Mobile-Laptop Repair Business Idea in Bengali – মোবাইল-ল্যাপটপ রিপেয়ারিং ব্যবসা কি? শুরু করবেন কিভাবে? মোবাইল-ল্যাপটপ রিপেয়ারিং ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু মোবাইল-ল্যাপটপ রিপেয়ারিং ব্যবসা সম্পর্কে।
ডিজিটাল যুগে প্রত্যেকেই মোবাইল ফোনের সাথে বিশেষভাবে পরিচিত। এছাড়া মোবাইল, ল্যাপটপ এগুলি ছাড়া যেন একটা দিনও কাটানো যায় না। প্রতিটি বাড়িতে ল্যাপটপ না থাকলেও স্মার্টফোনের দেখা অবশ্যই পাওয়া যায়। আর এই সমস্ত ডিভাইসগুলি এক সময় এমনভাবে খারাপ হয়ে পড়ে যেগুলি রিপেয়ার অর্থাৎ নতুন ভাবে সারিয়ে তুলতে হয়। এর জন্য আপনাকে মোবাইল ল্যাপটপ রিপেয়ার সেন্টারে গিয়ে এগুলি ঠিক করে আনতে হয়।
আর যদি মোবাইল, ল্যাপটপ সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা থেকে থাকে আর এগুলি সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রেও দক্ষতা রাখেন তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার জন্য।
মোবাইল আর ল্যাপটপ রিপেয়ারিং এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কথায় আছে এই ব্যবসাটি হাতের কারুকাজ এবং হাতের দক্ষতার ব্যবসা। এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য প্রথমে একটি ছোট্ট কোর্স আপনাকে সম্পূর্ণ করতে হবে আর মোবাইল, ল্যাপটপ সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য আপনাকে জানতে হবে এবং কিভাবে রিপেয়ার করতে হয় সে বিষয়েও ভালোভাবে নিজেকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। দেশে এমন অনেক সংস্থান রয়েছে যে যারা মোবাইল এবং ল্যাপটপ রিপেয়ারিং এর কোর্স করিয়ে থাকেন।
এছাড়াও এই ব্যবসাটির মাধ্যমে কোন কোম্পানি থেকে টাই আপ করেও অথবা একটি দোকান খুলেও বেশ ভালো টাকা উপার্জন করার সম্ভাবনা রয়েছে। শুধুমাত্র সম্ভাবনাই নয় এই ব্যবসাতে প্রচুর উপার্জন রয়েছে, কেননা মোবাইল ও ল্যাপটপ আমাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।
এগুলি খারাপ হয়ে গেলে কেউ বেশিদিন ফেলে রাখেন না, সেগুলি রিপেয়ার করার জন্য অবশ্যই দোকানে নিয়ে যান। তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক মোবাইল ল্যাপটপ রিপেয়ারিং এর ব্যবসা সম্পর্কে:
দেশে ডিজিটাইজেশন (Digitization) খুব দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে। ডিজিটাল এই যুগে প্রায় সকলেই নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে সংযুক্ত রেখেছেন। আর এই সোশ্যাল মিডিয়াতে সবসময় সক্রিয় থাকার জন্য অবশ্যই প্রয়োজন পড়বে স্মার্টফোন অথবা ল্যাপটপের। এছাড়া এমন অনেক কাজ রয়েছে যা অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়, আর অনেক ব্যবসা রয়েছে যেগুলি অনলাইনের উপরেই নির্ভরশীল। তাই ল্যাপটপ আর স্মার্টফোন বিশেষভাবে জরুরী।
এর চাহিদা কতখানি তা আমরা সকলেই নিশ্চয়ই ধারণা করতে পারি। ভারতে ইন্টারনেট এর সাথে থেকে শুরু করে অনলাইন সার্ভিস এর জায়গা অনেকখানি বিস্তর হয়ে পড়েছে। প্রতিটি ঘরের চাহিদা বলা যেতে পারে মোবাইল অথবা ল্যাপটপ। এগুলি ইলেকট্রনিক্স গেজেট যা একসময় খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা তো থাকেই আর খারাপ হয়ে গেলে সেটি রিপেয়ার না করলে চলে না।
ল্যাপটপ এবং মোবাইল রিপেয়ারিং এর একটি দোকান আপনি খুলতে পারেন, সেটি আপনার বাড়ির সাথে লাগোয়া দোকান হতে পারে অথবা ভাড়ায়ও নিতে পারেন। যদি নিজস্ব দোকান হয়ে থাকে তাহলে লাভের ভাগটা সম্পূর্ণই আপনার। এছাড়াও অনলাইনেও ল্যাপটপ এবং মোবাইল রিপেয়ারিং শিখতে পারেন কিন্তু কোন সংস্থান থেকে যদি শেখেন তাহলে খুবই ভালো হয়। কোর্স সম্পূর্ণ করার পর যদি আপনি কিছু সময়ের জন্য কোন রিপেয়ারিং সেন্টারে মোবাইল ও ল্যাপটপ রিপেয়ারিং এর কাজ করে থাকেন তাহলে আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে। যা এই ব্যবসার জন্য খুবই জরুরী, একেবারে সোনায় সোহাগা বলা যেতে পারে।
মোবাইল-ল্যাপটপ রিপেয়ারিং ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে?
যখন আপনি ট্রেনিং নেওয়ার পর ল্যাপটপ এবং মোবাইল রিপেয়ারিং এর কাজে দক্ষ হয়ে যাবেন তখন আপনার কাজের কোন অভাব হবে না, এছাড়া কোন দোকানে থেকে যদি এই কাজ করে থাকে তাহলে আরো বেশি দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। আর এরপর নিজস্ব একটি রিপেয়ারিং সেন্টার খুলে নিতে পারবেন।
ল্যাপটপ, মোবাইল রিপেয়ারিং সেন্টার এমন জায়গায় খোলা দরকার যেখানে মানুষজনের সমাগম খুবই বেশি আর বহু জায়গা থেকে এখানে মানুষের যাতায়াত থাকবে। তাহলে আপনার এই সার্ভিসের কথা সবাই জানতে পারবে।
আবার আরো একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে এমন জায়গায় এই সেন্টার খুলবেন যেখানে অন্য কোন রিপেয়ারিং সেন্টার যেন আগে থেকে অবস্থিত না থাকে। আপনার মোবাইল, ল্যাপটপ রিপেয়ারিং সেন্টারের প্রচার করতে পারেন মুখে মুখে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। এর ফলে আরো বেশি গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে আপনার সেন্টারে। এই ব্যবসাটি শুরু করতে গেলে খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন এবং অল্প কিছু জিনিসপত্র নিয়ে শুরু করতে পারেন।
ল্যাপটপ এবং মোবাইল রিপেয়ারিং সেন্টার খোলার পর প্রথম দিকে আপনার দোকানে খুব বেশি জিনিসপত্র রাখার প্রয়োজন নেই। কেননা শুধুমাত্র খারাপ হয়ে যাওয়া মোবাইল ও ল্যাপটপ ঠিক করে দেওয়ার কাজ করবেন আপনি, এই জন্য আপনার কাছে সাধারণভাবে কিছু জরুরী হার্ডওয়ার থাকলেই হবে।
যেমন ধরুন মাদারবোর্ড, প্রসেসার, র্যাম, হার্ড ড্রাইভ এবং সাউন্ড কার্ড এর মত কিছু অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জোগান থাকতে হবে। এর কারণ এটা যে, এগুলি খুবই তাড়াতাড়ি নিয়ে আসতে পারবেন অথবা অনলাইনে অর্ডারও করতে পারবেন।
মোবাইল ও ল্যাপটপ রিপেয়ারিং ব্যবসাতে বিনিয়োগ:
যেহেতু আগেই জেনেছি যে, খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে এই ব্যবসাটি অল্প স্তরে শুরু করতে পারেন। খুবই কম জিনিসপত্র রাখতে পারেন আপনার এই রিপেয়ারিং সেন্টারে। ল্যাপটপ ও মোবাইল রিপেয়ার সেন্টার খোলার জন্য কমপক্ষে ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা প্রয়োজন পড়তে পারে।
প্রথম দিকে খুবই কম উপকরণ দিয়ে ব্যবসাটি শুরু করা যায় এবং যখনই যখনই আপনার ব্যবসাটি বাড়তে থাকবে তখন আপনার দোকান আপনার মনের মতো করে সাজিয়ে তুলতে পারেন।
মোবাইল ও ল্যাপটপ রিপেয়ারিং ব্যবসাতে লাভ:
বর্তমান যুগ এখন ডিজিটাল যুগ, বাচ্চা থেকে বড় সকলেরই প্রয়োজন এখন স্মার্ট ফোন থেকে ল্যাপটপ। যেহেতু এগুলি ইলেকট্রনিক গেজেট, যার ফলে কোন না কোন সময় খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তো থাকছেই। আর এগুলি খারাপ হয়ে গেলে তাড়াতাড়ি সারিয়া আনতে চাইবেন সকলেই। সাধারণত মোবাইল এবং ল্যাপটপ রিপেয়ারিং এর খরচ খুবই বেশি হয়ে থাকে, আর যা বলা হয় তেমনটাই দিতে রাজি হয়ে যান গ্রাহক।
এক্ষেত্রে এই ব্যবসা থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তার পাশাপাশি আপনি কোন কোম্পানির সাথে টাই আপও করতে পারেন। এর ফলে প্রতিমাসে মোটা টাকা উপার্জন করতে পারবেন। প্রথম দিকে প্রতি মাসে ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা উপার্জন করার সম্ভাবনা থাকছে। এর পরে পরে ব্যবসাটি বাড়ার সাথে সাথে আপনার উপার্জন ৪০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা থেকে বেড়ে আরো বেশি হতে পারে।
যদি কিছুটা সময় নিজের উপরে ইনভেস্ট করে একটি ব্যবসার কোর্স করা যায়, আর সেই কোর্স থেকে ব্যবসাটি শুরু করে কম টাকা বিনিয়োগ করে প্রতি মাসে টাকা উপার্জন করা যায় তাই তাহলে মন্দ নয়। এই ব্যবসাটি অনেকেই করছেন যাঁরা আজ ভীষণভাবে লাভবান।
আপনি কিন্তু কম পুঁজি নিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন তবে অবশ্যই আপনার দক্ষতা থাকতে হবে। কিছুটা সময় নিয়ে এ সম্বন্ধে ধারণা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করুন আর তার সাথে সাথে শুরু করুন মোবাইল রিপেয়ারিং সেন্টারের এই ব্যবসাটি।