Mentha Farming Business Idea in Bengali – মেন্থা চাষ ব্যবসা কি? শুরু করবেন কিভাবে? মেন্থা চাষ ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? জানুন সবকিছু মেন্থা চাষ ও ব্যবসা সম্পর্কে।
দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন চাষাবাদ এর উপরে নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক মানুষ, আপনি যদি বর্তমানে যে কাজ করছেন সেই কাজের পাশাপাশি অল্প পরিসরে কিছু চাষ করে আরো অতিরিক্ত টাকা উপার্জন করতে চান তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে।
এটি এমন একটি ব্যবসা যেখানে তিন মাসের মধ্যে লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এখানে যে ব্যবসার কথাটি বলা হচ্ছে সেটি হল মেন্থার চাষ। এটি হারবাল প্রোডাক্ট তৈরি করতে বিশেষভাবে প্রয়োজন পড়ে। করোনা মহামারীর পর সারা পৃথিবী জুড়ে হারবাল প্রোডাক্টের চাহিদা এবং আয়ুর্বেদিক ওষুধের চাহিদা বহু গুণে বেড়ে গিয়েছে।
এই কারণে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল ফুলের চাষ করার পাশাপাশি এমন কিছু হারবাল উদ্ভিদের চাষ করছেন যা সকলের উপকারে আসার পাশাপাশি তাঁদের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিয়েছে।
এছাড়াও যে জমিতে মেন্থা চাষ করা হবে সেই জমির উর্বরতা শক্তি বহুগুণ বেড়ে যাবে আর পরবর্তীতে সেই জমিতে যখন অন্য কিছু চাষ করা হবে সেটির ফলনও বাম্পার হবে এর ফলে কৃষক দুই রকম দিক থেকে উপার্জন করতে পারবেন প্রচুর টাকা। হারবাল অর্থাৎ ঔষধি ফসলের চাষ করে তিনগুণ পর্যন্ত বেশি উপার্জন করছেন কৃষকরা।
আপনিও অল্প পরিসরে নিজের কাজের পাশাপাশি এই ব্যবসাটি করে উপার্জন করতে পারবেন। এমন অনেক মোটা টাকা উপার্জন করে দেওয়া ঔষধি ফসলের চাষের মধ্যে শামিল রয়েছে মেন্থা চাষ। এই চাষ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় হয়ে থাকে, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট এবং পাঞ্জাবের মতো বিভিন্ন রাজ্যতে এই চাষ খুবই চোখে পড়ে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক মেন্থা কি?
মেন্থা কে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে, যেমন পেপারমিন্ট, পুদিনা, কর্পূরমেন্ট এবং সুন্ধি তপত্র নামেও চিনে থাকেন অনেকেই।
এই মেন্থা ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন রকমের ওষুধ বানাতে, তেল তৈরি করতে, বিউটি প্রোডাক্ট তৈরি করতে, টুথপেস্ট তৈরি করতে, এছাড়া ক্যান্ডি, লজেন্স বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এখানে বলে রাখা জরুরি যে আমাদের এই ভারত মেন্থার তেল তৈরি করাতে বড় ভূমিকা রাখে। এখান থেকে মেন্থার তেল রপ্তানি করা হয় বিভিন্ন দেশে।
এই চাষ করার জন্য জল সেচের ব্যবস্থা খুবই ভালো থাকতে হবে। সঠিক সময়ে রোপন করতে হবে আর তিন মাসের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে মেন্থা।
মেন্থার চাষ করার জন্য মাটির পি এইচ ভ্যালু ৬.৫ থেকে ৭.৫ এর মধ্যে থাকতে হবে। মেন্থার পাতা পুষ্টিগুণে ভরপুর যা আমাদের শরীর ও সৌন্দর্যে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
মেন্থা চাষ করবেন যেভাবে
- মেন্থার চাষ করতে গেলে আপনাকে সময়ের উপরে বিশেষ খেয়াল দিতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু করে এপ্রিলের মাঝ বরাবর এই ফসলের রোপন করা হয়ে থাকে আর জুন মাসে এই ফসল কেটে নেওয়া হয়, এই গাছের পাতা তোলা হয়, এই ফসলের জন্য মাটির নমনীয়তা খুবই জরুরী।
- তাই প্রতি আট দিন অন্তর সেচ করতে হবে, যে জমিতে মেন্থা চাষ করেছেন। জুন মাসে যখন পরিষ্কার আকাশ দেখবেন তখন এই ফসল কেটে নিতে হবে।
- মেন্থা চাষে প্রতি হেক্টর জমি থেকে ১২৫ থেকে ১৫০ কিলোগ্রাম তেল পাওয়া যেতে পারে।
মেন্থা চাষ করে উপার্জন করবেন যেভাবে
মেন্থা চাষ করে খুবই কম সময়ের মধ্যে প্রচুর টাকা উপার্জন করা যেতে পারে। আর এই চাষে বিনিয়োগের মাত্রা খুবই কম।
এই ফসল ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে তৈরি হয়ে যায় আর এর কারণে কৃষকরা খুবই তাড়াতাড়ি ক্ষেত থেকে ফসল তুলে বিনিয়োগের টাকা তুলে নিতে পারেন তার সাথে সাথে মুনাফাও অর্জন করতে পারেন। এক একর জমিতে মেন্থা চাষ করার ক্ষেত্রে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
বাজারে মেন্থার দাম প্রায় ১,০০০ থেকে ১,৫০০ টাকা প্রতি কিলো হতে পারে। এইভাবে ফসল কেটে নেওয়ার পর মেন্থা অথবা মিন্ট বা পেপারমিন্ট বা পুদিনা এই ফসল থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত মুনাফা অর্জন করতে পারবেন তিন মাসে, তিন গুণ উপার্জন করা সম্ভব। এই জন্য এই ফসল কৃষকদের কাছে সবুজ সোনা হিসেবে পরিচিত।
নিজের কাছে থাকা কোন জমিতে মেন্থা চাষ করে বর্তমান কাজের পাশাপাশি এই ব্যবসাটি করে লাভবান হতে পারবেন তিন মাসের মধ্যে। এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে আর এই চাহিদা পূরণ করে আপনি বাজারে মেন্থার যোগান দিতে পারবেন তার সাথে সাথে উপার্জন করতে পারবেন প্রচুর টাকা। লাভের অংকটা এতটাই যে পরে আবার এই চাষ করার জন্য আপনি সময় গুনবেন।