Tea Manufacturing Business Idea in Bengali – চা পাতার ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে? চা পাতার ব্যবসার কত চাহিদা এই ব্যাবসার? চা পাতার ব্যবসায় কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন? কি কি জিনিসপত্রের প্রয়োজন হবে? জানুন সবকিছু চা পাতার ব্যবসা সম্পর্কে।
আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয় হিসাবে ব্যবহার করা হয় চা, বেশিরভাগ মানুষের সকাল শুরু হয় এক কাপ চা দিয়ে, তাছাড়া সারাদিনে কত কাপ চা যে খাওয়া হয়ে যায় সেটা তো ধারণার বাইরে। সেই কারণে এই চা চাষ থেকে শুরু করে চা পাতা তোলা এবং সেটির প্যাকেটজাত করা পর্যন্ত ব্যবসাটি বেশ বড় আকার ধারণ করেছে। এক প্রকার নেশা বলা যেতে পারে এই চা খাওয়া।
ছোট দোকান হলেও সেখানে চায়ের আড্ডা হোক, সেটা রেস্টুরেন্ট, হোটেল, অফিস, স্কুল (অফিস রুম), কলেজ (অফিস রুম) সব জায়গাতেই চায়ের কদর রয়েছে। বিভিন্ন রকমের ফ্লেভারের চা পছন্দ করেন এখনকার মানুষজন, তাই সব ক্ষেত্রেই চা-পাতা টাই আসল বিষয়। আর যদি এই চা পাতা নিয়ে ব্যবসা করা যায় তাহলে সেটি খুব কম সময়ের মধ্যে আপনাকে বেশ ভালো মানের উপার্জন এনে দেবে।
যদি কোন ব্যবসার কথা চিন্তা করে থাকেন তাহলে এই ব্যবসাটিও বেশ লাভদায়ক। ছোটখাটো কোন স্টল খুলেও অনেকেই এই ব্যবসা শুরু করেছেন তবে এখানে যে ব্যবসার কথা বলা হবে সেটা হলো চা পাতার ব্যবসা।
যদি আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনের কাজ থেকে ভালোমতো উপার্জন না করে থাকেন আর আপনার অনেক স্বপ্ন থেকে থাকে তাহলে এই চা পাতার ব্যবসা খুবই কম সময়ের মধ্যে এবং কম টাকা বিনিয়োগ করে শুরু করতে পারেন, ছোট আকারে শুরু করে এটি ধীরে ধীরে বড় আকার দিতে পারেন।
অতিরিক্ত উপার্জন হিসেবে এটি আপনি আপনার কাজের পাশাপাশিও শুরু করতে পারেন, যেখানে খুবই সহজেই ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকার মধ্যে এই ব্যবসাটি শুরু করা যায়। তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক চা পাতার ব্যবসা সম্পর্কে:
চা পাতার ব্যবসা
গরিব হোক অথবা বড়লোক, সকলের বাড়িতে এই চা পাতার দেখা মেলে। অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে নিজেদের পছন্দের এই চায়ের তুলনা নেই। তাইতো চা পাতা শেষ হতে না হতেই দোকানে ছুটতে হয় চা পাতা আনতে। অনেকেই খোলা চা পাতা অথবা প্যাকেট জাতীয় চা পাতা নিয়ে থাকেন।
চা চাষ করা হয়ে থাকে দেশের বিভিন্ন জায়গায়, অসাম, দার্জিলিং এই সমস্ত জায়গার চা-পাতা সবচেয়ে বেশি প্রসিদ্ধ বলে জানা যায়। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়, আর এর চাহিদা সম্পূর্ণ ভারত নয় বিদেশেও এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। যদি আপনি চা পাতার ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে যে সমস্ত বিষয়গুলি আপনাকে মনে রাখতে হবে সেগুলি নিচে আলোচনা করা হল।
কিভাবে শুরু করবেন চা পাতার ব্যবসা?
এই ব্যবসাটি বিভিন্নভাবে শুরু করা যেতে পারে, বাজারে খোলা চা পাতা বিক্রি করে অথবা খুচরা, পাইকারি হিসাবে চা পাতা বিক্রি করেও এই ব্যবসাটি করতে পারেন। এছাড়াও এমন অনেক বড় বড় কোম্পানি রয়েছে যারা তাদের খোলা চা পাতা বিক্রি করার জন্য ফ্রাঞ্চাইজি প্রোগ্রাম চালিয়ে থাকে। আর এই ফ্রাঞ্চাইজি খুবই কম বাজেটের মধ্যে পেয়ে যেতে পারেন। এরপরে আপনি যখন সেই চা পাতা বিক্রি করবেন তার উপরে একটা ভালো মানের কমিশন কিন্তু আপনি পেয়ে যাবেন।
এছাড়াও বাড়ি বাড়ি চা পাতা প্যাকেট করেও বিক্রি করা যেতে পারে। খোলা চা পাতা নিয়ে এসে সেটি সুন্দর করে আপনার মন মত করে অথবা ব্রান্ডের নাম দিয়ে ছাপানো প্যাকেটে প্যাকেট করেও বিক্রি করতে পারেন। স্থানীয় বাজারে দোকানে গিয়েও আপনার এই চা পাতা সম্পর্কে জানিয়ে তাঁদেরকে বিক্রি করতে পারেন।
অবশ্যই কম দাম রাখতে হবে যেন আপনার থেকেই তাঁরা এই চা পাতা খুবই সহজেই নিতে পারেন, আর অবশ্যই আপনার লাভের দিকটা খেয়াল রাখতে হবে। কম দামের কারণে আপনার চা পাতা খুব সহজেই অনেকের পছন্দ হবে এবং ভালো বিক্রিও করতে পারবেন।
কোথায় করবেন চা পাতার ব্যবসাটি?
এই ব্যবসাটি করার জন্য আপনাকে আলাদা করে কোন জায়গা অথবা ঘর নিতে হবে না, আপনার বাড়িতেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন খুবই কম জায়গায়। চা পাতা কিনে এনে প্যাকেট করার মতো সামান্য জায়গা থাকলেই হবে। এছাড়া আশেপাশের বাড়ি গুলোতেও চায়ের চাহিদা পূরণ করতে পারেন আপনি।
সুন্দর প্যাকেজিং, সুন্দর নাম এবং অবশ্যই মানে ভালো হতে হবে আপনার চা পাতা। মার্কেটিং এর সাথে সাথে যাঁরা চা পাতা কিনবেন তাঁদের পছন্দ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে, তাহলে আপনার ব্যবসাটি দিনে দিনে আরও বেশি বাড়তে থাকবে।
প্রতিমাসে কেমন উপার্জন হতে পারে?
নিজের কাজের পাশাপাশি খুবই অল্প সময় নিয়ে এই কাজটি করে মাসে বেশ ভালো টাকা উপার্জন করতে পারেন। চায়ের চাহিদা কতখানি তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই, আসামের চা, দার্জিলিংয়ের চা এবং খুবই কড়া চায়ের চাহিদা রয়েছে সব জায়গায়।
তাই অনায়াসেই ১৪০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা প্রতি কিলো আপনি খুব সহজেই পেয়ে যাবেন এই চা পাতা, যেটি আপনি বাজারে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি করতে পারবেন।
শুধুমাত্র ৫০০০ টাকা থেকে শুরু করা এই ব্যবসাটি প্রতিমাসে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত খুব সহজেই উপার্জন এনে দেবে। আর যদি আপনি চায়ের ব্যবসাটির ব্রান্ড বানাতে চান তাহলে এর জন্য আপনার কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে।
এছাড়া ভালো কোয়ালিটির প্যাকেজিং করতে হবে, এছাড়াও সুন্দর মার্কেটিং আর একটু পরিশ্রম, তাহলে প্রতি মাসে বেশ ভালো উপার্জন আসবে। বলা যেতে পারে প্রতি মাসে ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারেন এই চা পাতার ব্যবসাটি করে।
সকাল হোক অথবা সন্ধ্যা, বন্ধুদের সাথে আড্ডা হোক অথবা প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানো, আবার মন ভাল করার জন্য চা খেয়ে থাকেন অনেকেই, তাই চা পাতার কদর কখনোই কমবে না। এই চা পাতা অনেকেই খোলা হিসেবে কিনে থাকেন আবার ব্র্যান্ডের চা তো রয়েছেই। চা মানেই ইমোশন, চা মানেই ভালোবাসা। আর এটিকে কাজে লাগিয়ে আপনার চা পাতার ব্যবসাটি রমরমা হয়ে উঠবে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে। কেননা চা প্রেমীরা কখনোই চা ছাড়া থাকতে পারে না, কি তাইতো !