Microgreens Farming Business Idea in Bengali – মাইক্রোগ্রিন ব্যবসা কি? শুরু করবেন কিভাবে? মাইক্রোগ্রিন ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু মাইক্রোগ্রিন উৎপাদন ও ব্যবসা সম্পর্কে।
চাষ আবাদ করেও প্রচুর টাকা উপার্জন করা যেতে পারে তবে জানতে হবে তার নতুন প্রসেস আর একটু বুদ্ধি যা অল্প পরিসরে চাষাবাদ করেও প্রচুর টাকা উপার্জন করতে পারবেন প্রতিমাসে।
এমনই একটি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আজকের এই আয়োজন। যা ঘরে থেকে খুবই অল্প পরিসরে প্রচুর টাকা উপার্জন করার সুযোগ দেবে। ঘরে থেকে মাইক্রোগ্রিন উৎপাদন করে বাম্পার উপার্জন করতে পারেন।
কেননা এই মাইক্রোগ্রিন সকালের জলখাবারের স্যালাড হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কোন বীজের অঙ্কুরিত অবস্থাকে বলা হয় মাইক্রোগ্রীন, অন্যান্য সবজির মতো এগুলি উৎপাদন করা হয়ে থাকে।
মাইক্রোগ্রিন উৎপাদন করে ব্যবসা করুন:
যদি আপনি আপনার বর্তমান কাজের পাশাপাশি একটি ছোট্ট ব্যবসা করে অতিরিক্ত উপার্জন করার আশা করে থাকেন তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার জন্য খুবই ভালো আইডিয়া হতে পারে।
বর্তমানে প্রচুর মানুষ চাষাবাদ করে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছেন। সবুজ অঙ্কুরিত এই বীজের চাষ করে উপার্জন করতে পারবেন আপনিও। যাকে এক কথায় ‘মাইক্রোগ্রিন’ বলা হয়।
এটি সুস্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপযোগী। শরীরকে রোগমুক্ত রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে। এই চাষ করাটা খুবই সহজ, আর পরিবর্তনশীল এই সমাজে মানুষের সুস্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার পাশাপাশি খাবারে যুক্ত হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার, আর এই মাইক্রোগ্রিনও তেমন একটি খাবার যা খাদ্য তালিকায় যুক্ত করছেন বর্তমানে অনেকেই।
মাইক্রো গ্রিন কি?
যখন কোন বীজ থেকে প্রথম অংকুর বের হয় এবং দুই থেকে চার পাতা হতে থাকে, সেই অবস্থাকে বলা হয় মাইক্রোগ্রিন। এক্ষেত্রে সরষে, মুগ ডাল, ছোলা, মুলো ইত্যাদি বীজ গুলিকে অঙ্কুরিত করে এই চাষ করতে পারেন।
যখনই এই বীজ অঙ্কুরিত হয়ে দুটো পাতা থেকে চারটে পাতা হতে থাকবে তখন গাছের গোড়া থেকে কিছুটা উপরের দিকে থেকে কেটে নিতে হবে। অর্থাৎ গাছের কান্ড ও পাতা দুটোই কিন্তু থাকবে এই মাইক্রোগ্রিন খাবারের মধ্যে।
মাইক্রোগ্রিন এর উপকারিতা :
খুবই অল্প দিনের মধ্যে এটি উৎপাদন করা যায়, আর এই মাইক্রোগ্রিন এর সবজি অন্যান্য সবজির তুলনায় খুবই ছোট গাছ হয়ে থাকে।
এটি শুধুমাত্র এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে উৎপাদন করা যায়, এটি সকালের জলখাবারে সালাদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যা অঙ্কুরিত সবজি হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, পুষ্টিগুণে ভরপুর এই মাইক্রোগ্রিন খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে প্রচুর, আর স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়।
কোন সবুজ শাক সবজির ছোট রূপ বলা যেতে পারে কিন্তু এই ছোট সবজির মধ্যে অন্যান্য সবজির তুলনায় ৪০% পর্যন্ত পুষ্টিগুণ অবস্থিত থাকে।
আপনার রান্নাঘরের পাশে থাকা ছোট্ট কোন জায়গায় অথবা ব্যালকনিতে ছোট্ট জায়গাতেও এই মাইক্রোগ্রিন উৎপাদন করতে পারেন। ঘর থেকেও খুবই অল্প পরিসরে এই ব্যবসাটি শুরু করা যেতে পারে।
এটি মূলো, শালগম, সরষে, মুগ ডাল, ছোলা, মটর, মেথি, গম, বাজরা, বেসিল ইত্যাদি বীজ থেকে মাইক্রোগ্রিন তৈরি করা যেতে পারে এবং খাওয়া যেতে পারে। এই সমস্ত মাইক্রোগ্রিন থেকে পাওয়া পুষ্টিগুন আপনার শরীরকে সুস্থ সবল করে রাখবে সর্বদাই।
মাইক্রোগ্রিন উৎপাদন করার পদ্ধতি:
মাইক্রোগ্রিন এর উৎপাদন করতে গেলে খুবই কম সময় ও কম পরিশ্রম প্রয়োজন পড়ে। আর এই ব্যবসা থেকে উপার্জনও আসে প্রচুর। তাই খুব সহজেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
মাইক্রোগ্রিন উৎপাদন করতে গেলে যে কোন জায়গা থেকে শুরু করতে পারেন, কোন ছোট গামলা বা ছোট থেকে গভীর কোন পাত্রতেও উৎপাদন করতে পারেন এটি।
এর জন্য আপনাদের সবার প্রথমে জোগাড় করতে হবে কোন পাত্র আর ছোট পাত্র যেখানে গভীরতা থাকবে একটু বেশি আর সেখানে মাটি দিয়ে অথবা কোকোপিট দিয়ে ও প্রাকৃতিক জৈব সার দিতে পারেন এরপর যে বীজ আপনি ছড়াতে চাইছেন সেটা মেথি হতে পারে, ছোলা হতে পারে বা অন্যান্য কোন বীজ যা থেকে মাইক্রোগ্রিন তৈরি করবেন সেই বীজ ছড়িয়ে দিন।
কয়েকদিনের মধ্যেই অঙ্কুরিত বীজ লক্ষ্য করতে পারবেন। ২-৩ পাতা হওয়ার পর এগুলি কেটে নিতে পারবেন।
মাইক্রোগ্রিন ব্যবসা করবেন যেভাবে:
এই ব্যবসাটি করার জন্য আপনার ঘরই পর্যাপ্ত জায়গা, ঘর থেকে শুরু করতে পারেন এই ব্যবসাটি। তাছাড়া ঘরের ছাদ কে কাজে লাগিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করা যেতে পারে।
একবার যখন মাইক্রোগ্রিন অঙ্কুরিত হয়ে যাবে তারপর কিন্তু সূর্যের আলো এদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া অনেকে ঘরের মধ্যে কৃত্রিম আলো দিয়েও এই চাষ করে থাকেন।
এছাড়া যখনই যখনই মাইক্রোগ্রিন অঙ্কুরিত হতে থাকবে তখনই তখনই এগুলি কেটে বাজারে বিক্রি করতে পারেন খোলা অথবা প্যাকেট করে। আবার বড় স্তরে এই ব্যবসাটি করার পর আপনার কিন্তু লক্ষ টাকা উপার্জন হতে থাকবে।
মাইক্রোগ্রিন ব্যবসাতে বিনিয়োগ ও লাভ:
খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন নিজের ঘরে থেকেই। অন্যান্য কাজের পাশাপাশি অল্প কিছুটা সময় দিয়ে এই ব্যবসাটি করা যেতে পারে।
কমপক্ষে ৫,০০০ টাকা হাতে নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে, তারপর যখন ব্যবসাটি বড় করবেন তখন আরো কিছু টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন লাভের টাকা থেকে। এই মাইক্রোগ্রিন এর চাহিদা আপনি পূরণ করতে পারবেন আশেপাশে থেকে শুরু করে অন্যান্য জায়গায় অনলাইনের মাধ্যমে ও ডেলিভারি দিতে পারেন বিভিন্ন জায়গায়।
সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে এই ব্যবসাটিকে আরো বাড়াতে পারেন। প্রতি মাসে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন কিছুটা সময় ও অল্প কিছু টাকা বিনিয়োগ করে। ব্যবসা করার সাথে সাথে উপার্জন ও লাভ বাড়তে থাকবে নিঃসন্দেহে।
এছাড়া যাঁরা বডি বিল্ডার তাঁরা কিন্তু এই মাইক্রোগ্রিন খাবারটি প্রতিনিয়ত খেয়ে থাকেন, তাই তাঁদের সাথে যোগাযোগ করেও আপনার উৎপাদিত মাইক্রোগ্রিন এর বিক্রি বাড়াতে পারেন।