Black Pepper Farming Business Idea in Bengali – নতুন ধরনের গোলমরিচ চাষের ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? গোলমরিচ চাষের ব্যবসার কত চাহিদা? কত টাকা ইনকাম হবে? কি কি প্রয়োজন হবে? জানুন সবকিছু গোলমরিচ চাষের ব্যবসা সম্পর্কে।
আমাদের রান্নাঘরে যে সমস্ত মসলা গুলো ব্যবহার করা হয় তরকারি রান্নাতে, সেই মসলা গুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মসলা হলো “কালো গোলমরিচ (Black Pepper)” এই গোলমরিচের পাউডার প্রতিটি তরকারির স্বাদ অনেক গুণ বাড়িয়ে তোলে এছাড়া আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এর তুলনা নেই।
কাজের পাশাপাশি কোন ব্যবসা করার চিন্তা করে থাকলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের উপরে নির্ভর করে এই গোলমরিচের চাষ করে ব্যবসা করতে পারেন, যা খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে অনেক টাকা উপার্জন করার একটি পন্থা বলা যায়।
অনেকেই আছেন চাষাবাদ করতে পছন্দ করেন, আর আপনিও যদি কোন কিছু উৎপাদন করে তা থেকে ব্যবসা করে উপার্জন করতে পছন্দ করেন তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার জন্য উপযোগী হতে পারে।
পরম্পরা গত ভাবে ধান, গম এইসবের চাষ থেকে একটু সরে গিয়ে অন্যরকম কিছু চাষ করে প্রতিমাসে লক্ষ টাকা উপার্জন করা যায়। আর যদি মসলার কথা বলা হয় তাহলে এর চাহিদা তো বাজারে অনেক বেশি।
এমন অনেক কৃষক এই গোলমরিচের চাষ করে লাভবান হয়েছেন। জমিতে শুধুমাত্র জৈবিক সার ব্যবহার করে এই ফসল ফলিয়ে উপার্জন করেছেন প্রচুর টাকা। শুধুমাত্র ১০,০০০ টাকায় গোলমরিচ এর চারা কেনা যেতে পারে ১০,০০০ টি। এক বছর পর এর সংখ্যা আরো বেশি বেড়ে যাবে, এর মধ্য দিয়ে উৎপাদিত গোল মরিচ স্থানীয় বাজারের থেকে শুরু করে দেশের ও দেশের বাইরের চাহিদা পূরণ করে।
কিভাবে গোল মরিচের চাষ করে লাভবান হবেন
গোলমরিচ চাষ করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে, এই ফসল ঠান্ডা পরিবেশে খুব ভালো হয়ে থাকে। এই গাছ বেশি পরিমাণে গরম কিন্তু সহ্য করতে পারে না। আবহাওয়া যত নমনীয় হবে ততই কিন্তু এর ফলন এবং গাছের বৃদ্ধি অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।
ভারী মাটির সাথে সাথে বালিও থাকাটা জরুরী যার ফলে জল নিকাশের ব্যবস্থা খুবই ভালো হয়। যে সমস্ত মাটিতে নারকেল অথবা সুপারির মতো ফসল ফলানো হয়ে থাকে সেই সমস্ত মাটিতে গোলমরিচের চাষ খুবই সহজেই করা যায়। আবার আরো একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে এই গাছের ছায়ার প্রয়োজন পড়ে।
গোলমরিচের চারা রোপন করবেন কিভাবে?
প্রতিটি চাষাবাদে যত্ন, ভালবাসা দিয়েই তবেই সেই ফসল ফলাতে হয়। গোলমরিচ যেহেতু ছায়া জায়গা, ঠান্ডা পরিবেশ পছন্দ করে তাই এর একটু দেখভালের পাশাপাশি মাটি এবং কখন এই চারা রোপন করতে হবে সেদিকটাও খেয়াল রাখতে হয়।
এই গাছ একবার রোপন করার পর সেটি বাড়ানো যেতে পারে। এর জন্য ৩০ সেন্টিমিটার ছাড়াছাড়ি গর্ত খুঁড়ে এই গাছের চারা রোপন করতে হয়। এই গর্তে জৈবিক-সার মেশাতে হবে, তারপর মাটি দিতে হবে সেই গর্তে, তার সাথে সাথে বিএইচসি পাউডার লাগিয়ে গোলমরিচের চারা রোপণ করতে হবে।
কোথায় গোল মরিচের চাষ বেশি হয়ে থাকে:
গোলমরিচ এমন একটি মসলা যা সমস্ত জায়গায় খুবই জনপ্রিয় এবং প্রসিদ্ধ। কেরলে গোলমরিচের উৎপাদন দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এখানে দেশের ৯৮% গোলমরিচ উৎপাদন হয়।
এছাড়াও তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকে গোলমরিচের চাষ খুবই ভালো হতে দেখা যায়। দুর্লভ গোলমরিচ এর চাষ মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন ক্ষেত্রতে পাওয়া যায়।
গোলমরিচ চাষ করে উপার্জন করার উপায়:
যেহেতু এই মসলা খুবই জনপ্রিয় এবং সকলের খুবই পছন্দের তাই এর উৎপাদন এর মাত্রা দিনবদলের সাথে সাথে বেড়ে চলেছে, আর এর চাহিদাও বাজারে প্রচুর।
কোন মুদিখানা দোকানেও আপনার উৎপাদিত গোলমরিচ বিক্রি করতে পারেন। আর বলে রাখা ভালো যে গোলমরিচ ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা প্রতি কিলোগ্রামে বিক্রি করতে পারবেন। গাছ থেকে গোলমরিচ তুলে আনার পর সেটি শুকিয়ে তৈরি করার ক্ষেত্রে খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
গোলমরিচের দানা বের করার জন্য জলে কিছু সময় ডুবিয়ে রাখতে হয় তারপর শুকানো হয়ে থাকে এর ফলে গোলমরিচের দানাতে খুবই ভালো রং পাওয়া যায়। এইভাবে গোলমরিচের চাষ করে খুবই কম সময়ের মধ্যে উপার্জন করতে পারবেন।
প্রথমে শুধুমাত্র ১০,০০০ টাকা নিয়ে এই গোলমরিচের চাষ করতে পারবেন। বলা যেতে পারে খুবই কম টাকা বিনিয়োগ করে অনেক টাকা উপার্জন করা। এক বছরের মধ্যে গাছের বৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো, আর গোলমরিচের ফলনও বাম্পার হয়। অল্প বিনিয়োগে বাম্পার উপার্জনের জন্য এই গোলমরিচের চাষ আপনি আপনার বর্তমান কাজের পাশাপাশিও করতে পারেন।