2024 পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা শুরুর পদ্ধতি সরকারি সাহায্য ও লাভ – Poultry Farming Business Idea 2024 (পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা 2024): কিভাবে ভারতে পোল্ট্রি ফার্মিং ব্যবসা শুরু করবেন | বাংলায় পোল্ট্রি ফার্মিং বিজনেস আইডিয়া | বাংলায় পোল্ট্রি ফার্মিং বিজনেস প্ল্যান 2024।
পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা 2024: প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ দুধ এবং ডিম প্রতিদিনের একটি সুষম আহার বলতে পারেন। প্রত্যেক ঘরে ডিম ও দুধের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যম্ভাবী।
সে ক্ষেত্রে দুধ ও ডিমের প্রয়োজনীয়তা মেটানোর জন্য এবং বেকারত্ব দূর করার জন্য পোল্ট্রি ফার্ম এর ব্যবসা আজকে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই ব্যবসাটি করতে গেলে আপনার এক বিশেষ আনন্দ অনুভূতি হতে পারে। চলুন এই ব্যবসা সম্পর্কে একটু জানা যাক:
পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসার জন্য জায়গার প্রয়োজন:
এই ব্যবসার জন্য আপনার একটু বড় ধরনের জায়গার প্রয়োজন পড়তে পারে। পোল্ট্রি ফার্ম অথবা ডেয়ারি ফার্ম করার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সুন্দর একটা জায়গার প্রয়োজনীয়তা আছে।
তবে এক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, ছোট জায়গা থেকেও আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যেমন ধরুন আপনার ঘরের পাশে পড়ে থাকা অল্প জায়গা অথবা জমি কেও কাজে লাগিয়ে এই ব্যবসা করতে পারেন।
- ১) এমন ব্যবসার জন্য আপনাকে প্রথমত এমন জায়গার সন্ধান করতে হবে যেখানে কোন হইচই অথবা অন্য কোন পশুর উপদ্রব যেন না থাকে।
- ২) আপনার পছন্দমত এবং আপনার নির্বাচন করা জায়গার উপর এখানে যেন কোন রকম ভাবে জলের সমস্যা না দেখা দেয়, যদি আপনি এই পোল্টি ফার্ম আপনার ঘরের আশেপাশেই করতে চান, সে ক্ষেত্রে সমস্যাটা আপনার দেখা নাও যেত পারে।
পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসার জন্য লোন:
Poultry Farming Business loan in India: পোল্ট্রি ফার্মের জন্য সরকার থেকে কিছুটা পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।
আপনি কি পোল্ট্রি ফার্ম করতে চান সে ক্ষেত্রে এক লাখ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে, এই ব্যবসাটি করার ক্ষেত্রে ভালোভাবে, এবং সরকার জন্য ২৫% অর্থাৎ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় দেবে, তাছাড়া এসটি, এসসি ক্যাটাগরির মানুষদের জন্য ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় দিতে পারে।
পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসার জন্য লোনের আবেদন:
সরকারি এই ব্যবসার জন্য বিশেষ তৎপরতা দেখিয়েছে কিন্তু এই যোজনা এবং বিভিন্ন রকমের তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। সেক্ষেত্রে এই প্রকল্পের সুবিধা ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা পাচ্ছেন না।
এই ছাড় এর কারণে এই ব্যবসার জন্য যতটা থাকার প্রয়োজন ততটা ঋণের মাধ্যমে পেয়ে যেতে পারে সেই ব্যবসায়ী। এইভাবে আপনি ঘর থেকে একটাও টাকা খরচ না করে এই ঋণের মাধ্যমে এই ব্যবসা করতে পারেন।
এই ব্যবসার জন্য কতটা পরিমাণ ঋণের সুদ দিতে হবে:
এই ব্যবসার জন্য এ ঋণের উপর 0% সুদ রয়েছে অর্থাৎ একেবারে নেই বললেই চলে। অর্থাৎ ঋণের আসল টাকা ছাড়া কোন রকম সুদ আপনাকে দিতে হবে না।
এই ব্যবসাটাকে কিভাবে শুরু করবেন:
এই ব্যবসার ক্ষেত্রে সরকার থেকে সম্পূর্ণভাবে আপনি সহযোগিতা পাবেন, সেক্ষেত্রে খুব ভালোভাবে আপনি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
১) জায়গা নির্বাচন:
সবার প্রথমে আপনি যে জায়গায় এই ব্যবসাটি করতে চান অথবা মুরগি গুলোকে রাখতে চান সেই জায়গাটিকে নির্বাচন করে ফেলুন। সেই জায়গাটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
২) রেজিস্ট্রেশন:
এরপর আপনার পোল্ট্রি ফার্ম টা কে এম এস এম ই এর মাধ্যমে কোম্পানি অথবা এম এস এম ই এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে এম এস এম ই এর সহযোগিতায় রেজিস্ট্রেশন খুব সহজেই হয়ে যায়।
এই বিষয় গুলোর উপর খেয়াল রাখতে হবে-
উদ্যোগ আধার অনলাইন ওয়েবসাইটের উপর রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন, খুব সহজেই রেজিস্ট্রেশন করার জন্য যে ওয়েবসাইটটি হল: www.udyogaadhar.gov.in
এই ওয়েব সাইটের উপরে যাওয়ার পর এখানে আবেদনকারীর আধার নাম্বার এবং নাম দিতে হবে তারপর ভ্যালিডেট আধার এই অপশনে ক্লিক করতে হবে।
তারপর আপনার আধার ভ্যালিডেট হয়ে যাবে।
আধার ভ্যালিডেট হয়ে যাওয়ার পর কোম্পানির নাম, কোম্পানির প্রকার, ব্যবসার ঠিকানা, রাজ্য, জেলা, পিন কোড, মোবাইল নাম্বার, ব্যবসার ইমেইল আইডি, ব্যবসা শুরু করার তারিখ, রেজিস্ট্রেশন এর ডিটেলস, ব্যাঙ্কের ডিটেলস, এন আই সি কোড, আপনার এই ব্যবসায় কাজ করার লোকের সংখ্যা, ইনভেস্টমেন্ট, ইত্যাদি এখানে দিতে হবে।
এরপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
এবার এম এস এম ই এর তরফ থেকে একটা সার্টিফিকেট তৈরি হয়ে যাবে, এরপর আপনাকে ইমেইল এড্রেসে সেই সার্টিফিকেট চলে আসবে। ইমেইল থেকে আপনি এই সার্টিফিকেট প্রিন্ট আউট করে বের করে, আপনার ওই ব্যবসার অথবা কোম্পানির অফিসে লাগাতে পারেন।
এভাবে আপনার ব্যবসার রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে এবং এইভাবে আপনি লোন নিতে পারবেন।
হিসাব:
এরপর একটি সাদা কাগজে আপনি পোল্ট্রি ফার্ম অথবা ডেয়ারি ফার্ম বানানোর জন্য যে খরচ হবে সেটা বানাতে পারেন। কি কি লাগতে পারে এই ফার্ম তৈরি করার জন্য, সেক্ষেত্রে একটি লিস্ট বানিয়ে নিতে পারেন, আপনার আরত্ত মত।
বিভিন্ন রকমের খরচ এর তালিকা বানিয়ে নিন। এবার এই হিসাবের সাথে আপনার ঠিকানার প্রমাণপত্র, আপনার পরিচয় পত্র, একসাথে নিয়ে আপনার কাছাকাছি কোন ব্যাংকে চলে যান।
সার্ভিস ব্যাংক লোন:
এটা ঋণ নেওয়ার পরবর্তী প্রক্রিয়া, এই প্রক্রিয়াতে এই ব্যবসার জন্য ঋণ নেওয়া আবেদনকারীর বিভিন্ন পেপারে সাইন করতে হয়, অথবা সই করতে হয়।
সাবসিটি রিলিজ:
এটা সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো, যে ব্যাংক থেকে লোন নেবেন, সেই ব্যাংক সাবসিটি করে দেয়। সাবসিটি পাওয়ার জন্য অন্য কোন জায়গায় আপনার যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এই সাবসিডি অথবা ছাড় আপনার ব্যাংক একাউন্টে আপনা আপনিই চলে যাবে।
এইভাবে কিন্তু খুব সহজেই আপনি আপনার পোল্ট্রি ফার্ম অথবা মুরগি পালন ব্যবসা শুরু করতে পারেন অনায়াসেই।
এই ব্যবসায় লাভ সম্পর্কে জানা যাক:
১) বর্তমান সময়ে দেশে পোল্ট্রি (Poultry Farming) এবং ডেইরি ফার্ম (Dairy Farm) তেমনভাবে হয়ে ওঠে না, সে ক্ষেত্রে বাইরে থেকে বেশি দাম দিয়ে এই সবগুলি আমদানি করতে হয়। সে ক্ষেত্রে সরকার এই ব্যবসাটা কে উৎসাহের সাথে করার জন্য বিভিন্ন রকমের সুবিধা এবং শূন্য শতাংশ সুদ দিয়ে ব্যবসাটাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
২) যদি আপনি কৃষক হয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে এই ব্যবসায় পশু পাখিদের খাবার নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না, কেননা যেসব শাকসবজি উৎপাদন হয়, আপনি সেই শাকসবজির কিছুটা অংশ পশু পালন এবং চাষ করা শস্যদানা ও মুরগি পালনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন, সেক্ষেত্রে আপনার এই ব্যবসার খাদ্য সম্পর্কে চিন্তাটা চলে গেল।
৩) যারা বেকার মানুষ, তারাও কিন্তু পোল্ট্রি ফার্ম অথবা মুরগি পালন করে নিজেদের রোজগার তৈরি করে নিতে পারেন।
৪) এই ব্যবসায় অধিক লাভের সম্ভবনা রয়েছে।
৫) এটা এমন একটা ব্যবসা, সেটা কে আপনি খুব ভালোভাবে চালিয়ে যেতে পারবেন এবং যদি ভালোভাবে চালিয়ে যেতে পারেন, ভবিষ্যতে সরকার এর এই ঋণ শোধ করে একটা ভালো রকমের পোল্ট্রি ফার্মের মালিক হয়ে যেতে পারেন আপনি।
সরকারি সহযোগিতা এবং নিজের কষ্ট, দক্ষতা, দিয়ে পোল্ট্রি ফার্ম (Poultry Farming Business) ও পশুপালন করে অথবা ডেয়ারি ফার্ম করে বেকারত্ব কাটিয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারেন। দেশের, রাজ্য এবং আপনার আশেপাশে ডিম, দুধের, মাংসের প্রয়োজনীয়তা মেটানোর পাশাপাশি আপনি হয়ে উঠবেন একজন সুদক্ষ ব্যবসায়ী, এই ক্ষেত্রে।