Soap Manufacturing Business Idea 2024 in Bengali (সাবান তৈরির ব্যবসা 2024): Best Soap Manufacturing Business Ideas in Bengali | Soap Manufacturing Business Plan in Bengali.
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে কাপড় কাচা সাবান কিন্তু একটা অতিপ্রয়োজনীয় জিনিস। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় এর জন্য কাপড় কাচা সাবান উপযোগী।
বিভিন্ন রকমের জামা কাপড় মার্কেটে দিনবদলের সাথে সাথে আসতে চলেছে। আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে জামাকাপড় গুলোকে ভাল রাখার জন্য সেগুলি কি পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে যে সাবান ব্যবহার করা হয়।
সেই সাবান কিন্তু মার্কেটে আলাদা আলাদা ভাবে আসছে। সুতির কাপড়ের জন্য আলাদা সাবান, সিনথেটিক কাপড়ের জন্য আলাদা সাবান, সিল্ক কাপড়ের জন্য আলাদা সাবান।
অনেকেই এই কাপড় কাচার জন্য সাবান ব্যবহার করে থাকেন। আর তাই আপনি এর মার্কেটের চাহিদা অনুসারে অনায়াসেই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন, অর্থাৎ কাপড় ধোয়ার সাবান তৈরি করে তার ব্যবসা করতে পারেন।
এই ব্যবসাটি করতে গেলে কি কি জিনিস পত্রের প্রয়োজন পড়ে এবং কেমন ভাবে সাবান তৈরি করবেন সে সম্পর্কে জানা যাক:
কাপড় ধোয়ার সাবান তৈরি করার জন্য র মেটেরিয়ালস:
এই সাবান বানানোর জন্য যে সমস্ত কাঁচামাল প্রয়োজন পড়বে সেগুলি হল:
#১) ডলোমাইট পাউডার: ৩-৫ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম
#২) সোডা পাউডার: ২০-২৫ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম
#৩) এসিড ঘোল: ৮০-১০০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম
#৪) এ ও এস: ৪০-৬০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম
#৫) সোডিয়াম সিলিকেট: ৩০-৪৫ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম
#৬) রং: ৫-১০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম
#৭) পারফিউম: ৬০০-৮০০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম
#৮) পলিমার: ৫০-৬০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম
এসব জিনিস গুলি আপনি কোথায় থেকে কিনবেন:
কাপড় ধোয়ার এই সাবান বানানোর জন্য সমস্ত রকমের জিনিসপত্র বিভিন্ন্য পাইকেরি মার্কেট থেকে কিনে নিতে পারেন যা আপনার এলার কাছে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন ট্রেডিং সাইটের মাধ্যমে কিনতে পারেন যা আপনি ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন।
কাপড় ধোয়ার সাবান বানানোর জন্য মেশিন:
এই মেশিন আপনি খুব সহজেই পেয়ে যাবেন এবং খুব সহজেই আপনি চালাতে পারবেন। সাবান বানানোর বিভিন্ন রকমের মেশিন পার্টস গুলি হল:
#১) মিক্সার মেশিন: মিক্সার মেশিনে ডলোমাইট পাউডার, সোডা পাউডার, অ্যাসিড ঘোল ইত্যাদি একসাথে মেশানোর কাজ করে থাকে।
#২) সোপ মেকিং ডাই: এর সাহায্যে আপনি যে সাবান টি বানাবেন তার আকার আকৃতি দিতে পারবেন।
মেশিন কোথায় থেকে কিনবেন: সাবান বানানোর মেশিন আপনি অনলাইনের মাধ্যমেও কিনতে পারেন।
এই ব্যবসাতে ইনভেস্টমেন্ট:
কাপড় ধোয়ার সাবান বানানোর জন্য সম্পূর্ণ মেশিন বসিয়ে কম করে ২ লাখ থেকে ২.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচা হতে পারে। তাছাড়া যদি মেশিন অটোমেটিক হয়ে থাকে এবং লম্বা সময় পর্যন্ত চলতে থাকে তাহলে কিন্তু আপনারে ইনভেস্টমেন্ট অনেকটাই সুরক্ষিত থাকছে।
একবার যদি আপনি মেশিন কিনে নেন তাহলে অনেকদিন পর্যন্ত এই মেশিনের সাহায্যে আপনি এই ব্যবসাটি করতে পারবেন।
চলুন এবার জানা যাক কাপড় কাচার সাবান তৈরি করার প্রক্রিয়া:
বিশেষ খেয়াল রাখার মত কথা এই যে, সাবান বানানোর জন্য কোনরকম ডিগ্রী অথবা কোনরকম ডিপ্লোমা আপনার প্রয়োজন পড়বে না। যদি আপনি সাবান বানানোর প্রক্রিয়া টি ভালোমতো আয়ত্ত করে নিতে পারেন, তাহলে খুব সহজেই সাবান আপনি বানাতে পারবেন। চলুন জানা যাক কিভাবে বানাবেন।
#১) সবার প্রথমে মিক্সার মেশিন অন করে নিন এই মেশিনের উপর এর দিকে খোলা থাকে তার মধ্যে প্রয়োজনীয়তা অনুসারে ডলোমাইট পাউডার এবং আরো অন্যান্য যেসব জিনিস দেওয়া হয় সেগুলি দিতে হবে।
আপনি কতটা কাঁচামাল এর মধ্যে দিতে পারেন তা কিন্তু নির্ভর করে সেই মেশিনের ক্ষমতার উপর। সাধারণত ১০০ কিলোগ্রাম ডলোমাইট এই মেশিনে আপনি দিতে পারবেন।
#২) এরপরে এতে তিন কিলো গ্রাম সোডা পাউডার দিতে হবে অর্থাৎ ১০০ কিলো গ্রাম ডলোমাইট পাউডার এর সাথে তিন কিলো সোডা পাউডার দেওয়া প্রয়োজন।
#৩) এরপর ডলোমাইট আর সোডা পাউডার এর মিশ্রণ এ ২০ কিলো এসিড ঘোল দিতে হবে। এ ও এস সাবানে যে ফেনা হয় সেটা তৈরি করে যদি এ ও এস না দেওয়া হয় তাহলে সাবানের ফেনা উৎপন্ন হবে না।
#৪) এরপরে কিছু সময় এই সমস্ত জিনিস গুলো কে একসাথে মিশ্রিত করার জন্য ছেড়ে দিতে হবে। মিশ্রণের জন্য কম করে আধঘন্টা সময় দিতে হবে।
#৫) এরপর এই মিশ্রণে সিলিকেট দিতে হবে। ১০ কিলো সোডিয়াম সিলিকেট মেশাতে হবে।
#৬) যদি আপনার বানানো এই সাবানের কেক এ রঙ মেশাতে চান অথবা কোন পারফিউম মেশাতে চান, তাহলে এই সময় মেশাতে পারেন। কেননা এই মিশ্রণের সাথে এগুলো ভালোমতো মিশে যাবে। যদি আপনি সাবান টিকে সাদা রঙের করতে চান তাহলে কোন রং আপনার প্রয়োজন পড়বে না।
#৭) এরপর সাবানের একটা সুন্দর গন্ধ দেওয়ার জন্য পারফিউম দিতে হবে। যেখানে কম করে ১৫০ মিলিলিটার পারফিউম দেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন।
#৮) এইসব একসাথে মেশানোর পর সেটা একটা আটা মাখার মত হয়ে যায়। সেটাকে ডাই এর মাধ্যমে আকার দিয়ে তারপর প্যাকিং করতে হবে।
কাপড় ধোয়ার সাবান এর আকার এবং প্যাকেজিং:
যেকোনো সাবানের একটা নির্দিষ্ট আকার থাকে। আর তাই এই সাবান এর ক্ষেত্রেও আপনি একটা ভালোমতো আকার দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের আকারের ডাই ব্যবহার করতে পারেন।
এই ডাই এমন একটি কনটেইনারের সাথে জুড়ে থাকে যা থেকে এই মিশ্রণটি এই ডাই এর মধ্যে দেওয়া হয়ে থাকে এবং সাবানের আকারে তৈরি হয়ে বেরিয়ে আসে।
প্যাকেজিং করার আগে সাবান গুলিকে কাটিং করতে হয় কাটিং এর পর সাবান গুলি প্যাকিং এর আকারে চলে আসে এগুলিকে প্রয়োজনীয়তা অনুসারে আপনি আপনার ব্র্যান্ড ও বিশিষ্ট প্যাকেটে ভরে মার্কেটে বিক্রি করতে পারেন, অথবা যে কোম্পানির জন্য আপনি কাজ করছেন সেই কোম্পানির প্যাকেটও ব্যবহার করতে পারেন।
কাপড় কাচার সাবান তৈরির ব্যবসার জন্য লাইসেন্স:
আমরা তো সবাই জানে যে, যে কোন ব্যবসা করতে গেলে কিছু না কিছু লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন এর প্রয়োজন পড়ে। যদি আপনি কোনো উদ্যোগ নিয়ে থাকেন তাহলে সেই উদ্যোগ চালু করার জন্য আইনত রূপে আপনাকে চালু করতে হবে।
আর তাই এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য আপনাকে আপনার কর্মস্থান কে কোন ফর্ম এর অন্তর্গত রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে তার সাথে সাথে পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড থেকে কন্সেন্ট টু স্টাবিলিশ, কন্সেন্ট টু অপারেট, নামের লাইসেন্স করিয়ে নিতে হবে।
এছাড়াও কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্থাৎ ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশন অবশ্যই করতে হবে। এগুলো ছাড়াও সরকারের নিয়ম অনুসারে এম এস এম ই এর অন্তর্গত উদ্যোগ আধার এর রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে।
এই ব্যবসার জন্য জায়গা নির্বাচন:
এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য অনেক জায়গার প্রয়োজন আপনার পড়বে না। যদি আপনার কাছে কম করে ২০০ বর্গফুট জায়গা থেকে থাকে তাহলে খুব সহজেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
তারপর ব্যবসাটি বড় হওয়ার সাথে সাথে সেই অনুযায়ী আপনার জায়গা আরও বেশি পরিমাণে লাগতে পারে। সেটা পরে চিন্তা করলেও হবে। তবে ছোট জায়গা থেকেও আপনি ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
কাপড় কাচার সাবান বানানোর ব্যবসার জন্য মার্কেটিং:
এই ব্যবসার জন্য মার্কেটিং বিশেষ ভূমিকা পালন করে, সবার প্রথমে আপনাকে বেশি পরিমাণে রিটেলার এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে তার সাথে সাথে হোলসেলার হিসেবেও আপনি সাবান বিক্রি করতে পারেন।
তাছাড়াও রিটেলে সাবান বিক্রি করার ক্ষেত্রে আপনি বেশি পরিমাণে উপার্জন করতে পারবেন। আপনার ব্রান্ডের প্রচার করার জন্য বিভিন্ন রকমের হ্যান্ডবিল অর্থাৎ হোর্ডিং বানিয়ে জনবহুল জায়গাতে এবং বাজারে লাগাতে পারেন।
এই ব্যবসা থেকে লাভ:
যেহেতু আপনি খুব কম টাকা ইনভেস্ট করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন, তবুও মার্কেটিং এর উপরে নির্ভর করে বাজার চাহিদা বুঝে আপনি যদি ব্যবসাটি করে থাকেন খুবই ভালভাবে, তাহলে প্রতি মাসে কম করে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা আপনি অনায়াসেই ইনকাম করতে পারবেন।