Coaching Center Business Idea 2024 (কোচিং সেন্টার ব্যবসা 2024): How to Start Coaching Center Business in India? | Coaching Center Business Idea in Bengali | Coaching Center Business Plan in Bengali. জানুন কোচিং সেন্টার ব্যবসা শুরু করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি এবং লাভ ও ইনভেস্টমেন্ট।
শিক্ষা এমন একটি জিনিস যা কিনা প্রতিটি মানুষের মধ্যে থাকাটা কতটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা সকলেই জানি। এখন বর্তমানে এমন পরিস্থিতি যে, যদি কোনো অভিভাবক সামান্য পরিমাণ হলেও লেখাপড়া না জানলেও তাদের সন্তানদের ভালোমতো শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য যতটা কষ্ট করতে হয় তাঁরা করতে রাজি আছেন এবং তার মাধ্যমে নিজের ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাইছেন। আর তার জন্য ভালো শিক্ষকের প্রয়োজন। যে শিক্ষক সবচেয়ে ভালো শিক্ষা দিয়ে তাদের জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারেন।
শহরে হোক অথবা গ্রামে, বড় বড় স্কুলের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার পাশাপাশি কোচিং সেন্টারও কিন্তু খোলা হচ্ছে। এমন জায়গাতে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য এবং যে সমস্ত বিষয় গুলোর উপরে স্কুলে পড়ানো হয় তার উপরে অনুশীলন করার একটি সবচেয়ে ভালো জায়গা এই কোচিং সেন্টার।
আর তাই এমন পরিস্থিতিতে এই কোচিং সেন্টার খুলে আপনিও কিন্তু তা থেকে ভালো মত একটা ইনকাম করতে পারবেন। তার সাথে সাথে ছেলেমেয়েদের অর্থাৎ ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চতর জ্ঞান দেওয়ার মধ্যে দিয়ে তাদের অনেকটাই সহযোগিতা করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে রোজগার এর সঠিক মাধ্যম খুজে পাওয়া খুবই মুশকিল হয়ে পড়েছে। আর তাই কিছু লোক অধ্যায়নের মাধ্যমে উপার্জন করে জীবন যাপন করছেন।
তো চলুন তাহলে জানা যাক, কিভাবে আপনি কোচিং সেন্টার খুলে এখান থেকে অধিক পরিমাণে উপার্জন করতে পারেন।
কোচিং সেন্টার খোলার প্রক্রিয়া:
কোচিং সেন্টার খোলার জন্য কিছু বিশেষ বিষয়ের উপরে খেয়াল রাখতে হবে। যাতে আপনি বেশি পরিমাণে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তাদের উপকার করতে পারেন এবং এর মধ্যে দিয়ে প্রতিমাসে একটা ভালো মত ইনকাম করতে পারেন।
১) শিক্ষাব্যবস্থাকে ভালো করে বোঝা:
কোচিং সেন্টার খোলার জন্য আপনাকে সবার প্রথমে যেটা করতে হবে সেটা হলো, শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে ভালোমতো একটা ধারণা রাখা। যে জায়গাতে আপনি কোচিং সেন্টার খুলতে চাইছেন আপনার এটা জানতে হবে যে, এখানে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তারা কেমন স্কুলে পড়ছে আর তাদের কেমন ধরনের কোচিং এর প্রয়োজন হবে।
২) সাবজেক্ট অথবা বিষয় নির্বাচন করা:
তারপর সেই সমস্ত সাবজেক্ট অথবা বিষয় সম্পর্কে আপনার জ্ঞান রাখতে হবে, অথবা নির্বাচন করতে হবে, যা কিনা আপনি ভালোমতো পড়াতে পারেন যদি সেই সমস্ত সাবজেক্ট গুলি আপনি ভালোমতো পড়াতে পারেন, তাহলে তার উপরে কোচিং সেন্টার খুলতেই পারেন। এর মাধ্যমে আপনার অনেক লাভ হবে কিন্তু কারো কিছু বোঝানোর জন্য এবং পড়ানোর জন্য আত্মবিশ্বাস থাকাটা সবচেয়ে বেশি জরুরি।
৩) সঠিক জায়গা নির্বাচন করা:
বর্তমান সময়ে অনেক কোচিং সেন্টার হওয়ার পরেও ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিকভাবে শিক্ষা কিন্তু মিলছেনা। এর কারণ হলো অধিকাংশ শিক্ষক না তো ভালোমতো পড়াতে পারছেন, আর যদিওবা কোন শিক্ষক ভালোমতো পড়িয়ে থাকেন, সেই কোচিং সেন্টারটি এমন জায়গায় অবস্থিত সেখানে ছাত্রছাত্রীরা সহজেই যেতে পারছে না।
আর সেই কারণেই কিন্তু এই কোচিং সেন্টার খোলার জন্য সঠিক জায়গা আপনাকে আগে থেকে নির্বাচন করতেই হবে। এমন জায়গা বাছুন, যেখানে শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই পৌঁছে যেতে পারবে।
৪) বড় ঘরের প্রয়োজনীয়তা:
যত বড় ঘর হবে ততো আপনার পক্ষে ভালো। কেননা যেহেতু আপনি যদি ভাল পড়াতে পারেন, তাহলে দিন যাওয়ার সাথে সাথে আরও বেশি পরিমাণে ছাত্র-ছাত্রী আপনার কোচিং সেন্টারে এসে ভিড় করবে।
সেখানে তাদেরকে বসার জন্য বেঞ্চ, চেয়ার সেগুলো তো রাখতেই হবে। তার সাথে সাথে ভবিষ্যতের চিন্তাও একসাথে করে রাখতে হবে। পরবর্তীতে যদি ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যায় সেক্ষেত্রে আপনার কোন সমস্যা যেন না হয়।
এর সাথে সাথে এমন কিছু বিষয় সেই ঘরে রাখতে হবে যেগুলি ছাত্র-ছাত্রীদের বেশ আকর্ষিত করে, সেগুলি হল:
আপনাকে আপনার কোচিং সেন্টারে, যেটা ঘর আছে সেখানে প্রেরণাদায়ক বই রাখতে হবে এক কোণে, আর এই সমস্ত বইয়ের মাধ্যমে আপনি বাচ্চাদের ভালোমতো পড়াতে পারবেন এবং তাদের চরিত্র গঠনে অনেকটাই সাহায্য করতে পারবেন।
আপনার কোচিং সেন্টারে ফোন রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে। তাছাড়া এখন সমস্ত বড় ছাত্রছাত্রীদের হাতে ফোন থাকলেও বাচ্চাদের হাতে কিন্তু ফোন থাকে না। সেই কারণে কোনো রকম অসুবিধা থাকলে এই ফোনের মাধ্যমে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে তারা।
অথবা কোন বাচ্চার অসুস্থতার সময় তার পরিবারকে আপনি ফোন করে ডাকতে পারেন। এর সাথে সাথে আপনার কোচিং সেন্টারের মধ্যে কম করে একটি কম্পিউটার সিস্টেম থাকাটা অবশ্যই জরুরি।
যদি কোনো শিক্ষার্থী আপনাকে এমন কোনো প্রশ্ন করে বসলো যেটা আপনার জানা নেই। তাহলে কিন্তু আপনি কম্পিউটারের মাধ্যমে সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।
সে ক্ষেত্রে আপনি ইন্টারনেটের সাহায্য নিতে পারেন। আর এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন বিদ্যার্থীর বিষয় সম্পর্কিত বিশেষ ক্লাস নিতে পারেন। কম্পিউটার সিস্টেম থাকার কারণে তাদের যে ফিজ (Fees) হয় সেটাও কিন্তু বাড়িয়ে রাখতে পারেন।
ফিজ (Fees) নির্বাচন করা:
আপনাকে এই বিষয়ের উপরে ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে, এমনভাবে ফিজ রাখুন যেটা সবার কাছে সহজসাধ্য মনে হয়। কারো কাছে যেন অধিক পরিমাণ হিসেবে ধরা না দেয়। সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনি অনেক পরিমাণে ছাত্র-ছাত্রী পাবেন এই কোচিং সেন্টারে। তাছাড়া ক্লাস অনুসারে ফিজ আপনি কম এবং বেশি নিতে পারেন।
এমন কিছু আইডিয়া নিচে দেয়া হলো সেই অনুসারে আপনি ফিজ রাখতে পারেন:
সাবজেক্ট | টাকা (Fees) |
বাংলা | 300 থেকে 400 |
ইংরেজি | 300 থেকে 400 |
ইতিহাস | 300 থেকে 400 |
ভূগোল | 300 থেকে 400 |
সাহিত্য | 400 থেকে 500 |
ইকোনমিক্স | 400 থেকে 500 |
একাউন্ট | 400 থেকে 500 |
বিজনেস ল | 400 থেকে 500 |
ম্যাথ (অংক) | 400 থেকে 500 |
ফিজিকস | 600 থেকে 800 |
কেমিস্ট্রি | 600 থেকে 800 |
বায়োলজি | 600 থেকে 800 |
এইভাবে আপনি ফিজ রাখতে পারেন, তবে আপনার আশেপাশে কেমন ফিজ নেওয়া হয় অন্যান্য কোচিং সেন্টারে তার ওপরে ভিত্তি করে তাদের থেকে কম টাকা নেওয়ার চেষ্টা করবেন, এতে আপনারই লাভ।
কোচিং সেন্টার খোলার জন্য ইনভেস্টমেন্ট:
যে কোন কোচিং সেন্টার খোলার জন্য ইনভেস্টমেন্ট এই বিষয়ের উপর নির্ভর করে যে, কোচিং সেন্টারটি আপনি কোথায় খুলছেন। যদি আপনার নিজের ঘরেই খুলে থাকেন সে ক্ষেত্রে কিন্তু ঘর ভাড়া আপনাকে দিতে হচ্ছে না, তাহলে অনেকটা টাকা আপনি বাঁচাতে পারছেন।
যদি আপনি স্কুলের কাছাকাছি অথবা কোন জনবহুল জায়গাতে কোচিং সেন্টারটি খুলে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে মাসে কম করে ২০০০ টাকা আপনাকে ঘর ভাড়া দিতে হতে পারে।
তাছাড়া ছয় মাসের জন্য আপনি ঘর নিতে পারেন, এছাড়াও ব্ল্যাকবোর্ড, ফ্যান, লাইট, ভালো রকমের সুবিধা দিতে চান ছাত্র-ছাত্রীদের, তাহলে তার জন্য এসি, কম্পিউটার সিস্টেম, বসার জন্য জায়গা, যেমন ধরুন বেঞ্চ অথবা চেয়ার ইত্যাদি করার জন্য আপনার কিছু টাকা খরচ হতে পারে।
আর তাই কোন কোচিং সেন্টার খোলার জন্য নূন্যতম ৬০,০০০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করতে হতে পারে আপনার, যা খুবই কম টাকা এর ক্ষেত্রে।
কোচিং সেন্টার থেকে লাভ অথবা প্রফিট:
এ বিষয়ে একটা কথা বলে রাখা জরুরী যে, কোচিং সেন্টার করার জন্য কিন্তু আপনাকে এককালীন ইনভেস্টমেন্ট করতে হচ্ছে, আর লাভ পাবেন প্রতিমাসে। তাছাড়া আপনার এই কোচিং সেন্টার থেকে কতটা পরিমাণ লাভ পেতে পারেন, সেটা কিন্তু নির্ভর করবে আপনার কতগুলো ছাত্র-ছাত্রী আছে এবং আপনি কত ভালো পড়াতে পারেন তার উপরে। তাছাড়া এই কোচিং সেন্টারে একদিনে কম করে ছটি ব্যাচ আপনি পড়াতে পারবেন। আর কম করে কুড়িজন ছাত্র-ছাত্রী আপনি নিতে পারবেন।
যদি প্রত্যেকে ফিজ ৫০০ টাকা করে ধরা যায়, তাহলে কিন্তু প্রতি মাসে ১০,০০০ টাকা আপনি উপার্জন করছেন। আর যদি ৬ টি ব্যাচে প্রতিদিন যদি পড়াতে থাকেন, তাহলে তো হিসাব আপনি বুঝতেই পারছেন, প্রতি মাসে ৬০,০০০ টাকা অনায়াসেই ইনকাম করতে পারবেন।
কোচিং সেন্টারের প্রচার করবেন কিভাবে:
যদি আপনি একটি খুবই ভাল শিক্ষক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কোচিং সেন্টারের প্রচার কিন্তু এমনিতেই হয়ে যাবে আর খুবই কম সময়ের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রী আপনার কোচিং সেন্টার এসে ভিড় জমাবে।
১) তাছাড়া কোচিং সেন্টারের নাম দিয়ে তার প্রচার করার জন্য লোকাল কোন খবরের কাগজে আপনি বিজ্ঞাপন দিতে পারেন।
২) খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া ছাড়াও কোচিং সেন্টারের ছোট কোন ভিডিও তৈরি করে লোকাল কেবল অপারেটরের কাছে দিয়ে দিতে পারেন, এমন করার ফলে টিভির মাধ্যমে আপনি আপনার কোচিং সেন্টারের প্রচার করতে পারবেন।
৩) আপনার কোচিং সেন্টারের প্যাম্পলেট ছাপিয়ে স্কুলের বাইরে বিলি করতে পারেন। এর মাধ্যমে অনেক ছাত্রছাত্রী আপনারাই কোচিং সেন্টার এর প্রতি আকর্ষিত হবে।
৪) আপনি আপনার কোচিং সেন্টার একটি ডেমো ক্লাস রাখতে পারেন এই ক্লাসের মাধ্যমে স্কুলের বাচ্চাদের ডেকে তাদের মাধ্যমে কোচিং এর প্রচার সহজভাবে করতে পারবেন।
৫) আপনি আপনার কাজ অনলাইন টিউটোরিয়াল রেফারেল সার্ভিসের মাধ্যমেও করতে পারেন। এমন করার পরেও বেশি মানুষের কাছে আপনার কোচিং সেন্টারের কথা পৌঁছে যাবে।
তাছাড়া এখন তো যে কোন ব্যবসার প্রমোশন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনায়াসেই করা যায়। যেমন ধরুন, ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস এ সমস্ত জায়গাতে আপনার কোচিং সেন্টারের প্রচার করতে পারেন।
কিভাবে কোচিং সেন্টারের রেজিস্ট্রেশন করবেন:
আপনি আপনার কোচিং সেন্টারে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। এমন করার ফলে মানুষের মধ্যে আপনার কোচিং সেন্টার সম্বন্ধে একটা বিশ্বাস তৈরি হবে। তার ফলে বেশি পরিমাণে ছাত্র-ছাত্রী এই সেন্টারে পড়ার জন্য চলে আসবে।
রেজিস্টার্ড কোচিং সেন্টার কে ভারত সরকার শিক্ষা সম্বন্ধিত যোজনার জন্য প্রয়োগ করতে পারে, যার মাধ্যমে আপনি একটা ভালোমতো লাভ পেতে পারেন।