Coconut Water Business Idea in Bengali – কম বিনিয়োগে ডাবের জলের ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? ডাবের জলের ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? কি কি প্রয়োজন হবে? জানুন সবকিছু ডাবের জলের ব্যবসা সম্পর্কে।
প্রকৃতি আমাদের কত কিছুই না উপহার দিয়েছে। ফুল, ফল থেকে শুরু করে আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় এমন অনেক ভিটামিন, প্রোটিন, মিনারেল সবকিছুই কিন্তু আমরা প্রকৃতি থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পেয়ে থাকি। তেমনই একটি প্রাকৃতিক উপাদান হল ডাবের জল। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং গরমের সময় তো এর কোন তুলনায় নেই, বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে এক একটি ডাবের দাম প্রায় ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
তাহলে ধারণা করাই যাচ্ছে যে এর চাহিদা কতখানি আর এর দাম বাজারে কতখানি। যে সমস্ত জায়গায় প্রচুর নারকেল গাছ রয়েছে সেই সমস্ত জায়গা থেকে ডাব কিনে এনে কেটে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে প্রচুর টাকা উপার্জন করছেন এমন অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন। আর আপনি যদি কোন ছোটখাটো ব্যবসার কথা চিন্তা করে থাকেন তাহলে এই গরমের সময় এই ব্যবসাটি বেশ ভালো উপার্জন এনে দেবে তা তো ধারণা করাই যায়।
ডাবের জল পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুবই কমই রয়েছেন। শরীরের জন্য বিশেষ উপযোগী এই জলের চাহিদা বরাবরই একই রকম। দিন বদলের সাথে সাথে এর চাহিদা আরো বেশি বাড়ছে। ডাবের জলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল, জিংক, সেলেনিয়াম ইত্যাদি গুনে ভরপুর। প্রতিটি জায়গায় এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ডাবের জলের চাহিদা প্রচুর রয়েছে। এই গরমে ডাবের জল খেলে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায় বলে এর চাহিদা প্রচুর।
ডাবের জলের ব্যবসায় আছে প্রচুর উপার্জন
ব্যবসা করার চিন্তা করলে অনেক ব্যবসা রয়েছে যা কিনা খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে শুরু করতে পারবেন। একেবারে ঘরে থেকে আরো অন্যান্য কাজের পাশাপাশি যদি কোন ছোটখাট বিজনেস করতে চান তাহলে ঘরে বসেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
এর জন্য ছোট দোকানের প্রয়োজন হতে পারে অথবা কোন ঠেলাগাড়ি হলেও চলবে। বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ডাবের জলের ব্যবহার করা হয়, তাই কোনভাবেই কিন্তু আপনি এই ব্যবসাতে ক্ষতি দেখবেন না।
ডাবের জলের ব্যবসা
ব্যবসাটি খুবই সহজ এবং সরল, খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে যেমন করা যায় তেমনি সহজেই ক্রেতাদের মধ্যে বিক্রি করে টাকা উপার্জন করা যায়। ডাবের জল খাওয়ার জন্য ডাব কেটে তার মধ্যে পাইপ দিয়ে দিতে পারেন অথবা অনেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেন সে ক্ষেত্রে প্যাকেট করেও দিতে পারেন।
আবার অনেকেই ডাবের জল ডাব থেকে বের করে প্যাকেটজাত করেও বিক্রি করেন। বিভিন্ন ধরনের ডিজাইনের গ্লাস এখন বাজারে পাওয়া যায় সেই গ্লাসে করে অনেকে ডাবের জল খেতে পছন্দ করেন। তাই আপনার ব্যবসাতে এই সমস্ত উপাদান গুলি অবশ্যই রাখতে পারেন।
ডাবের জলের ব্যবসার জন্য বিনিয়োগ
এই ব্যবসাটি করার জন্য কোনরকম বেশি টাকা বিনিয়োগ করার প্রয়োজন নেই। সাধারণত খরচ বলতে গেলে ডাব কিনতে গেলেই যে খরচটা হয় সেই খরচ ছাড়া আর কোন খরচ নেই বলেই চলে।
পাইপ, বিভিন্ন ধরনের গ্লাস, এগুলি কিনতে গেলে অল্প কিছু টাকা বিনিয়োগ করলেই হবে। যদি আপনি কোন দোকান খুলতে চান তাহলে সেখানে আপনার স্থানীয় কোন বাজারে দোকান ভাড়া নিতে পারেন।
আর যদি ঠেলাগাড়ি নিয়ে রাস্তার ধারে বিক্রি করতে চান তাহলে কমপক্ষে ডাব কেনার জন্য এবং আরও অন্যান্য জিনিসপত্র কেনার জন্য কমপক্ষে ১৫,০০০ টাকা আপনার খরচ হতে পারে।
ডাবের জল খুব তাড়াতাড়ি মানব শরীরে এনার্জি তৈরি করে তাই এই গরমের সময় আরো অন্যান্য খাবার খাওয়ার পাশাপাশি বেশিরভাগ মানুষ ডাবের জল খেতে পছন্দ করেন, তাই প্রতিদিন প্রচুর ডাব বিক্রি হবে আপনার।
কোথায় বিক্রি করবেন এই ডাবের জল?
ডাবের জল বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন জায়গা রয়েছে। গরমের সময় স্কুল-কলেজের আসে পাশে, পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে, যেখানে বহু লোকের সমাগম ঘটে সে সমস্ত জায়গাতে, বাজারে ইত্যাদি জায়গাতে এই দোকান দিতে পারেন অথবা ঠেলাগাড়ি নিয়ে বসতে পারেন।
আর অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁরা একটু বয়স্ক তাঁদের অথবা সকলের জন্য জন্য যদি দোকানের পাশে কিছুটা বসার জায়গা করে রাখেন তাহলে ক্রেতাদের সুবিধা হয়। কিছু চেয়ার রাখতে পারেন আর বড় ছাতার ব্যবস্থা করতে পারেন। দরকার হলে কোন ছোট ফ্যানের ব্যবস্থা করতে পারেন।
ক্রেতাদের যত বেশি খুশি করতে পারবেন ততই কিন্তু আপনার ব্যবসার জন্য লাভদায়ক। এই সমস্ত কাজগুলি যদি করে থাকেন তাহলে ক্রেতারা আপনার দোকানে বেশিক্ষণ সময় দাঁড়াবেন এবং ডাব খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন।
আর ব্যবসাতে আরও একটা বিষয় হলো যেখানে যত বেশি ভিড় সেখানে তত বেশি ক্রেতাদের আগমন অর্থাৎ আপনার দোকানে যদি কিছু ক্রেতা দাঁড়িয়ে অথবা বসে থাকেন বা ডাব খেতে থাকেন সেগুলি দেখেও কিন্তু অনেক ক্রেতারা আপনার দোকানে এসে ভিড় জমাবেন।
ডাবের জল বিক্রি করে উপার্জন
চলুন জানা যাক উপার্জন সম্পর্কে, এত কষ্ট করার পরে অবশ্যই আপনার লাভের অংকটা তো জানতেই হবে তাই না এখানে আরো একটি বিষয় বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে দোকানের আশেপাশে পরিষ্কার পরিছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
তাহলে দেখবেন আপনি যদি ৫০ থেকে ৬০ টাকার ডাব ৮০-৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন তবুও কিন্তু আপনার দোকানে ক্রেতাদের ভিড় কমবে না। যত বেশি ক্রেতাদের খুশি করতে পারবেন ততই কিন্তু আপনার ব্যবসা থেকে উপার্জন আসতে থাকবে।
ডাব ছোট বড় হিসাবে ৪০ টাকা থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারবেন। আর এই অনুসারে প্রতিদিনের উপার্জন হিসাব করে প্রতি মাসের ৭০,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত অনায়াসেই আয় করতে পারবেন আপনি।
প্রাকৃতিক কোন কিছু খেতে গেলে অনেকেই টাকা নিয়ে কোন কথা বলেন না, কেননা চোখের সামনে একটি ফ্রেশ প্রাকৃতিক খাবার তাঁরা খাচ্ছেন, এর থেকে বেশি আর কি বা হতে পারে। তাই ডাবের জলের এই চাহিদা বরাবরই ছিল, আছে এবং থাকবে, যত দিন যাচ্ছে তার দাম বাড়ছে বই কমছে না। গরমকালে তো এর চাহিদা আরো বেশি বেড়ে যায়।
এই ব্যবসাটি করে খুব কম সময়ের মধ্যে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তার পাশাপাশি বিনিয়োগের মাত্রাও খুব কম, ঝামেলাও কম, খুবই কম জিনিসপত্র নিয়েই এই ব্যবসাটি চালিয়ে যেতে পারবেন। শুধু সুন্দর ব্যবসার মানসিকতা, সুন্দর করে দোকান সাজানো এবং ক্রেতাদের একটু প্রশান্তি দেওয়ার পাশাপাশি সুন্দরভাবে পরিবেশন করাটাও বিশেষভাবে জরুরী।