Banana Powder Making Business Idea in Bengali – আধুনিক কলা পাউডার তৈরির ব্যবসা কি? শুরু করবেন কিভাবে? কলা পাউডার তৈরির ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু কলা পাউডার তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে।
অনেক রকমের ব্যবসার কথা অনেকেই হয়তো বলে থাকবেন। তবে এমন কিছু ব্যবসা রয়েছে যা ইউনিক আর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খুবই ভালো। তাই এখন থেকে যদি এই ব্যবসা গুলি শুরু করা যায় তাহলে পরবর্তীতে এর লাভ আরো বেশি বাড়তে থাকবে।
এমনই একটি ব্যবসা হল কলার পাউডার তৈরির ব্যবসা (Banana Powder Making Business), শুনতে অবাক লাগলেও কলার গুঁড়ো অর্থাৎ Banana Powder আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপযোগী।
আমরা সকলেই কমবেশি জানি যে যদি হালকা খিদে পায় তাহলে একটিমাত্র কলা খেলেই সেই ক্ষিদেটা অনেকটাই কমে আসে, বা বলা যেতে পারে খুবই কম সময়ের মধ্যে শরীরে এনার্জি এই নিয়ে আসে এই কলা। বাচ্চারা যখন সলিড খাবার খাওয়া শুরু করে তখন কিন্তু ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী কলা খেতে দেওয়া হয়। আর তাদের কাছে এটি খুবই নরম এবং সুস্বাদু মনে হয়। সেক্ষেত্রে তাদের খাবার তৈরি করতে ওই এই কলার পাউডার খুবই জরুরী।
আর যদি আপনি এই কলার পাউডার তৈরি করে বিক্রি করেন আর সেটিকে ব্যবসার আকার দেন তাহলে খুবই কম সময়ের মধ্যে প্রতি মাসে ভালো মতো উপার্জন করতে পারবেন, আবার ব্র্যান্ডের নাম দিয়েও ব্যবসাটিকে বড় করতে পারবেন।
কলা পাউডার তৈরির ব্যবসা
ব্যবসা করার কথা চিন্তা করছেন বহুদিন থেকে আর যদি ইউনিক কোন আইডিয়ার খোঁজ করে থাকেন তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার জন্য। খুবই কম সময় এবং কম টাকা বিনিয়োগ করে এই কলার পাউডার তৈরির ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। খাদ্যদ্রব্য তৈরির ব্যবসা দিন প্রতিদিন বাড়তেই থাকে, আর সেখান থেকে উপার্জনের মাত্রাও বাড়তে থাকে। তাই কোনভাবেই এই ব্যবসাতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
শুধুমাত্র আপনার ব্যবসা করার মানসিকতা, একটু ধৈর্য, পরিশ্রম এবং ভালো মার্কেটিং ব্যাস, তাহলেই আপনার ব্যবসা সুন্দরভাবে চলতে থাকবে। জানা যায় যে এই পাউডার মানব দেহের বিপি কন্ট্রোল করে অর্থাৎ ব্লাড প্রেসার কে কন্ট্রোলে রাখে। আর অনেকেই এই অসুবিধায় ভুগে থাকেন তাই বাজারে যখন আপনি এর সাপ্লাই দেবেন তখন কিন্তু সকলেই নিজের সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে এই পাউডার কিনতে আগ্রহী হয়ে পড়বেন।
কলা পাউডার তৈরির ব্যবসায় প্রচুর ইনকাম
অল্প টাকা বিনিয়োগ করে প্রতি মাসে ভালো উপার্জন করতে গেলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। যদি আপনার কাছে কোন জায়গা অথবা জমি থেকে থাকে তাহলে সেখানে কলা গাছ রোপন করে তা থেকেও এই ব্যবসাটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন অথবা কৃষকের থেকেও কলা খুবই কম দামে কিনতে পারেন।
আর যদি আপনি নিজেই কলাগাছ রোপন করে এই ব্যবসাটি করতে চান অর্থাৎ কলা বাগান থেকে থাকে আপনার তাহলে এমনি কলা বাজারে বিক্রি করার পাশাপাশি মেসিন বসিয়ে কলার পাউডার তৈরি করেও কিন্তু দুই রকম ভাবে ব্যবসা করতে পারবেন।
কলা পাউডার তৈরির ব্যবসাতে বিনিয়োগ
ব্যবসাতে বিনিয়োগ করার জন্য কমপক্ষে আপনার কাছে কিছু টাকা তো অবশ্যই থাকতে হবে, যেহেতু খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে এই ব্যবসা থেকে বেশি টাকা উপার্জন করা যায় সেহেতু প্রথমে ব্যবসাটি শুরু করার জন্য ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা বিনিয়োগ করতে হতে পারে।
পরবর্তীতে আপনার ব্যবসার চাহিদা, বিক্রি, মার্কেটিং সবকিছুর উপর নির্ভর করে আরও বেশি টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসাটিকে বড় করতে পারেন।
কলা পাউডার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র?
- প্রতিটি ব্যবসার মতো এই ব্যবসাতেও আপনাকে কিছু টাকা তো অবশ্যই বিনিয়োগ করতে হবে।
- যেমন ধরুন কোন মেশিন কেনার জন্য তো প্রয়োজন পড়বেই, তাই পাউডার বানানোর জন্য প্রথমে আপনার দুটো মেশিনের প্রয়োজন পড়বে।
- প্রথম মেশিন হল কলা শুকানোর মেশিন (Banana Dryer Machine) এবং
- দ্বিতীয়তঃ মিক্স করার জন্য মেশিন (Mixture Machine)।
- এই দুটি মেশিন অফলাইনে বাজার থেকেও কিনতে পারেন অথবা অনলাইনে ও কিনতে পারেন।
- এই মেশিন দুটি আপনি www.indiamart.com ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে অর্ডারও করতে পারেন।
কলা পাউডার কিভাবে তৈরি করা হয় ?
- কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে এই পাউডার তৈরি করা হয়, সবার প্রথমে সবুজ কলা সেগুলি গাছ থেকে পেড়ে এনে অথবা যদি কিনে থাকেন তাহলে সরাসরি সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড এর মিশ্রণের দ্বারা পরিষ্কার করে নিতে হবে।
- তারপর হাত দিয়ে সেই কলা গুলি ছাড়িয়ে সঙ্গে সঙ্গে সাইট্রিক এসিডের মিশ্রণের মধ্যে পাঁচ মিনিটের জন্য ডুবিয়ে রাখতে হবে।
- এরপর কলা গুলিকে ছোট ছোট আকারে কেটে নিতে হবে, তারপর সেই ছোট ছোট করে কাটা টুকরো গুলি ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হট এয়ার ওভেন এর মধ্যে দিয়ে শুকাতে হবে, ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত এইভাবে রেখে দিতে হবে।
- এরপরে মিক্সার মেশিনের মাধ্যমে এই শুকিয়ে যাওয়া কলার টুকরো গুলি দিয়ে সুন্দরভাবে পাউডার বানিয়ে নিতে হবে।
এরপর আপনি চাইলে সেটি খোলা হিসেবে বিক্রি করতে পারেন অথবা আপনার কোম্পানির সুন্দর নাম ও ছবি দিয়ে প্যাকেটজাত করেও বিক্রি করতে পারেন।
কলা পাউডার তৈরির ব্যবসা থেকে টাকা উপার্জন
যখন কলার পাউডার তৈরি হয়ে যাবে তখন হালকা হলুদ বর্ণের দেখতে হবে, এই তৈরি হয়ে যাওয়া পাউডার পলিথিন ব্যাগে অথবা কোন কাঁচের বোতলে ভরে বাজারে দিয়ে আসতে পারেন বিক্রির জন্য। খুবই কম টাকায় কলার পাউডার তৈরি হয়ে যায় কিন্তু বাজারে এটি ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কিলো দরে বিক্রি হয়ে যায়।
এক কথায় বলতে গেলে যদি আপনি প্রতিদিন ৫ কিলো কলার পাউডার তৈরি করতে পারেন, তাহলে এখানে ৩,৫০০ টাকা থেকে ৪,৫০০ টাকা পর্যন্ত প্রতিদিন আয় হতে থাকবে।
আর যদি কলার পাউডারের উপকারিতার কথা বলা যায় তাহলে কলার পাউডার যেহেতু শরীরের ব্লাড প্রেসার (BP) কে নিয়ন্ত্রিত করে তাই এর চাহিদা প্রচুর। বাচ্চাদের জন্য এই পাউডার খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাদের শারীরিক বিকাশ, মানসিক বিকাশ এবং শরীরের প্রোটিনের যোগান দিয়ে থাকে এই কলার পাউডার। এছাড়া ত্বকের জন্যও এটি খুবই উপকারী তাই এর চাহিদা বরাবরই ছিল, আছে এবং থাকবে তাই আপনার এই ব্যবসাটি কখনোই মন্দা যাবে না।
এই ইউনিক ব্যবসাটি শুরু করে খুবই কম সময়ের মধ্যে বাজারে আপনার নাম এবং কোম্পানির নাম ছড়িয়ে দিতে পারেন। আর এর চাহিদা দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়তি থাকবে যদি আপনি ভালো করে মার্কেটিং করেন। আপনার আশে পাশে থাকা বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে গিয়ে এগুলি বিক্রি করতে পারেন। তাছাড়া নিজেও কোন ছোট দোকান দিয়ে এগুলি বিক্রি করতে পারেন খুচরা হিসাবে। আবার পাইকারি হিসাবেও অনেকের কাছে দিয়ে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন।