করাটা জরুরী। প্রয়োজনে গাছ ঘিরে রাখতে হবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত একটু বড় হয়ে যাচ্ছে। তারপর সম্পূর্ণ জমিতে কোন আগাছা যেন না জন্মায় সেদিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। গাছে পোকামাকড় হলেও সেটা কিন্তু খেয়াল রাখা জরুরী।
তবে সম্ভবত নারকেল গাছের মতোই সুপারি গাছের তেমন একটা পোকা লাগে না। গাছের শুকনো পাতা অবশ্যই ছেঁটে ফেলতে হবে। ৪ থেকে ৫ বছর পর সুপারি গাছের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে, তার সাথে সাথে ফুল ও ফল আসতে শুরু করবে।
সুপারির ব্যবসা করে কত উপার্জন করতে পারেন?
সুপারি গাছে যখন সুপারি ধরে তখন তার রং সবুজ থাকে। তবে অবশ্যই যখন সুপারি বেশ ৪ ভাগের ৩ ভাগ হলুদ বর্ণের হয়ে যাবে তখন কিন্তু এই সুপারি পেড়ে নিতে হবে। বাজারে সুপারির চাহিদা প্রচুর, এর দাম প্রায় ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত কিলো হিসাবে খুবই সহজেই বিক্রি করে দিতে পারবেন।
এই হিসেবে যদি এক একর জমিতে সুপারি চাষ করা হয়ে থাকে তাহলে তার উপার্জন প্রচুর হবে। গাছের সংখ্যা হিসেবে লাখ টাকা থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যেতে পারে। আর আগেই বলা হয়েছে যে এই গাছ একবার রোপন করার পর প্রায় ৭০ বছর পর্যন্ত আপনাকে পরিশ্রম ছাড়াই মুনাফা এনে দেবে।
বাড়িতে থাকা ঠাকুমা, দিদা, দাদুর পান খাওয়া থেকে শুরু করে বাজারে পানের দোকান সব জায়গাতেই সুপারির প্রয়োজন পড়ে। এছাড়া যখন বড় কোন কোম্পানিতে গুটকা এবং প্যাকেটজাত নেশা দ্রব্য তৈরি করা হয় তখন কিন্তু প্রয়োজন পড়ে প্রচুর পরিমাণে সুপারির।
তাই আপনার চাষ করা সুপারি প্রয়োজন মেটাতে পারে অনেক বড় বড় কোম্পানির। তাই সময় থাকতে বর্তমান কাজের পাশাপাশি পড়ে থাকা জমিতে সুপারি চাষ করে আগামী ৭০ বছর পর্যন্ত এক কথায় বসে বসেই উপার্জন করতে পারবেন।