Aeroponic Potato Farming Business Idea in Bengali – এরোপনিক আলু চাষের ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? এরোপনিক ফার্মিং কি? এরোপনিক আলু চাষের ব্যবসায় কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু এরোপনিক আলু চাষের ব্যবসা সম্পর্কে।
আমাদের রান্নাঘরে আরো অন্যান্য সবজির পাশাপাশি আলু একটি প্রয়োজনীয় সবজি। সবকিছু না থাকলেও কিন্তু চলে যায় আর এই আলু না থাকলে যেন রান্নাটাই সম্পূর্ণ হয় না। যতই দাম বাড়ুক না কেন আলু আমাদের রান্নাঘরে অবশ্যই প্রয়োজন পড়ে। বাজারেও এই আলুর চাহিদা প্রচুর। অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে তাই অনেকেই অনেকটা করে আলু কিনে সংরক্ষণও করে রাখেন।
ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আলু চাষ করতে দেখা যায়, তবে অনেকের কাছেই হয়তো এই আলু চাষ করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জমি অথবা জায়গা থাকে না। বেশ চাহিদা সম্পন্ন এবং লাভ দায়ক এই আলু চাষ ও ব্যবসা অনেকেই করতে চাইলেও জায়গার অভাবে করতে পারেন না। তবে আজকে এমন এক আলু চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে জানব আমরা যার ফলে কোন জমি অথবা জায়গা না থাকলেও আলু চাষ করতে পারবেন।
ছোটখাটো কোন ব্যবসার আইডিয়া যদি মাথায় ঘুরে থাকে তাহলে এই পদ্ধতিতে আরো চাষ করে বাজারে যোগান দিয়ে বেশ ভালো উপার্জন করতে পারবেন। যাঁরা চাষাবাদ করে থাকেন সেই সমস্ত কৃষকদের উদ্দেশ্য এই ব্যবসাটি বেশ লাভ দায়ক হবে, যাঁদের কাছে অনেকটা ক্ষেত অথবা জমি নেই।
কৃষকরা এখন এরোপনিক টেকনিক (Aeroponic Technique) এর মাধ্যমে আলু চাষ করতে পারবেন খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে। দারুন ফসল উৎপাদন করা যেতে পারে আর এর মধ্যে দিয়ে মোটা টাকা উপার্জন করা যেতে পারে। তবে ভয়ের কিছু নেই এই পদ্ধতিতে আলু চাষ করলে উৎপাদন ১০ গুন পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।
এরোপনিক টেকনিক অবলম্বন করে আলু চাষ:
জমিতে আলুর চাষ দেশের বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাওয়া গেলেও বর্তমানে এরোপনিক টেকনিক (Aeroponic Technique) অবলম্বন করে আলু চাষ করে লাভবান হয়েছেন অনেক কৃষক। সাধারণত মাটিতে আলু রোপন করে তা থেকে আলো উৎপাদন করা হয়ে থাকে। তবে এই পদ্ধতিতে আলু চাষ হাওয়াতে অর্থাৎ শূন্যে করতে পারেন। এই পদ্ধতিকে এরোপনিক ফার্মিং (Aeroponic Farming) বলা হয়।
স্বাভাবিকভাবে যে আলু চাষ করা হয় তার তুলনায় ১০ গুণ পর্যন্ত বেশি উৎপাদন করা যেতে পারে এই পদ্ধতিতে। জানা যায় হরিয়ানা সরকার কর্নেল জেলাতে এই ধরনের আলু চাষ করার কেন্দ্র তৈরি করেছে।
এই পদ্ধতিতে আলু চাষ করার জন্য কৃষকদের বেতন দেওয়া হয়েছে, আর এই পদ্ধতিতে আলু চাষ করার জন্য নার্সারিতে আলুর চারা তৈরি করতে হয়। তার সাথে সাথে আলুর চারা রোপন করার জন্য এরোপনিক ইউনিট অনুসারে কাজ করতে হয়।
চলুন জানা যাক এরোপনিক ফার্মিং কি?
আলুর উন্নত মানের চারা নার্সারিতে তৈরি করা হয় এবং সেই চারা গার্ডেনিং ইউনিট এ যোগান দেওয়া হয়। এরপর এই গাছের গোড়া কীটনাশক তরলের মধ্যে ডোবানো হয় যাতে এই গাছের গোড়াতে কোনরকম ছত্রাক না ধরে।
এরপর কোন উঁচু জায়গায় আলুর চারা গুলি রোপন করার জন্য বেড তৈরি করা হয়। সেখানে কিছু জায়গা ছেড়ে ছেড়ে ছিদ্র থাকে সেই ছিদ্রতে আলুর চারা গুলির ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তবে অবশ্যই গাছ উপরের দিকে থাকে। এবার ১০ থেকে ১৫ দিন হয়ে যাওয়ার পর নিচে ঝুলতে থাকা সেই গাছের শিকড় থেকে আলুর উৎপাদন শুরু হতে থাকে।
আর লক্ষ্য করা যায় যে এই পদ্ধতিতে আলু চাষ করলে আলুর অধিক ফলন হয়। ভারতের তুলনায় আরো অন্যান্য দেশে এই টেকনিক অবলম্বন করে আলু চাষের চাহিদা প্রচুর রয়েছে।
এই পদ্ধতিতে আলু চাষ করার খরচ?
নার্সারী থেকে উন্নত মানের আলুর চারা তৈরি করতে এবং হাওয়াতে আলু চারা রোপন করতে বেড তৈরি করতে যে খরচ পড়ে সেই খরচ বাবদ, গাছে পুষ্টি যোগানোর জন্য যে স্প্রে করতে হয় সেই খরচটাই প্রয়োজন পড়ে। তাই বলা যেতে পারে যদি কম টাকা বিনিয়োগ করতে চান তাহলে ১০ ,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারেন। আর যদি মনে করেন যে বড় আকারে ব্যবসাটি করবেন তাহলে আপনার সাধ্যমত বিনিয়োগের মাত্রা বাড়াতে পারেন।
ঝুলন্ত অবস্থায় কিভাবে গাছের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়?
যেহেতু গাছ শূন্যে ঝুলতে থাকে কোন মাটি ছাড়াই নিচে শিকড় ঝুলে থাকে। তাড়াতাড়ি আলুর ফলন হয় সেই কারণে গাছের শিকড় কিন্তু নিচে ঝুলতে থাকে আর এখান থেকেই গাছ তার পর্যাপ্ত পুষ্টি পেয়ে থাকে, কেননা এই গাছের শিকড়েই বাইরে থেকে পুষ্টির যোগান দেওয়া হয় কারণ মাটি ও ক্ষেত এর প্রয়োজন পড়ে না তাই এই বাইরে থেকে দেওয়া পুষ্টি থেকেই আলু উৎপাদিত হয়।
আর এই কারণেই আলুর ফলন ১০ গুন বেড়ে যায়। তার পাশাপাশি খরচও কম হয়। দারুণ ফলন হওয়ার কারণে বেশ ভালো টাকায় আপনি বিক্রি করতে পারবেন আর খুব কম টাকা বিনিয়োগ করে যেহেতু ব্যবসাটি করা হচ্ছে তাই অনেকটাই লাভ রাখা যেতে পারে।
চাষাবাদের বিভিন্ন ধরনের টেকনিক দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই যদি নিজের কাছে কোন জমি বা ক্ষেত না থাকে তাহলেও চাষাবাদ করেও নিজেদের খাবারের চাহিদা মেটানো যেতে পারে অথবা ব্যবসা করে ভালো উপার্জন করা যেতে পারে। আলু এমন একটি খাদ্য উপাদান যা প্রতিটি ঘরে প্রয়োজন পড়ে।
বলা যেতে পারে অন্যান্য কোন সবজি এর সাথে আলু না হলে যেন চলেই না। আর এই পদ্ধতি অবলম্বন করে খুবই কম খরচে আলু চাষ করে ১০ গুণ ফলন বাড়িয়ে বিক্রি করা যেতে পারে স্থানীয় বাজারে, দোকানে তার সাথে বাড়ির আলুর চাহিদাও মেটানো যেতে পারে অনায়াসেই।