Camphor Making Business Idea 2024 (কর্পূর তৈরির ব্যবসা 2024): জানুন কর্পূর তৈরির ব্যবসা শুরু করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি এবং লাভ ও ইনভেস্টমেন্ট। How to Start Camphor Making in India? | Camphor Making Business Idea in Bengali | Camphor Making Business Plan in Bengali.
কর্পূর তো সবাই কমবেশি চেনেন। ভারতীয় সংস্কৃতিতে কর্পূরের ধার্মিক মাহাত্ম্য কতখানি তা নতুন করে বলে দিতে হবে না। এটি একটি ক্রিষ্টাল জাতীয় পদার্থ যাতে একটি বিশেষ রকমের গন্ধ রয়েছে।
এটাকে কমফোর লোরেল নামক এক ধরনের গাছ থেকে পাওয়া যায়। কমফোর এর গাছ সাধারণত চীন, ভারত, মঙ্গোলিয়া, জাপান ইত্যাদি দেশে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই গাছ অথবা এই জাতীয় অন্য প্রজাতির গাছের কাঠ থেকে কর্পূর পাওয়া যায়।
এর ব্যবহার বলতে গেলে প্রত্যেক ঘরে করা হয়ে থাকে। আর তাই এই ব্যবসাটি যদি আপনি করতে পারেন অর্থাৎ কর্পূর ম্যানুফ্যাকচারিং যদি করতে পারেন, ছোট রকম উদ্যোগ নিয়ে তাহলে এর থেকে ভালো মত একটা উপার্জন আপনি করতে পারবেন অনায়াসেই। তো চলুন তাহলে জানা যাক কিভাবে আপনি এই কর্পূর বানানোর ব্যবসাটি শুরু করবেন।
কর্পূর বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী:
কর্পূর বানানোর জন্য কেবল মাত্র একটাই কাঁচামাল প্রয়োজন পড়বে আপনার। আর সেটা হল কমফোর পাউডার। এটা কে আপনি কর্পূর পাউডারও বলতে পারেন, যেহেতু কমফোর ইংরেজি কথা। এই পাউডার আর কর্পূর মেকিং মেশিন থেকে কর্পূর ট্যাবলেট বানানো হয়ে থাকে।
কর্পূর বানানোর সামগ্রী কোথায় থেকে কিনবেন:
কর্পূর পাউডার সাধারণত হোলসেল মার্কেট এ আপনি অনায়াসেই পেয়ে যাবেন। যেখান থেকে আপনি খুবই কম দামে কর্পূর পাউডার কিনতে পারবেন। তাছাড়া অনলাইনের মাধ্যমেও আপনি কিনতে পারেন। কেননা অনলাইনেও ভালোভাবে আপনি পেয়ে যাবেন। তার জন্য নিচে দেওয়া লিংকে আপনি ভিজিট করে অর্ডার করতে পারেন।
Camphor Powder | Check here |
কর্পূর বানানোর মেশিন:
কর্পূর ট্যাবলেট বানানোর জন্য আপনার একটি অটোমেটিক মেশিন এর প্রয়োজন হবে। যেটাকে কামফোর মেকিং মেশিন ও বলা হয়ে থাকে। এই মেশিনের মধ্যে থেকে কর্পূর ট্যাবলেট হিসেবে তৈরি হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে।
এই মেশিনের সবথেকে ভালো দিক হলো এই মেশিনের সাহায্যে বিভিন্ন রকমের সাইজের ট্যাবলেট আপনি বানাতে পারবেন। তাছাড়া কিউব, ছোট এবং বড় সাইজের কর্পূর বানানো এই একটা মেশিনের মাধ্যমে আপনি অনায়াসেই করতে পারবেন।
মেশিনের সাথে লাগানো ডাই এই সুবিধা দিয়ে থাকে। এই ডাই এডজাস্ট করার পর কর্পূর কে আলাদা আলাদা আকার দেওয়া হয়। সব থেকে ভালো বিষয় হল সাধারণত বাজারে বিক্রি হওয়া কর্পূর এর সাইজ দেখার পর আপনি সেই সাইজ অনুযায়ী বানাতে পারেন।
কর্পূর বানানোর মেশিন কোথায় কিনবেন:
কর্পূর বানানোর এই মেশিন বড় কোন হার্ডওয়ারের দোকানে আপনি পেতে পারেন। তাছাড়া অনলাইনে তো এভেলেবেল আছেই, আর তাই অনলাইনের মাধ্যমেও উপরে দেওয়া লিংকের মাধ্যমে এই কর্পূর বানানোর মেশিন আপনি অর্ডার করতে পারেন।
কর্পূর বানানোর ব্যবসাতে টাকার বিনিয়োগ:
মেশিন এবং র মেটেরিয়াল হিসাব করে ইনভেস্টমেন্টের পরিমাণটা বোঝা যাবে। যেমন ধরুন কর্পূর পাউডারের দাম ৪২৫ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম হয়ে থাকে, কিন্তু যদি আপনি হোলসেল মার্কেট থেকে কিনে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে ৩০০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম আপনি পেয়ে যেতে পারেন।
কর্পূর বানানোর মেশিনের দাম ৫৫ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। তার উপরে বিভিন্ন রকমের দামের মেশিন আপনি পেতে পারেন। যদি আপনি খুবই ছোট স্তর থেকে ব্যবসাটি শুরু করতে চান, তাহলে ৫৫ হাজার টাকার মেশিন আপনার জন্য ভালো থাকবে।
এমনভাবে কর্পূর বানানোর এই ব্যবসাতে কাঁচামাল সামগ্রী এবং মেশিন এবং প্যাকেজিং সবকিছু মিলিয়ে মোট যে ইনভেস্টমেন্ট আপনার লাগবে সেটা ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা হলেই হয়ে যাবে। আর এই বিজনেস শুরু করার জন্য আপনার ১০০০ স্কয়ার ফিটের জায়গা অবশ্যই প্রয়োজন পড়বে। যেখান থেকেই ব্যবসাটি আপনি অনায়াসেই শুরু করতে পারেন।
কর্পূর বানানোর প্রক্রিয়া:
কর্পূর বানানোর প্রক্রিয়া একেবারে সহজ সরল যেমন ধরুন মেশিন যে কোন মানুষ নিয়ন্ত্রিত করতে পারবেন। আর এই মেশিন বাইরে থেকে মোটরের সাথে জোড়া থাকে।
যা কিনা সবসময় চলতে থাকে। এই মেশিনে এমন একটা জায়গা বানানো আছে যেখানে কর্পূর পাউডার দিতে হবে। আর কর্পূর পাউডার দেওয়ার সময় এর মাত্রা কিন্তু ঠিক রাখতে হবে অর্থাৎ পরিমাণের দিকটা খেয়াল রাখাটা জরুরি।
কর্পূর পাউডার দেওয়ার জায়গাতে ধীরে ধীরে পাউডার ঢালতে হবে। এই পাউডার থেকে কর্পূর ট্যাবলেট তৈরি হয় যাবে খুবই সহজে। যতক্ষণ পর্যন্ত মেশিন চলতে থাকবে ততক্ষণ কর্পূর একটা আকার নিয়ে তৈরি হয়ে বের হতে শুরু করে দেবে।
কর্পূর এর প্যাকেজিং:
প্রতিটা জিনিস মার্কেটে বিক্রি করার জন্য ভালোমতো প্যাকেজিং এর প্রয়োজন হয়। সেটা তো আমরা সবাই কমবেশি জানি। আর তাই কর্পূর বিশেষ গন্ধ যুক্ত হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ভালোভাবে প্যাকেজিং করাটা জরুরি।
বিক্রি করার জন্য কোন প্যাকেজিং এর দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে আপনাকে, মার্কেটের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে এর প্যাকেট বানাতে হবে। একদম ছোট আকারের প্যাকেট থেকে শুরু করে আপনি বড় আকারের প্যাকেট পর্যন্ত বানাতে পারেন। সবথেকে ছোট আকারের প্যাকেটে তিন থেকে চারটি কর্পূর ট্যাবলেট থাকে।
এই প্যাকেটে দুই টাকা প্রতি প্যাকেট হিসেবে বিক্রি হয়। আর এই ছোট ছোট প্যাকেট মিলিয়ে একটি বড় প্যাকেট ও বানাতে পারেন। যেটা দোকানে চলে যায় বিক্রি হওয়ার জন্য। এমনভাবে প্রয়োজনীয় সংখ্যায় আপনি ছোট ছোট প্যাকেট এর একটি বড় প্যাক বানিয়ে বাজারে হোলসেল হিসাবে বিক্রি করতে পারেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্যাকেজিং এর আগে তৈরি হওয়া কর্পূর কে একটি এয়ারটাইট কন্টেইনার এ রাখতে হবে। কেননা কর্পূর হলো এমন একটি জিনিস, যা কিন্তু খুবই তাড়াতাড়ি বাষ্পীভূত হয়ে যায়। আর তাই এগুলোকে হাওয়া বাতাস লাগানো যায় না। যখন কেউ ব্যাবহার করবেন তখন কথাটা আলাদা। তবে যখন আপনি প্যাকেজিং করবেন তার আগে যেন বাষ্পীভূত না হয়ে যায়।
কর্পূর বানানোর ব্যবসা তে মার্কেটিং:
কর্পূর এমন একটি জিনিস যা কিনা দেশের প্রতিটি ঘরে যেকোনো না যেকোনো ভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। আর এটি বেশি পরিমাণে ব্যবহার করা হয় পূজা-অর্চনা তে, ও আরতী হোম ইত্যাদি সময়ে এই কর্পূর এর ব্যবহার সবথেকে শুভ বলে মনে করা হয়।
আর এর সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় পূজা অর্চনা জড়িত জিনিসপত্র বিক্রি হওয়ার মার্কেটে। এমনভাবে দেশের বড় বড় ধার্মিক জায়গাতে পূজা-অর্চনার জিনিসপত্র বিক্রি হওয়া মার্কেটে এই কর্পূর আপনি বিক্রি করতে পারবেন।
তাছাড়া আপনার আশেপাশে পূজা পার্বণ সবসময়ের জন্য হয় এমন কোন জায়গাতে মন্দিরে এবং মন্দিরের আশেপাশে পূজা সামগ্রী বিক্রি হওয়া দোকানে আপনার বানানো কর্পূর হোলসেল অথবা রিটেল দু রকম ভাবে বিক্রি করতে পারেন।
কর্পূর বানানোর ব্যবসার জন্য লাইসেন্স:
এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য অন্যান্য ব্যবসার মতো লোকাল অথরিটি থেকে লাইসেন্স নেওয়া কিন্তু অবশ্যই প্রয়োজন। কেননা লাইসেন্স তৈরি করা কিন্তু একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই স্থানীয় অথরিটি থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু করতে পারেন। লিখিত অনুমতি নেওয়ার পর লাইসেন্স আসা পর্যন্ত কোনরকম আইনি অসুবিধা আপনার হবে না।
কর্পূর বানানোর ব্যবসা থেকে লাভ:
যেহেতু আপনি খুবই কম টাকা ইনভেস্ট করে এই ব্যবসাটি করতে পারছেন, তবুও এই ব্যবসা থেকে আপনি প্রতিমাসে কম করে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা অনায়াসেই উপার্জন করতে পারবেন। তাছাড়া যদি আপনি আরেকটু বড় আকারে শুরু করতে চান, তাহলে ইনভেসমেন্ট এর সাথে সাথে মাসিক উপার্জন টাও আপনার অনায়াসেই বেড়ে যাবে।
কর্পূর যা কিনা ব্যবহারের পর একেবারে শেষ হয়ে যায়। আবার নতুন করে কিনতে হয়। আর তাই এর চাহিদা মার্কেটে প্রচুর। আপনি যদি এই কর্পূর বানানোর ব্যবসাটি করেন, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি মার্কেটে একটা জায়গা করে নিতে পারবেন। তাছাড়া আপনার ব্যবসার একটা নাম আপনি মার্কেটে ছড়িয়ে দিতে পারবেন।
আপনার ব্রান্ড তৈরি করে নিন এবং সেই ব্রান্ডের ছবি প্যাকেটের গায়ে অর্থাৎ কর্পূর এর প্যাকেটের গায়ে চাপিয়ে নিতে পারেন, যার ফলে কাস্টমার ভালোমতো এই কর্পূর এর প্রতি একটা আকর্ষণ অনুভব করবে। তবে হ্যাঁ অবশ্যই আপনার তৈরি করা কর্পূর এর কোয়ালিটি যেন খুবই ভালো হয়, তবেই তো ভালো মতো আপনি মার্কেটে বিক্রি করতে পারবেন তাই না।