2024 Top 5 Cottage Industry Business Ideas in Bengali – 2024 বছরের দারুন কিছু কুটির শিল্পের ব্যবসা বাড়িতে বসেই রোজগার করুন লক্ষ টাকা।
বিভিন্ন রকমের ব্যবসার কথা আগে তো অনেক শুনেছেন। সে ব্যবসাটি বড় রূপে হোক অথবা ছোট রূপে, সেটা লঘু উদ্যোগ হোক অথবা বড় উদ্যোগ, যে নামেই চিনে থাকুন না কেন, তবে আপনি কি জানেন এমন কিছু উদ্যোগ আছে যেগুলো খুব কম টাকা ইনভেস্ট করে আপনি নিজেই নিজের ঘরে থেকে অথবা দোকান ভাড়া নিয়ে পরিবারের সাথে মিলে ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন! আর এরকম উদ্যোগকে এককথায় কুটিরশিল্প বলতে পারেন।
এটা যতই কুঠির হোক না কেন যতই আপনি ঘর থেকেই শুরু করেন না কেন ১০ হাজার থেকে এক লাখ পর্যন্ত প্রতিমসে উপার্জন করা সম্ভব। এর জন্য সবচেয়ে যেটা জরুরী সেটা হল সঠিক কুটির শিল্প নির্বাচন করা এবং খুব ভালোভাবে বুঝে শুনে সেই ব্যবসাটি শুরু করতে হবে।
কুটির শিল্প ব্যবসার আইডিয়া:
কুটির শিল্পের মধ্যে অনেক রকম কাজ আছে, যেটা আপনার পছন্দ অথবা আপনি যেটা করতে ভীষণ পছন্দ করেন সেটা নিয়েই শুরু করতে পারেন।
১) মাটির জিনিসপত্র তৈরি কুটির শিল্পের ব্যবসা:
যেখান থেকে প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্র এর ব্যবহার শুরু হয়েছে আর সেখান থেকে কিন্তু মাটির তৈরি জিনিসপত্রের ব্যবহারও বেশ ব্যাপকমাত্রায় জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যেমন ধরুন মাটির তৈরি কলসি, বড় ঘড়া, রান্নার হাঁড়ি, কড়াই, খাবার পাত্র, আরো অন্যান্য জিনিসপত্র।
তার সাথে ঘর সাজানোর শোপিস তো রয়েছেই। তার সাথে সাথে মাটির তৈরি মূর্তি এখন বেশ জনপ্রিয়। এরকম জিনিস বানাতে পারেন এই ব্যবসাতে। আপনার বেশী কিছু ইনভেস্ট করতে হবে না আর উপার্জন হবে অধিক পরিমাণে।
২) শাড়ি অথবা কাপড়ের ডিজাইনিং এর ব্যবসা:
বর্তমানে বিভিন্ন রকমের ডিজাইনের শাড়ি মার্কেটে দেখতে পাওয়া যায়। নিত্য নতুন ডিজাইন দেখেই শাড়ি কিনতে পছন্দ করেন গ্রাহকরা। আর সেই কারণে শাড়ির উপরে বিভিন্ন রকমের কারুকার্য করা ডিজাইন নজর কাড়তে পারে গ্রাহকদের। আর সেই কাজগুলো কিন্তু অনেকেই করে ভালোমতো উপার্জন করছেন।
তবে শুধুমাত্র যে শাড়ির উপরেই আপনি এমন কাজ করতে পারবেন তা কিন্তু নয়, যেমন ধরুন কুর্তি, চুরিদার, ব্যাগ, টপ, আরো অন্যান্য কাপড়ের উপরে এরকম ডিজাইনিং এর কাজ করে সেগুলি বাজারে বিক্রি করতে পারেন।
যখন আপনি প্রথম প্রথম এরকম কাজ করবেন, তখন একটু ছোট আকারে শুরু করতে পারেন। আর আপনার আশেপাশে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব তাদের মধ্যে এগুলো বিক্রি করার চেষ্টা করুন। তার সাথে সাথে অন্যান্য গ্রাহকদেরও আকর্ষিত করতে হবে, আপনার ব্যবসার দিকে।
তবে তো আপনি লাভটা বেশি পরিমাণে পেতে পারেন। আর এক্ষেত্রে আপনাকে বেশি কষ্ট করতেও হবে না। কেননা আলাদা আলাদা ডিজাইনের শাড়ি হোক অথবা কুর্তি, চুড়িদার হোক অথবা টপ সবাই কিন্তু পরতে ভীষন পছন্দ করেন।
৩) দুধ দেবে এমন পশুদের পালন করার ব্যাবসা:
কুটির শিল্পের মধ্যে এই ব্যবসাটা একটি ভালো ব্যবসা। এটিও আপনি ঘর থেকেই শুরু করতে পারেন, যেমন ধরুন গরু, ছাগল, মহিষ, এদেরকে ঘরে পালন করে তা থেকে একরকম ডেয়ারি ফার্ম তৈরি করতে পারেন।
প্রতিদিন দুধের চাহিদা প্রচুর পরিমাণে আর এই ব্যবসাটি লাভ দায়কও বটে। এখন জার্সি গরু প্রচুর পরিমাণে দুধ দিয়ে থাকে। একটি জার্সি গরু কিনে তা দিয়েও এ ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনি আপনার পরিবারের সদস্যদের সাহায্য নিতে পারেন, আর যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে দুজন কর্মচারী ও রাখতে পারেন, এমন পশুদের দেখভাল করার জন্য। বর্তমান সময়ে এমন হয়ে গেছে যে খাঁটি দুধ পাওয়া একেবারে ভাগ্যের ব্যাপার।
এমন পরিস্থিতিতে আপনি যদি খাঁটি দুধের ডেয়ারি ফার্ম করেন, একবার ভেবে দেখুন ব্যবসাটি কেমন ভাবে চলবে। দাম দিয়ে হলেও খাঁটি জিনিস খেতে সকলেরই ভালো লাগবে, কি তাইনা!
৪) হোস্টেল স্টুডেন্টদের জন্য সার্ভিসের ব্যাবসা:
যে সব স্টুডেন্টরা ঘর থেকে অনেকটা দূরে হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে থাকেন, তাদের অনেক রকম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। একদিকে যেমন পড়াশোনা করার জন্য হোটেলে তো থাকতেই হয়, তার উপরে রান্না করা এবং সমস্ত কাজ নিজেদেরই করতে হয়। তার ফলে পড়াশোনায় বেশ খারাপ প্রভাব পড়ে।
আপনি কিন্তু হোস্টেলের স্টুডেন্টদের জন্য বিভিন্ন রকমের সহযোগিতা দিয়ে তাদেরকে চিন্তামুক্ত করতে পারেন। তার সাথে সাথে উপার্জন তো বেশ ভালই।
যেমন ধরুন তাদের জন্য টিফিন সার্ভিস, তাদের কাপড় ধোয়ার কাজ এবং হোস্টেল রুমগুলি ভালো করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, আর তাদের অন্যান্য সুযোগ সুবিধাগুলি দেখা।
তবে এই কাজগুলি আপনি কর্মচারী দিয়ে করাতে পারেন, এর জন্য স্টুডেন্ট গুলো আপনাকে বেশ ভালো মত একটা টাকা দেবে প্রতিমাসে, তা থেকেও কিন্তু কর্মচারীদের কমিশন দিয়ে আপনি তার লাভ রাখতে পারেন।
৫) উৎসবের কুটির শিল্পের ব্যবসা:
উৎসবের কথা বলতে আমাদের দেশ তো সবার আগে। আমাদের দেশে প্রতি মাসে যে কোনো না যেকোনো একটা উৎসব লেগেই রয়েছে। আর এই সমস্ত উৎসবের জন্য অনেক কিছু জিনিসপত্রের প্রয়োজন হয়। আর এই সমস্ত জিনিসপত্রতে অনেক খরচাও হয়। কিন্তু এই উৎসবে আপনি অনেক লাভ করতে পারেন।
এর জন্য আপনাকে উৎসব অনুসারে যে সমস্ত জিনিসপত্র এর প্রয়োজন হয় সেই সমস্ত জিনিসপত্রের একটি কুটির শিল্প তৈরি করতে পারেন।
যেমন ধরুন দীপাবলীর সময় যে সমস্ত প্রদীপ লাগে অথবা আরো যে জিনিস গুলো লাগে সেগুলো তৈরি করে রাখা, হোলিতে বিভিন্ন রকমের রং, আবির, রাখি বন্ধন এর সময় রাখি তৈরি করে রাখা, আরো অন্যান্য উৎসব রয়েছে তাতে এতটা পরিমাণ জিনিসপত্রের প্রয়োজন হয় যেগুলি আপনি গুণে শেষ করতে পারবেন না।
আপনার যেটা পছন্দ হয় অথবা যদি একসাথে অনেকগুলো করতে পারেন তাহলে প্রতিটি উৎসবের জন্য জিনিসপত্রগুলি কুটিরশিল্প রূপে তৈরি করে রাখতে পারেন। আর উৎসব আসতেই এগুলি মার্কেটে ছেড়ে দেখবেন আপনার জিনিসপত্রগুলি সবার আগে বিক্রি হয়ে যাবে। তা থেকে ভালো মত একটা উপার্জন করতে পারবেন।
এমন অনেক কুটির শিল্প আছে যা কিনা অল্প ইনভেস্টমেন্ট করে প্রচুর পরিমাণে উপার্জন করা যায়। এমনভাবে ঘর থেকে একেবারে খুবই অল্প পরিসরে অল্প খরচ করে লাভ দায়ক এই ব্যবসা গুলো শুরু করতে পারেন। সারাবছর কিছু-না-কিছু কুটির শিল্পের মাধ্যমে আপনি যদি প্রতিমাসে কাজ করে যান, তাহলে কম করে কুড়ি থেকে ত্রিশ হাজার টাকা প্রতিমাসে উপার্জন করতে পারবেন।