Ambulance Service Business Idea 2024 (অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসা 2024): How to Start Ambulance Service Business in India? | Ambulance Service Business Idea in Bengali | Ambulance Service Business Plan in Bengali. জানুন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসা শুরু করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি এবং লাভ ও ইনভেস্টমেন্ট।
আমাদের দেশে জনসংখ্যার দিনদিন অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেই মতো বৃদ্ধি পাচ্ছে যানবাহনের সংখ্যা, এবং তার সাথে সাথে বিভিন্ন রকমের রোগের মধ্যে দিয়ে মানুষকে যেতে হচ্ছে, একেবারে বিপদকালীন মুখে তড়িঘড়ি তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স এর প্রয়োজন পড়ে।
গাড়ি এক্সিডেন্ট এর হার বেড়েছে দ্বিগুণ মাত্রায়। আর সেই কারণে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস করে আপনি তাদেরকে যেমন দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে পারবেন তেমনি এর মধ্যে দিয়ে বেশ ভালো মত একটা উপার্জন করতে পারবেন।
কেননা এই সময় এক এক সেকেন্ড যেন সবচেয়ে বেশি মূল্যবান হয়ে ওঠে। সেই কারণেই অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস আপনার অধিক পরিমাণে উপার্জনে দেওয়ার সাথে সাথে সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করবে খুব ভালোভাবে। আর তাই বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এর বেশ জনপ্রিয়তা এবং চাহিদা বেড়েছে।
তো চলুন এই অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস আপনি কিভাবে শুরু করবেন।
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস আসলে কি:
যেমন ধরুন যখন কোথাও দুর্ঘটনাবশত আগুন লেগে যায় সবার প্রথমে ফায়ার ব্রিগেড সেখানে পৌঁছে যায়, আগুন নেভানোর কাজ করে থাকে। ঠিক তেমনি সেই আগুনে অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যাওয়া মানুষদের তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা খুবই জরুরী।
আর এই সার্ভিস প্রদান করার বদলে সেই অ্যাম্বুলেন্স মালিক কে অর্থাৎ যিনি সার্ভিস দিয়ে থাকেন তাকে কিছু টাকা দেওয়া হয়। তাদের কাজ হলো এই সমস্ত মানুষদের তড়িঘড়ি হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া। এর ফলে অনেক মানুষের জীবন বেঁচে যায় তাছাড়া এর চাহিদা প্রচুর পরিমাণে বেড়ে চলেছে।
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এর বিজনেস শুরু করার আগে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য:
অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা প্রদান করার আগে সবচেয়ে যেটা জরুরী সেটা হল প্রয়োজন পড়বে একটি অ্যাম্বুলেন্সের। তাছাড়া একের অধিক হতে পারে অর্থাৎ অ্যাম্বুলেন্স এর প্রয়োজনীয়তা দুরকমই হতে পারে যেমন ধরুন:-
১) ইমারজেন্সি অ্যাম্বুলেন্স:
অ্যাম্বুলেন্স এর এমারজেন্সি পরিষেবা অর্থাৎ অ্যাম্বুলেন্স এর গাড়ি কোন মুমূর্ষ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পরিষেবা দিয়ে থাকে যেমন ধরুন কোন দুর্ঘটনা জড়িত মানুষজনকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে তার প্রাথমিক চিকিৎসার জিনিসপত্র মজুত থাকে।
যেমন ধরুন অক্সিজেন সিলিন্ডার, ডিফাইব্রিলেটার, এবং প্রশিক্ষিত প্যারামেডিকেল স্টাপ, অ্যাম্বুলেন্সে উপস্থিত থাকে। যার ফলে এক সেকেন্ডও নস্ট না করে রোগীর চিকিৎসা করা যেতে পারে, এমন পরিষেবা এই অ্যাম্বুলেন্সে থাকে।
২) নন ইমারজেন্সি অ্যাম্বুলেন্স:
এই আম্বুলেন্স বিপদ কালীন সময়ের জন্য নয়, এই আম্বুলেন্স কেবলমাত্র রোগীকে অন্য কোন রোগীর কাছে পৌঁছানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এই অ্যাম্বুলেন্স এ চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সম্বন্ধিত উপকরণ থাকে।
এবার আপনার যোগ্যতা অনুসারে আপনি যেকোন অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা সাথে নিয়ে কাজ করতে পারেন এবং নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তাছাড়া আপনি যদি পারেন তাহলে এই দুই রকম ভাবেই অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দিতে পারেন।
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এর বিজনেস শুরু করবেন কিভাবে:
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এর ব্যবসা এমন একটি ব্যবসা যাতে সরকার থেকে যে নির্দেশগুলি দেওয়া হয় এই ব্যবসা করতে গেলে, সেগুলি আপনাকে সম্পূর্ণ রূপে পালন করতে হবে। কেননা এই ব্যবসা কিন্তু কারো জীবন মরণের সাথে যুক্ত রয়েছে। আর তাই অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসা করার জন্য যে বিষয়গুলির উপরে আপনার খেয়াল রাখতে হবে সেগুলি হল:
স্থানীয় এলাকাতে অ্যাম্বুলেন্স এর চাহিদা:
অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা এবং এর চাহিদা প্রত্যেক সেই জায়গাতে হয়ে থাকে যেখানে লোক বেশি পরিমাণে বসবাস করে থাকেন। কিন্তু এই ব্যবসাটি করার জন্য এটা দেখতে হবে যে যেখানে লোক বেশি পরিমাণে আছে এবং আশেপাশে কোন হাসপাতাল এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেকটাই দূরে এবং যদি আশেপাশে কোন হাসপাতাল থেকেও থাকে তাহলে সেই হাসপাতাল এ একদিনে কতগুলো রোগীর চিকিৎসা করা হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
তারপর এর একটি তালিকা বানিয়ে নিতে হবে। যেহেতু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে প্রদান করা হয় কিন্তু এমন অনেক বার হয় যে ওদের চাহিদা অনুসারে পরিষেবা কম পড়ে যায় আর সেই কারণে বাইরে থেকে অ্যাম্বুলেন্স এর সাথে টাই আপ করতে হয়। আপনি এর সাথেও যেতে পারেন।
অ্যাম্বুলেন্স কেনা:
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এর জন্য প্রথমত আপনাকে অ্যাম্বুলেন্স কিনতে হবে আপনি ভাবতে পারেন যে অ্যাম্বুলেন্স কোথা থেকে কিনবেন আর কত দাম পড়তে পারে, তাইতো? এক্ষেত্রে বলা যায় যে অ্যাম্বুলেন্স কেনার জন্য আপনার কম করে ৭ লাখ টাকা খরচ করতে হতে পারে।
তাছাড়া অ্যাম্বুলেন্স বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হয়ে থাকে। যদি আপনার কাছে বাজেট কম থাকে তাহলে সেকেন্ড হ্যান্ড অ্যাম্বুলেন্স গাড়ি কিনতে পারেন এই অ্যাম্বুলেন্স গাড়ি আপনি খুব কম দামে পেয়ে যাবেন।
ইমারজেন্সি অ্যাম্বুলেন্স এর জন্য কাস্টমাইজড বাহন আপনার প্রয়োজন পরবে। যাতে প্রয়োজনীয় সেবা করার উপকরণ অর্থাৎ চিকিৎসা করার উপকরণ, স্বাস্থ্য কর্মী এবং রোগীকে শোয়ানোর জায়গা পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকতে হবে। এতে আপনি অ্যাম্বুলেন্স বিক্রি করে এমন মানুষের কাছ থেকেও এই অ্যাম্বুলেন্স কিনতে পারেন।
অ্যাম্বুলেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় পারমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন:
যখন আপনি অ্যাম্বুলেন্স কিনবেন, তার জন্য কিন্তু লাইসেন্স এবং পারমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন অবশ্যই প্রয়োজন। এর জন্য অ্যাম্বুলেন্স এর আরসি, ইনসিওরেন্স, পারমিট, ফিটনেস, পলিউশন এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি প্রয়োজন পড়বে।
যেহেতু এটি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি ব্যবসা, তার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্থানীয় প্রাধিকরণ থেকে পারমিশন নিয়ে এই ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে নিতে হবে। তাছাড়া ট্যাক্স রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেওয়া জরুরি। এর জন্য রোড ট্যাক্স ও দিতে হতে পারে।
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসার জন্য হেল্পার এর প্রয়োজনীয়তা:
কেননা এমন অনেক সময় দেখা যায় রোগীর অবস্থা এতটাই গুরতর থাকে যে তাদেরকে ধরে অ্যাম্বুলেন্সে তুলতে হয়। সে ক্ষেত্রে এই ব্যবসাটি শুরু করেন তাহলে সেই রোগীকে ধরে অ্যাম্বুলেন্সে তোলার জন্য আপনার দুই থেকে তিনজন কর্মচারীর প্রয়োজন পড়বে।
এর জন্য তাদেরকে কিছু টাকা বেতন দিতে হবে আপনাকে। এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি। যদি আপনি অ্যাম্বুলেন্স গাড়ি চালাতে না চান তার জন্য আলাদা করে ড্রাইভারও রাখতে হতে পারে।
অ্যাম্বুলেন্সের হাসপাতালের সাথে টাই আপ:
আপনি অ্যাম্বুলেন্স কিনে, তারপর তার লাইসেন্স তৈরি করলেন এবং এরপরে অ্যাম্বুলেন্সকে আপনার নিজস্ব স্থানীয় এলাকায় হাসপাতালের সাথে টাই আপ করতে হবে। আপনি সরকারি অথবা যেকোনো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে অ্যাম্বুলেন্স সেবার টাই আপ করতে পারেন।
এমন নয় যে, আপনি কোন একটি হাসপাতালে সাথে টাই আপ করতে পারবেন। তাছাড়া এক এর থেকেও অনেক বেশি হাসপাতালের সাথে জুড়ে এই অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দিয়ে আপনার ব্যবসাটি করতে পারেন। এছাড়াও সরকারি যোজনা তে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসা করা যেতে পারে। এর জন্য আপনার অ্যাম্বুলেন্স কে সেই যোজনার সাথে রেজিস্টার করতে হবে।
এই যোজনা খুব তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে পারে। আর সরকার এর বদলে আপনাকে ভালোমতো টাকা প্রদান করে থাকে। অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসাতে সফলতার পিছনে হাসপাতাল অথবা চিকিৎসা সংস্থান এর বিশেষ যোগদান থাকে।
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসাতে ইনভেস্টমেন্ট এবং লাভ:
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসা শুরু করতে গেলে প্রথমত সাত থেকে আট লাখ টাকা পর্যন্ত খরচা হতে পারে কিন্তু এই খরচা কেবলমাত্র শুরুতেই আপনার খরচ হবে। একবার মাত্র যখন আপনি শুরুতে অ্যাম্বুলেন্স কিনবেন তখন এই খরচ করতে হবে। মানুষের ভালোমতো সুবিধা প্রদান করতে পারবেন, তবে এই বিজনেসও আপনার প্রতি মাসে লাখের বেশি টাকা উপার্জন করে দেবে।
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসার মার্কেটিং:
যে কোন ব্যবসা করতে গেলে তার মার্কেটিং করাটা বিশেষভাবে প্রয়োজন। কিন্তু এই ব্যবসাটি এমন একটি ব্যবসা, এর মার্কেটিং করার কোন প্রয়োজন নেই। মানুষের কাছে তার আপনজন এবং নিজের স্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যদি কোন রোগ হয়ে থাকে তাহলে তাকে এমার্জেন্সি হিসেবে হাসপাতালে পৌঁছে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন পড়বে।
তবে আপনার অ্যাম্বুলেন্সটি কোন কোন হাসপাতালে সাথে টাই আপ করা আছে এগুলি মানুষকে বলতে হবে আপনাকে। সেটা আপনি কিভাবে বলবেন আপনি ঠিক করে নিতে পারেন।
তো এইভাবে আপনার নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যবসা খুব সহজেই শুরু করতে পারেন এবং ভালোমতো উপার্জন করতে পারবেন। এই ব্যবসার মধ্যে দিয়ে আপনি ভালোমতো একটা ইনকাম তো করতে পারবেনই, তার সাথে সাথে মানবতার পরিচয় দিয়ে মানুষের মনের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিতে পারবেন অনায়াসেই। কারো জীবন বাঁচাতে পেরে আপনারও ভালো লাগবে অনেকাংশে।