Furniture Business Ideas 2024 in Bengali (ফার্নিচার ব্যবসা 2024): Best Furniture Business Ideas in Bengali | Furniture Business Plan in Bengali.
আসবাবপত্র অথবা ফার্নিচার প্রত্যেকটি ঘরে একটি অতি অবশ্যই প্রয়োজনীয় জিনিস, এগুলি না হলে ঘরে কোন কিছুই মানানসই লাগেনা। সেই কারণে মানুষ ঘরের জন্য আসবাবপত্র নিয়ে সেগুলো কে খুব ভালোভাবে সাজিয়ে রাখে।
অফিস, অ্যাপার্টমেন্ট, স্কুল, কলেজ ইত্যাদিতে ফার্নিচার অথবা আসবাবপত্রের প্রয়োজন পরে। আর সেই জন্য ফার্নিচার অথবা আসবাবপত্রের ব্যবসা খুব ভালো একটি লাভজনক ব্যবসা। কেননা প্রতি দিনে কিছু না কিছু ফার্নিচার এর প্রয়োজনীয়তা পরে এবং এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
আর আপনি যদি এই ফার্নিচারের ব্যবসা শুরু করতে চান, তো এই ব্যবসা একটি অধিক লাভজনক ব্যবসা নিঃসন্দেহে বলা যায়। আর এই ব্যবসার কথা যদি চিন্তা করে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক কাজে আসবে আশা করা যায়।
চলুন বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র অথবা ফার্নিচারের ব্যবসা সম্পর্কে জানা যাক, যা থেকে অধিক মাত্রায় লাভ পাওয়া যেতে পারে:-
বাম্বু অথবা বাঁশের তৈরি ফার্নিচার এর ব্যবসা:
বাঁশের তৈরি ফার্নিচার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেকোরেশন অথবা সাজানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ফার্নিচারগুলোর সবথেকে সুন্দর বিষয় হলো এগুলো দেখতে খুব সুন্দর হওয়ার সাথে সাথে এদের ওজনগুলো খুব হালকা হয়। অনেক সময় দেখা যায় কোন বাড়িতে এক কোণে বাঁশ গাছের ঝাড় লাগিয়ে বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়।
আর এই বিষয়টা বেশ আকর্ষণীয়ও বটে। তাই আপনি যদি চান তাহলে এইরকম ফার্নিচারের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যার মধ্যে আপনি সোফা সেট, চিয়ার, বেঞ্চ, ইত্যাদি তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। তা থেকে ভালোমতো আয় করতে পারবেন আপনি। কেননা ইউনিক জিনিস প্রতিটি মানুষের পছন্দ।
এই ব্যবসার লাভ:
যদি ছোট আকারে শুরু করেন তাহলে প্রতিমাসে কম করে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন আর ব্যবসা বাড়ার সাথে সাথে আয় এর পরিমাণটাও বাড়বে।
লেদার অথবা চামড়ার ফার্নিচার এর ব্যবসা:
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই ধরনের ফার্নিচার এই সমস্ত লোক বেশি ব্যবহার করতে পছন্দ করেন অথবা কিনতে পছন্দ করেন যারা ঘরের লিভিং রুম এবং ডাইনিং রুম কে আধুনিক লুক দেওয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকেন এ ধরনের ফার্নিচার আধুনিক হওয়ার সাথে সাথে দেখতে ভীষণ সুন্দর। এছাড়াও লেদারের ফার্নিচার অথবা আসবাবপত্র এর ব্যবহার অফিসে বেশি মাত্রায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
যার কারণে এর চাহিদা কখনো কম হবে না আর এই জন্যই আপনি যদি লেদারের ফার্নিচারের ব্যবসা শুরু করতে চান, খুব তাড়াতাড়ি আপনি এই ব্যবসাতে উন্নতি করতে পারবেন। কিন্তু এই বিষয়ের উপরে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনাকে এই লেদারের ফার্নিচার গুলি ভীষণ অ্যাট্রাক্টিভ বানাতে হবে। কারন আজকালকার মডার্ন যুগে সিম্পল এবং সরল ডিজাইন এর ফার্নিচার কোন ব্যক্তি নিতে চাইবেন না। সে ক্ষেত্রে গ্রাহকদের পছন্দের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে আপনাকে।
এই ব্যবসার লাভ:
লাভের কথা বলতে গেলে এই ব্যবসায় আপনি মাসে লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন, তবে যদি ছোট আকারে শুরু করেন সেক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মাসে আপনি আয় করতে পারবেন।
প্লাস্টিক ফার্নিচার এর ব্যবসা:
অন্যান্য ফার্নিচার এর মত বর্তমানে প্লাস্টিক ফার্নিচার এর চাহিদা পাল্লা দিয়ে চলছে। যার সব থেকে বড় কারণ হল এ ধরনের ফার্নিচারগুলো ভীষণ আকর্ষণীয় এবং সুন্দর হওয়ার সাথে সাথে ভীষণ সস্তা এবং এদের ওজন গুলিও বেশ হালকা। এছাড়াও এদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া এবং সাজানোর ক্ষেত্রে অতটা ধকল পোহাতে হয় না।
সেই কারণে লোক নিজেদের বাজেটের মধ্যে প্লাস্টিকের ফার্নিচার দিয়ে নিজেদের ঘরগুলি সুন্দর করে সাজিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আর সেই জন্যই আপনি যদি এই রকম ব্যবসা শুরু করার চিন্তা-ভাবনা করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার ইনভেস্টমেন্ট ও খুব কম পরিমাণে করতে হবে এবং আপনার লাভটা হবে অধিক পরিমাণে।
এই ব্যবসার লাভ:
কম করে প্রতিমাসে ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
স্টিল ফার্নিচার এর ব্যবসা:
আপনি যদি খুব কম টাকা দিয়ে স্টিল ফার্নিচার এর ব্যবসা শুরু করতে চান অবশ্যই এই ব্যবসাটি অধিক লাভ দায়ক। কেননা স্টিল ফার্নিচার আজকাল মানুষ ঘর থেকে অফিস অফিস থেকে হসপিটাল সব জায়গাতেই স্টিল ফার্নিচার এর রমরমা। যেমন ধরুন আলমারি, বিভিন্ন রকমের সেলফ, চেয়ার, খাট, ইত্যাদি ঘর অফিস এর শোভা বাড়িয়ে তোলে। আর আপনি যদি স্টিল ফার্নিচার ব্যবসা শুরু করতে চান, আপনার এই ব্যবসা থেকে প্রচুর পরিমাণে লাভ আসতে চলেছে।
কিন্তু আপনি যখন এই কাজ শুরু করবেন আপনাকে এই বিষয়ের উপরে খেয়াল রাখতে হবে যে, অন্যান্য ফার্নিচার দোকানের থেকে আপনাকে একটু আলাদা রকমের ডিজাইনের ফার্নিচার তৈরি করতে হবে এবং আপনার ফার্নিচারে কোয়ালিটি যেন খুব ভালো হয়, সেক্ষেত্রে আপনার গ্রাহকের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
এই ব্যবসার লাভ:
এই ব্যবসা থেকে আপনি মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা কম করে আয় করতে পারবেন।
লোহার তৈরি ফার্নিচার এর ব্যবসা:
লোহার তৈরি ফার্নিচার ও বর্তমানে বেশ প্রচলিত। এই ব্যবসা থেকেও আপনি ভালোমতো রোজগার করতে পারবেন। নিজেদের ঘর কে সাজানোর জন্য আজকাল লোহার তৈরি ফার্নিচার নজরকাড়া। এই ফার্নিচার যেমন দেখতে সুন্দর, আকর্ষনীয় তেমনি মজবুত ও বটে। অনেকদিন এর ব্যবহার করার পরও টেকসই হয় অনেকদিন।
এই ব্যবসা বড় বড় শহর ছাড়াও ছোট ছোট শহর অথবা গ্রামে এই ব্যবসা এখন বেশ ভালোভাবেই চলছে। আর সেই কারণে এই ব্যবসা কোনদিনও লস অথবা লোকসানে চলবে না। সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতা এবং তথ্য সংগ্রহ করে আপনি যদি এই ব্যবসা শুরু করেন এবং ভালোভাবে যদি এই ব্যবসাটি চালিয়ে যেতে পারেন তাহলে প্রফিট আপনি নিজের চোখেই দেখতে পাবেন।
এই ব্যবসার লাভ:
কমপক্ষে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আপনি আয় করতে পারবেন এই ব্যবসা থেকে। আবার আপনার ব্যবসাটি বড় হলে আয় এর পরিমাণটাও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবে।
কাঠের ফার্নিচার এর ব্যবসা:
কাঠের ফার্নিচার ভারতীয় নাগরিক দের ঘর সাজানোর জন্য অনেকদিন আগে থেকে এর ব্যবহার হয়ে আসছে। তাছাড়া কাঠের ফার্নিচার এর চাহিদা প্রচুর। আগেও যেমন ছিল, বর্তমানেও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে আর যদি আপনার কাছে কোন খালি দোকান থাকে তাহলে সেখানে আপনি কাঠের ফার্নিচার এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
নিত্যনতুন ডিজাইনের কাঠের আসবাবপত্র আজ ঘর সাজানোর জন্য উপযুক্ত আসবাবপত্র। যেমন ধরুন আলমারি, সোফাসেট, চিয়ার, সেলফ, টেবিল, খাট, ইত্যাদি বছরের পর বছর চলে এবং টেকসই ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ঘরের। এই ব্যবসা থেকেও কিন্তু আপনি বেশ ভালো মত একটা প্রফিট পেতে পারেন।
এই ব্যবসার লাভ:
প্রতিটি ব্যবসার লাভ সেই ব্যবসার আকারের উপর নির্ভর করে। তবে কমপক্ষে আপনি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা প্রতি মাসে আয় করতে পারবেন। তাছাড়া কাঠের ফার্নিচার এর ব্যবসা লাখ টাকা উপার্জন করে দিতে পারে আপনার।
অনলাইন ফার্নিচার স্টোর:
আপনি আপনার ফার্নিচার অথবা আসবাবপত্র গুলি বিক্রি করার জন্য অনলাইনে ফার্নিচার স্টোর ও খুলতে পারেন। যেখানে আপনাকে এই বিষয়ের উপরে কিছু কথা খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনি দু ধরনের ফার্নিচার এর অনলাইন স্টোর শুরু করতে পারেন। প্রথমত আপনি যদি চান আপনি নিজেই আপনার তৈরি ফার্নিচার বিক্রি করতে পারেন, আবার অন্য কোন কোম্পানির তৈরি করা ফার্নিচার আপনি বিক্রি করে তার থেকে কমিশন নিতে পারেন।
এই সময় বেশিরভাগ ব্যবসায়ী নিজেদের প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য ই-কমার্স ওয়েবসাইট কে বেশি কাজে লাগিয়ে থাকেন। কেননা আজকাল মানুষ দিনে বেশিরভাগ সময় অনলাইনে কটিয়ে দেন তার মধ্যে অনলাইনে শপিং টাও তো আছেই। কারণ পছন্দের আসবাবপত্র যদি অনলাইনের মাধ্যমে কেউ পেয়ে যান, সে ক্ষেত্রে অর্ডারটা ও কিন্তু অনায়াসেই করতে পারেন সেই ব্যক্তি।
এর সাথে সাথে অনলাইন শপ অথবা অনলাইন ভাবে আপনি যদি এই ফার্নিচার বিক্রি করেন সেক্ষেত্রে ছোট ব্যবসার জন্য এটি একটি খুব ভালো প্লাটফর্ম। যেখানে ব্যবসায়ী নিজের প্রোডাক্ট ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে বিক্রি করে নিজের ব্যবসা সফল করতে পারেন। কিন্তু এখানে একটি কথা ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে আপনার বানানো ফার্নিচার এর ডিজাইন দেখতে খুব সুন্দর, আকর্ষণীয় এবং খুব ভালো কোয়ালিটির হওয়াটা জরুরী।
এই ব্যবসার লাভ:
অনলাইন স্টোর অর্ডার এর উপরে নির্ভর করবে এবং আপনার তৈরি আসবাবপত্রের কোয়ালিটির উপরে নির্ভর করবে। আপনার বানানো আসবাবপত্র মানুষের কথাটা পছন্দ হচ্ছে তার উপর নির্ভর করবে আপনার উপার্জন। তবে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা প্রতি মাসে আয় করতে পারবেন। তাছাড়া অর্ডার এর উপর নির্ভর করবে আপনার উপার্জন।
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকাগন, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি ফার্নিচারের ব্যবসা সম্পর্কে ছিল। যাকিনা লাভদায়ক একটি ব্যবসা। যদি আপনি ফার্নিচার এর ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে প্রথমে খুব কম ইনভেস্ট করে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন, যা অধিক লাভজনক ব্যবসা হবে আপনার জন্য।