Straw Making Business Idea 2024 (স্ট্র পাইপ বানানোর ব্যবসা 2024): How to Start Straw Making Business in India? | Straw Making Business Idea in Bengali | Straw Making Business Plan in Bengali. জানুন স্ট্র পাইপ বানানোর ব্যবসা শুরু করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি এবং লাভ ও ইনভেস্টমেন্ট।
জীবিকা নির্বাহের জন্য কিছু না কিছু কাজ করতেই হয়, না হলে যে না খেতে পেয়ে মারা যেতে হবে। আর তাই পৃথিবীতে কত রকমের যে কাজ এবং ব্যবসা রয়েছে তার কোন হিসেব নেই। এক এক জন ব্যক্তি একেকটি ব্যবসাতে পারদর্শী, আর সেই কারণে এক একটি ব্যবসা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে, ওই সমস্ত ব্যক্তিদের হাত ধরে।
এই সমস্ত ব্যবসার মধ্যে জুস অথবা ড্রিংকস খাওয়ার জন্য যে পাইপ আমরা ব্যবহার করে থাকি সেগুলি বানানো হয় মেশিনের মাধ্যমে এটা কিন্তু বেশ জনপ্রিয় ব্যবসা।
স্ট্র পাইপ বানানোর ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে:
প্রথমেই বলে রাখা ভাল যে এই ব্যবসাটি শুরু করতে গেলে আপনার কোন রকম শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগবে না, যে ব্যাক্তি ব্যবসা সম্পর্কে বেশ ভাল ধারণা রাখেন তিনি খুব সহজেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য যেমন পড়াশোনার দরকার নেই, তেমনি অধিক পরিমাণে ইনভেস্টমেন্ট টাও করতে হবে না আপনাকে।
এই পাইপ এমন একটি জিনিস যার ব্যবহার প্রত্যেক মানুষ কমবেশি করে থাকেন, আর সেই কারণে আপনার ভালোমতো ধারণা হয়েছে যে, এই স্ট্র পাইপ কেমন হয় অথবা কেমন দেখতে। ভারতে এই ব্যবসাটির চাহিদা প্রচুর।
ছোট ছোট দোকান থেকে বড় শপিং মল পর্যন্ত এর চাহিদা ব্যাপক মাত্রায়। যদি আপনি এর ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক সাহায্য করবে আশা করা যায়।
বিভিন্ন রকমের স্ট্র পাইপ:
এই পাইপ দুই রকম ভাবে তৈরি করা হয়, অথবা দুই রকম পাওয়া যায় যেমন ধরুন একটি কাগজ দিয়ে তৈরি পাইপ আরেকটি প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়। এই দুই ধরনের পাইপ এর মধ্যে কাগজের তৈরি পাইপ বেশি মাত্রায় ব্যবহার করা যায় না ঠিকই, তবে এটি পরিবেশবান্ধব ও বটে।
তাছাড়া প্লাস্টিকের পাইপ এর কথা যদি বলা হয়, কাগজের তৈরি পাইপের তুলনায় এটি বেশ টেকসই অর্থাৎ কাগজের তৈরি পাইপ খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায় অথবা ভেঙে যায়।
কিন্তু প্লাস্টিকের পাইপ সেই তুলনায় অনেকটাই শক্ত, খারাপ হওয়ার কোনো রকম সম্ভাবনা নেই। আর যদি আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে চান তাহলে প্লাস্টিকের তৈরি পাইপ দিয়ে ব্যবসা শুরু করুন, যা কিনা সবচেয়ে বেশি লাভ দায়ক হবে আপনার জন্য।
স্ট্র পাইপ তৈরি করার ক্ষেত্রে কাঁচামাল সামগ্রী:
এই ব্যবসাটি শুরু করার পর থেকে আপনি ভালোমতো উপার্জন করতে পারবেন, কেননা এই পাইপ একবার ব্যবহার করার পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটা ফেলে দেওয়া হয়। আবার নতুন পাইপ ব্যবহার করা হয়।
সে ক্ষেত্রে এর চাহিদা বাজারের সব সময়ের জন্য বজায় থাকে। তাই এই ব্যবসাটি শুরু করার ক্ষেত্রে আপনার ভালোমতো ধারণা থাকতে হবে যে ব্যবসা টিতে কি কি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লাগতে পারে।
চলুন জানা যাক এই ব্যবসাটি করতে গেলে আপনার কি কি জিনিসপত্র প্রয়োজন পড়বে:
স্ট্র পাইপ বানানোর জন্য মেশিন:
কোন ব্যবসা শুরু করতে গেলে সবচেয়ে আগে যে বিষয় টিকে বেশি খেয়াল দিতে হবে যে, এই ব্যবসাতে যে মেশিনটি প্রয়োজন পড়বে তার সম্পর্কে সঠিক ধারণা ও তথ্য। এই পাইপ বানানোর জন্য মেশিনের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তবে দু’ধরনের মেশিনের প্রয়োজন পড়বে আপনার। যার মধ্যে একটিতে পাইপ বানানোর কাজ করা হয়, আর আরেকটি মেশিন সেই পাইপ কেটে বিভিন্ন রকমের সাইজের পাইপ তৈরি হয়।
এই মেশিনের দাম:
সাধারণত দুটি মেশিন আপনার প্রয়োজন পড়বে। প্রথমত যে মেশিনে আপনি পাইপ তৈরি করবেন সেই মেশিনের দাম পড়বে প্রায় ৪ লাখ টাকা, আর যে মেশিনের মাধ্যমে আপনি পাইপ গুলিকে কাটবেন সেই মেশিনের দাম পড়বে ৫০ হাজার।
কোথায় থেকে কিনবেন মেশিন:
এই মেশিন কেনার জন্য আপনার বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই, কেননা মার্কেটে খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। তাছাড়া অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমেও অর্ডার করে নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে কুড়ি দিনের মধ্যে আপনার মেশিন আপনার ঘরে পৌঁছে যাবে।
Paper Straw Making Machine | Click here |
Plastic Straw Making Machine | Click here |
পাইপ বানানোর জন্য বিভিন্ন রকমের কাঁচামাল সামগ্রী এবং তাদের দাম:
এই ব্যবসাটি করতে গেলে আপনার মেশিনের সাথে সাথে যে সমস্ত জিনিসপত্রগুলি পাইপ বানানোর কাজে ব্যবহার করা হবে সেগুলি সম্পর্কে ভালোমতো ধারণা রাখতে হবে। আপনাকে স্ট্র পাইপ বানানোর জন্য প্লাস্টিক বিডস (beads) আর কর্লাররেন্ট এর ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যে, কর্লাররেন্ট এর ব্যবহার পাইপ গুলিকে রঙিন করার কাজে ব্যবহার করা হয়। এইজন্য যেমন রং এর পাইপ তৈরি করতে চাইছেন তেমন কর্লাররেন্ট কিনতে হবে। তাছাড়া প্লাস্টিক beads অথবা মতি একশো কুড়ি টাকা প্রতি কিলো আপনি খুব সহজেই মার্কেটে পেয়ে যাবেন।
স্ট্র পাইপ বানানোর প্রক্রিয়া:
এই পাইপ বানানোর জন্য সবার প্রথমে পাইপ বানানোর মেশিন এ প্লাস্টিক মতি (beads) আর কর্লাররেন্ট একসাথে দিয়ে দিতে হবে। এই মেশিনের সাহায্যে দুটো জিনিস একসাথে ভালো ভাবে মিশে যাবে, তারপর সেগুলিকে ভালো করে গলিয়ে দেবে মেশিন। যার পরে আপনাকে মেশিনের থেকে গলে যাওয়া ওই প্লাস্টিক কে পাইপের আকার দিতে হবে। সেটা মেশিনের মাধ্যমে হয়ে যাবে।
তারপর এগুলিকে আরেকটি মেশিনের সাহায্যে মাপ অনুযায়ী পাইপ গুলোকে কেটে নিতে হবে। তারপর আপনার পাইপ একেবারে তৈরি। তাছাড়া আপনি যখন এই মেশিন কিনবেন তখন ভালোভাবে ওই মেশিন সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জানার পাশাপাশি মেশিনটি কত সময়ের মধ্যে কত পাইপ বানিয়ে দিতে পারবে সেটাও ভালো করে জেনে নেবেন।
তৈরি হওয়া পাইপ গুলির প্যাকিং:
যেহেতু মার্কেটে পাইপ প্যাকেট হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। আর তাই আপনি যখন এগুলি তৈরি করবেন তখন এগুলির প্যাকেট সম্পর্কে ভালো মত একটা ধারণা রাখবেন, কেননা যত ভালো প্যাকেট করবেন আপনি, ততো আপনার বিক্রি বেশি হবে। তারপর প্লাস্টিকের প্যাকেট করে প্রত্যেক প্যাকেটে কয়টি করে পাইপ রাখবেন সেটাও ঠিক করতে হবে। যাতে কাস্টমারদের সুবিধা হয় কিনতে।
এই ব্যবসার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন:
যে কোন ব্যবসা যখন আপনি শুরু করবেন তখন সেই ব্যবসা সম্পর্কে ভালোমতো ধারণা থাকার পাশাপাশি কোনোরকম অসুবিধা এবং অসাবধানতা যেন না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখাটা জরুরি।
আর তাই এই ব্যবসার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যে কোন রকম আগুন ধরতে পারে এমন জিনিস প্লাস্টিক পাইপের কাছাকাছি রাখবেন না, কেননা প্লাস্টিক আগুন খুব তাড়াতাড়ি টেনে নিতে পারে এবং সেটা বড় আকারে আগুন ছড়িয়ে দিতে পারে।
ব্যবসা সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য:
যে কোন ব্যবসার মতো এই ব্যবসার ক্ষেত্রেও সব দিক বিচার বিবেচনা করে তবেই আপনাকে শুরু করতে হবে। তার ফলে আপনি অধিক পরিমাণে লাভ পেতে পারবেন এই ব্যবসা থেকে।
১) জায়গা নির্বাচন:
এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য সঠিক জায়গা নির্বাচন করতে হবে আপনাকে, খেয়াল রাখতে হবে যে যে জায়গায় ব্যবসাটি আপনি শুরু করতে চলেছেন সেখানে বিদ্যুৎ, জল এগুলির সুবিধা যেন খুব সহজভাবে পেয়ে যান। তাছাড়া গাড়ি চলাচল এবং ট্রান্সপোর্টের সুবিধা যেন থাকে।
২) কর্মচারী নিযুক্ত করা:
এই ব্যবসাটি চালানোর জন্য আপনার হয়তো কিছু কর্মচারী প্রয়োজন পড়বে, কতগুলি কর্মচারী হলে আপনার কাজ ভালোভাবে হয়ে যাবে। সেগুলো ঠিক করে নেওয়ার পর তারপর কর্মচারী নিযুক্ত করুন। সব সময় আপনার বাজেট অনুসারে কর্মচারী নিযুক্ত করে তাদেরকে বেতন দেওয়ার মাধ্যমে কাজে রাখতে পারেন।
৩) বাজার তথ্য সংগ্রহ:
এর জন্য আপনাকে বাজারে গিয়ে অনুসন্ধান করতে হবে যে কেমন ধরনের পাইপ বেশি বিক্রি হচ্ছে এবং কাস্টমারের কাছে কোনগুলি বেশি জনপ্রিয় এবং আপনার তৈরি পাইপ গুলো বিক্রি করার জন্য দোকানদারের সাথে ভালো মতো একটা যোগাযোগ ও ভাল সম্পর্ক তৈরী করুন, তাহলে ব্যবসা শুরু করার প্রথম থেকেই আপনি তাদের কাছে পাইপ গুলো বিক্রি করতে পারবেন।
৪) লাইসেন্স:
যে কোন ব্যবসা শুরু করতে গেলে প্রথমত লাইসেন্স এর প্রয়োজন হয়, এই জন্য এই ব্যবসার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার থেকে লাইসেন্স, পারমিট অবশ্যই নিয়ে রাখবেন।
৫) ব্যবসার মার্কেটিং:
যে কোন ব্যবসা খুব ভালোভাবে চলার জন্য মার্কেটিং করাটা ভীষণ জরুরী। বিভিন্ন রকম ভাবে আপনি এই ব্যবসার মার্কেটিং করতে পারেন। যারা এগুলো কিনবেন তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে আপনার তৈরি করা পাইপ সম্পর্কে বলুন অথবা কোন খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন।
এই ব্যবসার ক্ষেত্রে ইনভেস্টমেন্ট:
স্ট্র পাইপ বানানোর ব্যবসাতে আপনার কম করে সাত-আট লাখ টাকা খরচ পড়তে পারে। এরমধ্যে মেশিন থেকে সমস্ত খরচ আপনার চলে আসবে, এমনকি যে জায়গায় আপনি ব্যবসাটি শুরু করবেন সেই জায়গার খরচও চলে আসবে। যদি আপনার কাছে এত পুঁজি না থাকে তাহলে ব্যাংক থেকে অনায়াসেই লোন নিতে পারবেন।
এই ব্যবসা থেকে লাভ:
এই ব্যবসাটি ভালোভাবে চালিয়ে যেতে পারলে ইনভেস্টমেন্টের টাকা আপনি খুব সহজেই কম সময়ের মধ্যে তুলে নিতে পারবেন। আপনার প্রোডাকশন এর উপরে নির্ভর করবে, কত পরিমাণে উপার্জন করতে পারবেন। তবে এর চাহিদা এতটাই যে প্রতি মাসে আপনি কম করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ফলের জুস হোক অথবা প্যাকেট জুস, ডাবের জল হোক অথবা লস্যি, সব ক্ষেত্রে খাওয়ার জন্য এই পাইপ ব্যবহার করা হয়। আর সেই কারণে মার্কেটে এই পাইপের চাহিদা প্রচুর। এই ব্যবসাটি করে অনায়াসেই আপনি ভালোমতো উপার্জন করতে পারবেন।