Banana Tree Business Idea in Bengali – কলা গাছের বাকল ব্যবসা কি? শুরু করবেন কিভাবে? কলা গাছের বাকল ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু কলা গাছের বাকল ব্যবসা সম্পর্কে।
আমাদের দেশের কৃষকরা বিভিন্ন ফসল ফলানোর পাশাপাশি ফলের চাষও করে থাকেন। এমন অনেক কৃষক রয়েছেন যাঁরা বড় বাগানে কলাগাছ রোপন করে কলার ব্যবসা করে থাকেন। পাকা কলা মানব শরীরের তাড়াতাড়ি এনার্জি আনার পাশাপাশি খিদে মিটিয়ে থাকে, আর শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ বজায় রাখে। তাইতো বাচ্চা থেকে বড় সকলেরই এই কলা খুবই পছন্দের।
তবে এখানে একটা কথা খুবই বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য যে, যে কলা গাছ থেকে যখন একবার কলা কেটে নেয়া হবে, তখন সেই গাছের আর কোন প্রয়োজন থাকে না, অনেক সময় সেই বাগানে কলা গাছ ফেলে রাখা হয় যা সেই বাগানের মাটিকে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে।
এমনকি সেই মাটিকে অনুর্বর করে তুলতেও পারে পড়ে থাকা কলাগাছ। এমন পরিস্থিতিতে কলা কেটে নেওয়ার পরে কলা গাছকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস হিসেবে ফেলে রাখা হয়। তবে এ থেকেও যে একটি বড় ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে তা হয়তো অনেকেরই ধারণা নেই।
এই কলা গাছের ছাল অথবা বাকল বিক্রি করেও উপার্জন করা যেতে পারে প্রচুর টাকা। আর এটি ব্যবহার করা হয় জৈবিক সার হিসেবে। অপ্রয়োজনীয় পড়ে থাকা এই জিনিসটি দিয়ে কৃষক আলাদাভাবে উপার্জন করতে পারবেন প্রচুর টাকা।
কলা গাছের বাকল (ছাল) বিক্রি করে উপার্জন করুন
বর্তমান সময়ে শিক্ষিত এবং চাকরিজীবী মানুষেরাও কিন্তু বাগান বাড়ি করতে ভীষণ পছন্দ করেন। নিজের হাতে রোপন করা কোন চারা গাছ যখন চোখের সামনে বড় হয়, ফুল দেয়, ফল দেয় তখন সেটি সবথেকে আনন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সেই কারণে এখন চাষ আবাদের দিকে প্রবণতা বাড়ছে।
বিভিন্ন নতুন নতুন টেকনিক অবলম্বন করে সুন্দর ফলন ফলিয়ে ব্যবসা করছেন বহু মানুষ। বর্তমান কাজের পাশাপাশি এই ব্যবসা গুলি উপার্জন এনে দিচ্ছে, যা বছরে প্রচুর টাকা লাভ হয়ে থাকে।
যদি আপনিও আপনার দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি চাষ করে সুন্দর একটি উপার্জনের রাস্তা তৈরি করতে পারেন, তাহলে বলা যেতে পারে এই ব্যবসা টি আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে, তাও আবার দু’রকম ভাবে ব্যবসা করতে পারবেন।
যেহেতু এই ব্যবসাটি কলার গাছের বাকল এর ব্যবসা তাই যখন কলা কেটে নেওয়া হবে সেটি বিক্রি করে উপার্জন করতে পারবেন। আবার সেই পড়ে থাকা গাছ দিয়েও উপার্জন করতে পারবেন। ব্যবসাটি হল কলা গাছের বাকল থেকে তৈরি হওয়া জৈবিক সার, যা এনে দেবে বাম্পার উপার্জন। তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এই ব্যবসা সম্পর্কে:
কলা গাছের বাকল থেকে জৈবিক সার তৈরি করবেন কিভাবে ?
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে কলাগাছের এই বাকল থেকে জৈবিক সার উৎপাদন করার জন্য সবার প্রথমে একটি গর্ত খনন করতে হবে। যেখানে অপ্রয়োজনীয় কলা গাছ কেটে এই গর্তের মধ্যে রাখতে হবে। তারপর গোবর ও গাছের শুকনো পাতা দিতে হবে, এরপর ড্রিঙ্ক প্রজার ছড়িয়ে দিতে হবে।
কিছুদিনের মধ্যে এই সার গাছের জৈবিক সার হিসেবে তৈরি হয়ে যাবে। আর এই সার ব্যবহার করে কৃষক তাঁদের ফসলের ফলন দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়াতে পারবেন। জমিতে খুবই কম রাসায়নিক সার ব্যবহার করার মধ্যে দিয়ে ফসল ফলালে তা পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকবে আর বাজারে এর চাহিদা হবে প্রচুর। আর এইভাবে জৈবিক স্যার বানানোর জন্য সরকার থেকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে। যে ক্ষতিকর রাসায়নিকের তুলনায় এইভাবে জৈবিক সার তৈরি করলে যা গাছের জন্য খুবই উপযুক্ত এর পাশাপাশি কৃষকদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়ে থাকে এই জৈবিক সার তৈরি করার জন্য।
এই জৈবিক সার তৈরি করার পর সেটি জমিতে ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়, এরপরে সমস্ত রকম ফসল এর ফলন খুবই বাম্পার হয়। এর পাশাপাশি সকল মানুষ রাসায়নিক মুক্ত সবজি পাবেন আর এর ফলে বিভিন্ন রকমের অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে থাকা যাবে।
কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে?
বিনিয়োগের কথা বলতে গেলে এখানে খুবই কম একেবারে সামান্য পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন যেহেতু কলা গাছ রোপন করার পর কলা বিক্রি করে আলাদাভাবে উপার্জন করতে পারছেন, তার পাশাপাশি এই অপ্রয়োজনীয় কলা গাছ যেগুলি কেটে ফেলা হয় এবং জমিতে ফেলে রাখা হয় সেই কলা গাছ গুলিকে কোন একটি বড় গর্তে পচানোর জন্য ফেলে রাখা হয়।
তবে হাতে শুধুমাত্র ১,০০০ টাকা নিয়েও শুরু করতে পারেন এই ব্যবসাটি। যা প্রতিটির কৃষকের খুবই প্রয়োজনীয় এই জৈবিক সার, প্রতিটি গাছের জন্য অমৃত বলা যায়। একটু পরিশ্রম আর কৃষকদের কাছে গিয়ে আপনার তৈরি করা জৈব সারের কথা প্রচার করতে পারলেই এই ব্যবসাটি রমরমিয়ে চলবে।
এই ব্যাবসায় উপার্জন কত হবে?
উপার্জনের কথা বলতে গেলে খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে অনেক টাকা উপার্জন করার একটি পন্থা বলা যেতে পারে এই ব্যবসাটি। প্রতিটি কৃষক চাইবেন তাঁর ফলানো ফসল যেন খুবই ভালো হয়, আর বাজারে তার ভালো দাম পাওয়া যায়, আর গ্রাহকেরা খুবই পছন্দ করেন।
সেই কারণে এই জৈবিক সার যদি কৃষকদের মধ্যে আপনি অল্প টাকায় বিক্রি করতে পারেন তা তাঁদের কাছে অনেক পাওয়া হবে। প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকায় এই অপ্রয়োজনীয় পড়ে থাকা কলা গাছ থেকে উপার্জন করতে পারবেন আলাদাভাবে। তাহলে আর দেরি কেন জমিতে পড়ে থাকা এই কলাগাছ গুলিকে তুলে শুরু করুন নতুন করে ব্যবসা।
ব্যবসা করার ক্ষেত্রে অনেক রকম পথ রয়েছে, তবে একটু বুদ্ধি ও পরিশ্রম থাকলে একটি ব্যবসার মধ্যে থেকে আরও অনেক গুলি ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বলা যেতে পারে এক খরচের দুই তিন রকম ভাবে লাভ ও উপার্জন আসতে পারে। কলা গাছের এই ব্যবসাটি তেমনি একটি ব্যবসা।
দুই রকম ভাবে ব্যবসা করতে পারবেন, উপার্জন করতে পারবেন প্রতিমাসে প্রচুর টাকা। তারপর নিজে যদি কৃষক হয়ে থাকেন আরো অন্যান্য ফসল ফলানোর ক্ষেত্রেও জৈবিক সারের চাহিদা মেটাতে পারবেন নিজে থেকে আর আশেপাশের সকল কৃষকদের জৈবিক সারের চাহিদাও পূরণ করতে পারবেন আপনি।